মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রয়াত বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী নির্মলা মিশ্র । বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। শনিবার রাত বারোটা পাঁচ মিনিটে চেতলার নিজের বাড়িতে মৃত্যু হয় তাঁর। বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন ভুগছিলেন শিল্পী। গত এক মাস প্রায় কথাই বলতে পারছিলেন না। খাওয়ানো হচ্ছিল টিউবের সাহায্যে। হাসপাতালে ভর্তিও হতে চাননি। তাই চিকিৎসা চলছিল বাড়িতেই। শনিবার রাতে অবস্থার অবনতি হলে বাড়িতে চলে আসেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক। প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, হৃদযন্ত্র বিকল হয়েই মৃত্যু হয়েছে বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পীর।
২০১৫ সালে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন নির্মলা মিশ্র। একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হন। সব মিলিয়ে মোট তিন বার স্ট্রোক হয়েছিল শিল্পীর। হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল দু বার। গত ডিসেম্বর মাসেও নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর সুস্থ হয়েই বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। এভাবেই চলছিল লড়াই। কিন্তু সব লড়াই থেমে গেল শনিবার মধ্যরাতে। রবিবার শিল্পীর দেহ শায়িত থাকবে রবীন্দ্রসদনে। সেখানেই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন তাঁর গুণমুগ্ধ শ্রোতারা। এরপর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে ক্যাওড়াতলা মহাশ্মশানে।
বাংলা আধুনিক গানের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে নির্মলা মিশ্রের নাম। এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না, ও তোতা পাখি রে, বলো তো আরশি তুমি মুখটি দেখে, আমি তো তোমার হাসি কান্নার চিরদিনের সাথী, কাগজের ফুল বলে - থেকে একের পর এক হিট গান উপহার দিয়েছেন তিনি। যা মুগ্ধ করেছে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। বাংলা সিনেমাতেও গান গেয়েছেন তিনি। নির্মলা মিশ্রের স্বামী প্রদীপ দাশগুপ্তও ছিলেন একজন শিল্পী এবং গীতিকার।
নির্মলা মিশ্রর জন্ম ১৯৩৮ সালে। তাঁর বাবা পণ্ডিত মোহিনীমোহন মিশ্র এবং মা ভবানীদেবী। চাকরিসূত্রেই দক্ষিণ ২৪ পরগণা থেকে কলকাতায় চলে আসেন মোহিনীবাবু। গ্রামের মেয়ের মধুঝরা কন্ঠ শুরু করে অনুশীলন। ষাটের দশকের একেবারে শুরুতে সঙ্গীত জগতে প্রবেশ করেন নির্মলা। বাকিটা ইতিহাস। দশকের পর দশক তাঁর স্বর্ণঝরা কন্ঠ বাঙালি শ্রোতাকে বুঁদ করে রাখে। কয়েক মাস আগেই বাঙালি হারিয়েছিল আর এক প্রাণের শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। এবার চলে গেলেন নির্মলা মিশ্র। সঙ্গীত জগতে তাই শোকের ছায়া।
শিল্পীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শোকবার্তায় তিনি লেখেন, ‘বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী নির্মলা মিশ্রের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি গভীর রাতে কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কণ্ঠের জাদুতে তিনি শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলেন। তাঁর গাওয়া এই বাংলার মাটিতে, এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না, ও তোতা পাখি রে-র মতো অজস্র কালজয়ী গান আজও শ্রোতাদের স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে। আধুনিক, নজরুলগীতি, শ্যামাসঙ্গীত, দেশাত্মবোধক, লোকগীতি ছাড়াও বহু ছায়াছবিতে তিনি গান গেয়েছেন’। আজ তাঁর শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ হাকিম।
তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন গায়িকা ইমন চক্রবর্তী ।
[tw]
ঝিনুক সন্ধানী এ জীবন, সুরে সুরে থেকে যাবে অমিলন ...... যেখানেই থাকবেন ভালো থাকবেন।।
— Iman Chakraborty (@imannmusic) July 31, 2022
.
.#নির্মলা_মিশ্র #rip #music #Legend pic.twitter.com/1KjhZoQpK5
[/tw]
গায়ক শিলাজিৎ মজুমদার ফেসবুকে তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করে লিখেছেন...
[fb]https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=pfbid0DMxGv2igtH7gAhHmVC9QtDEQPMfVgmkqvytfpfw7uRfesVfyhJgqS7ARVMzijB34l&id=100044223424496[/fb]
+ There are no comments
Add yours