Uttarkashi Tunnel Collapse: ১৭ দিন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে ৪১ জন শ্রমিক, কেমন ছিল সেই লড়াই

দেওয়া হয়েছিল মোবাইল ফোন, শ্রমিকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল শুকনো ফল, বিস্কুট, এনার্জি ড্রিংক
Uttarakhand-Rescue
Uttarakhand-Rescue

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অবশেষে মুক্তির আলো দেখলেন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক। ১৭ দিন পর, নানা বাধা বিপত্তি কাটিয়ে, সুড়ঙ্গ থেকে একে একে উদ্ধার করা হয় বাংলার ৩ শ্রমিক-সহ ৪১ জনকে। ১২ নভেম্বর দুপুরের পর থেকে ওই অন্ধকার কূপে তাঁরা কী করেছেন, কেমন ছিলেন। বেরিয়ে এসে সেই কথা জানালেন তাঁরা। তাঁদের বিপদের দিনের কথা শোনালেন চিকিৎসকরাও। উৎকণ্ঠা আর আতঙ্ক ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় আবশ্যিক জিনিস কোনওভাবে তাঁদের কাছে পৌঁছনো গিয়েছিল। শ্রমিকদের উদ্ধারে সবরকম প্রয়াস করেছে সরকারও। তাই সুড়ঙ্গ থেকে বাইরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আস্থা দেখিয়েছেন শ্রমিকরা।

জিওটেক্সটাইল শিটের বান্ডিল বিছানা

সুড়ঙ্গের বাইরে এসে শ্রমিকরা জানান, "যখন ধস নামল, তখনই বুঝতে পেরেছিলাম আমরা আটকে গিয়েছি। প্রথম ১০-১৫ ঘণ্টা আমাদের পরিস্থিতি কঠিন ছিল। কিন্তু পরে একটা পাইপের মাধ্যমে আমাদের ভাত, ডাল ও শুকনো ফল পাঠানো হয়। একটা মাইকও লাগিয়ে দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে আমরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতাম।" তাঁরা জানান, যেখানে তাঁরা আটকে পড়েছিলেন, সেখানে জিওটেক্সটাইল শিটের বান্ডিল পড়েছিল। শ্রমিকরা সেটাকেই বিছানার মতো করে বানিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। টানেলের ভিতরে কর্মীদের খুব একটা ঠান্ডা লাগেনি। সেখানে তাপমাত্রা ২২-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। আটকে পড়া শ্রমিকরা সুড়ঙ্গেই যোগব্যায়াম ও ব্যায়াম করছিলেন। সকাল-সন্ধ্যা টানেলের ভেতরে হেঁটছেন। যে অংশে শ্রমিকরা আটকে পড়েছিলেন, তার দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ২ কিলোমিটারের মতো। ফলে, হাঁটাচলায় অসুবিধে হয়নি।

টানেলে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল

শ্রমিকদের উদ্ধাকাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা এক আধিকারিক জানান, তিনি বলেন, ওঁরা ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেয়েছেন। ধ্বংসাবশেষের কারণে বিদ্যুতের সরবরাহের কোনও ক্ষতি হয়নি। নির্মাণের সময়, সুড়ঙ্গের দেওয়াল বরাবর বৈদ্যুতিক তারগুলি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেগুলি ভাল অবস্থাতেই ছিল। ফলে অন্তত একটু আলোর ব্যবস্থা ছিল অন্ধকার সুড়ঙ্গে। সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস, যেমন টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, তোয়ালে, জামাকাপড়, অন্তর্বাস ইত্যাদি শ্রমিকদের দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মোবাইল ফোনও দেওয়া হয়েছিল। তাতে সিনেমা এবং ভিডিও গেমও ছিল।

পাঠানো হয়েছে পর্যাপ্ত খাবার

সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের প্রথমে তরল খাবার দেওয়া হলেও কয়েকদিন পর থেকে সলিড খাবার দেওয়া শুরু হয়। শ্রমিকদের দেখার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকরা জানান, "আমরা সকালে তাদের কাছে ডিম, চা এবং পোরিজ(ওটস, সুজি জাতীয়) পাঠাচ্ছিলাম। দুপুর ও রাতের খাবারে ডাল, ভাত, রুটি এবং সবজি খাচ্ছিলেন। তাঁদের খাওয়ার জন্য ডিসপোজেবল প্লেটও পাঠানো হচ্ছিল।" চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শ্রমিকরা যাতে পর্যাপ্ত জল খান, তা নিশ্চিত করতে বোতলের মধ্যে ভরে পাইপের মাধ্যমে ওআরএস পাউডার পাঠানো হয়েছিল। তাছাড়া চোখের ড্রপ, ভিটামিন পিল এবং অন্যান্য এনার্জি ড্রিংকও পাঠানো হয়েছে। শুকনো ফল ও বিস্কুটও শ্রমিকদের কাছে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন: জীবনের ঝুঁকি, মনের জোরে সাফল্য! উত্তরকাশীতে ‘হিরো’ র‍্যাট হোল মাইনার্স

সুড়ঙ্গ থেকে বেরনোর পর রাতেই শ্রমিকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টানেলের মুখের সামনে তৈরি মন্দিরে পুজো দেওয়া হয়। আপাতত চিনিয়ালিসৌরের হাসপাতালে রয়েছেন উদ্ধার হওয়া শ্রমিকরা। এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে থাকাকালীন তাঁদের কোনওরকম শারীরিক সমস্যা হয়নি। সকালে তাঁদের হালকা খাবার দেওয়া হয়েছে।

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles