মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কয়লা পাচার মামলায় (Bengal Coal Scam) ফের একবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাজিরা এড়ালেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক (Moloy Ghatak)। যা জানা যাচ্ছে, এই নিয়ে ১৩ বার নাকি হাজিরা এড়ালেন মন্ত্রীমশায়। গত ১২ জুলাই তাঁকে হাজিরার নোটিশ পাঠিয়েছিল ইডি। চলতি সপ্তাহেই তাঁর দিল্লিতে গিয়ে ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইডি সূত্রে খবর, মন্ত্রীমশাই চিঠি দিয়ে তদন্তকারী আধিকারিকদের জানিয়েছেন, পূর্ব নির্ধারিত কিছু কর্মসূচি থাকার কারণে তিনি দিল্লি যেতে পারছেন না।
বার বার এড়াচ্ছেন হাজিরা
ইডি সূত্রে দাবি, আদালতের নির্দেশ মেনে, প্রতিবার ১৫ দিন সময় দিয়ে মলয়কে (Moloy Ghatak) ডাকা হচ্ছে। কিন্তু বারেবারে নানা কারণ দেখিয়ে তিনি হাজিরা এড়াচ্ছেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ২০ ও ২৬ জুন তাঁকে হাজিরা দিতে বলেছিল ইডি। সেইসময় রাজ্যের মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। তাই তিনি হাজিরা দিতে পারবেন না। ভোটপর্ব মিটলে তিনি হাজিরা দেবেন। সেই মতো, ভোট মিটে যাওয়ার পর, এবার গত ১২ তারিখ তাঁকে তলবের নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, এবারও, তিনি হাজিরা এড়িয়ে গেলেন।
কেন তলব মন্ত্রী মলয়কে?
মলয় ঘটক, একাধারে আইন ও শ্রম মন্ত্রী, অন্যদিকে, খনি এলাকা আসানসোলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল বিধায়ক। ইডি সূত্রে দাবি, কয়লা পাচার মামলায় (Bengal Coal Scam) আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য সামনে রেখে মলয় ঘটককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শঙ্কর চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। আসানসোল পুরসভার ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীপা চক্রবর্তীর স্বামী শঙ্করের কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে ইডি-র দাবি।
আগে জেরা করেছে সিবিআই-ও
এই মামলায় ইডির আগে, সিবিআইও জেরা করেছিল মন্ত্রীকে। মামলা তদন্তে সিবিআই বিরাট অভিযান চালিয়েছিল। তারা পৌঁছে গিয়েছিল মলয়ের আসানসোলের বর্তমান বাড়ি, পৈতৃক বাড়িতে। এমনকী রাজভবনের মন্ত্রী আবাসনের যে ফ্লোরে মলয় (Moloy Ghatak) থাকেন সেখানেও হানা দিয়েছিল সিবিআই। পরে, এই মামলায় ইডি-ও সামন্তরাল তদন্ত শুরু করলে, ডাক পড়ে মলয় ঘটকের। যে প্রেক্ষিতে, মন্ত্রীমশাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, অন্তত ১৫ দিন সময় নিয়ে মন্ত্রীকে ডাকতে হবে। সেই মতো, ১২ তারিখ নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
কী পদক্ষেপ করতে পারে ইডি?
এদিকে, বার বার ডাকা সত্ত্বেও মলয় ঘটক (Moloy Ghatak) যেভাবে হাজিরা এড়াচ্ছেন, তা আদালত অবমাননার সামিল বলে মনে করছে ইডি। এ নিয়ে আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলেও কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে খবর। নিয়ম অনুযায়ী, তদন্তকারী সংস্থা যাকে হাজিরার জন্য ডাকবে তাকে যেতে হবে। না গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ইডি-র। এক্ষেত্রে, তদন্তকারী সংস্থা আদালতের কাছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যুর জন্য আবেদন করতে পারেন। যদি তারা মনে করেন যে তিনি শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদ এড়ানোর জন্যই এই কাজ করছেন তবে তাকে গ্রেফতারির জন্য আদালতের কাছে ওয়ারেন্ট ইস্যুর আবেদনও করতে পারেন। কারণ ইডির গ্রেফতার করার ক্ষমতা রয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours