তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
জলপাইগুড়ি থেকে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে গোপীবল্লভপুর, রাজ্যের একাধিক সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নীল-সাদা বহুতল ছাড়া রোগী পরিষেবা কার্যত তলানিতে। কোথাও মাসের পর মাস এক্স-রে মেশিন খারাপ। আবার কোথাও স্নায়ু, শিশু-শল্য বিভাগের মতো একাধিক বিভাগে নিয়মিত পরিষেবা পাওয়া যায় না। তাই দিনের পর দিন ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ। জেলার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, রাজ্য জুড়ে গড়ে ওঠা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল আর বিনামূল্যে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা (West Bengal Health) কার্যত বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংয়ে আটকে আছে।
কী অভিযোগ (West Bengal Health) করছে রোগীর পরিবার?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল (West Bengal Health) গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। গোটা রাজ্যে ৩০টি সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। সরকারের তরফ থেকে একাধিক বার জানানো হয়, জেলার মানুষের কলকাতা নির্ভরতা কমাতেই এই পরিকল্পনা। জেলার মানুষকে চিকিৎসা করাতে আর কলকাতার হাসপাতালের উপরে নির্ভর করে থাকতে হবে না। কিন্তু বাস্তবে ছবিটা একেবারেই অন্যরকম।
সম্প্রতি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভুক্তভোগীদের একাংশ অভিযোগ করেন, কয়েক মাস ধরে হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন খারাপ। বারবার অভিযোগ জানিয়েও, মেশিন ঠিক হয়নি। ফলে, রোগীদের এক্স-রে করা যাচ্ছে না। অনেক সময়েই তাদের বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হচ্ছে।
একই রকম ভোগান্তির অভিযোগ উঠছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। রোগীর পরিবারের একাংশের অভিযোগ, শিশু-শল্য চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। হাসপাতালে শিশু রোগ বিভাগ থাকলেও, কোনও দুর্ঘটনা বা অন্য কোনও সমস্যা হলে শিশুকে নিয়ে কলকাতা ছুটতে হয়। কারণ, ওই হাসপাতালে শিশুদের অস্ত্রোপচার করার মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই।
ঝাড়গ্রাম, গোপীবল্লভপুর সহ একাধিক জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে (West Bengal Health) পুড়ে যাওয়া রোগীর চিকিৎসা করানোর জন্য বার্ন ওয়ার্ডের পরিকাঠামো পর্যাপ্ত নেই। যার জেরে মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে কয়েকশো কিলোমিটার পাড়ি দিতে বাধ্য হন। এমনকি একাধিক জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের রোগীদের অভিযোগ, স্নায়ু, বক্ষঃরোগের মতো সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে গেলে নিয়মিত পরিষেবা পাওয়া যায় না। অনেক সময়েই চিকিৎসক ও পরিকাঠামোর অভাবে তাদের দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়। আবার হৃদরোগের মতো সমস্যা হলে, জেলা থেকে পাঠানো হয় কলকাতার হাসপাতালে। আর তার জেরে পরিষেবা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা আরও বাড়ে। সব মিলিয়ে ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকেই।
কী বলছে স্বাস্থ্য দফতর (West Bengal Health) ?
স্বাস্থ্য দফতর (West Bengal Health) অবশ্য অভিযোগ কিছুটা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, "জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। তবে, পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। কোথাও অভিযোগ পেলে, তা খতিয়ে দেখার চেষ্টাও হচ্ছে। কিন্তু জেলার সব হাসপাতালে কার্ডিওভাসকুলার, নিউরোলজির মতো বিভাগ নিয়মিত চালু করার কিছু সমস্যা রয়েছে। কারণ, শুধু পরিকাঠামো নয়, চিকিৎসকের ঘাটতিও রয়েছে। তবে, সাধারণ মানুষ যাতে ঠিকমতো স্বাস্থ্য পরিষেবা পান, সে দিকে নজর রয়েছে। "
+ There are no comments
Add yours