মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিজেপির কেন্দ্রীয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম এবার গেল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় (South 24 Parganas)। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই প্রতিনিধি দল পৌঁছায় বাসন্তীর সোনাখালিতে। সেখানে গীতাঞ্জলি কমপ্লেক্সে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সাথে কথা বলেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা। তাঁদের সঙ্গে একটি আইনজীবীদের দলে এসেছেন বাসন্তীতে। আক্রান্ত পরিবার এবং মানুষের সঙ্গে কথা বলেন টিমের সদস্যরা। সেই সঙ্গে আক্রান্তদের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে বলে বিজেপির তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
কেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম (South 24 Parganas)?
রাজ্যে নির্বাচনকে ঘিরে এখনও পর্যন্ত ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মনোনয়ন থেকে ভোটের ফলাফল পর্যন্ত সর্বত্র উত্তপ্ত। ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই ভোট পরবর্তী হিংসায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া। প্রাণ ভয়ে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। রাজ্যের গণতন্ত্র যে সুরক্ষিত নয়, সেই জন্য বারবার রাজ্যপাল নিজে উত্তর থেকে দক্ষিণে হিংসা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। রাজ্যপালের পিস রুমে এখনও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠিক করে ব্যবহার করেনি কমিশন। আর তাই বিএসএফ-এর স্পেশাল ডিজি রিপোর্ট দিয়েছেন। হাইকোর্টের নির্দেশকে কমিশন কতটা নির্বাচনের সময় কার্যকর করেছে, তা নিয়ে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ কমিশনের রিপোর্টে অসন্তোষ ব্যক্ত করছে। বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্বাচনে ব্যালট লুট করা এবং রাস্তায় পড়ে থাকার দিক সহ সমগ্র অশান্তি ঠেকাতে কমিশন কতটা ব্যর্থ ছিল, সে কথাও স্পষ্ট করেছেন। তাই বিজেপির কেন্দ্রীয় স্তর থেকে প্রাক্তন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বে চার সাংসদের দল নির্বাচনে হিংসা কবলিত দক্ষিণ ২৪ পরগনা (South 24 Parganas) এলাকায় আক্রান্ত পরিবারে সঙ্গে দেখা করতে আসে। পীড়িত পরিবারের মানুষের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ শুনে এই টিম বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডার কাছে নির্বাচন এবং হিংসার উপর বিশেষ রিপোর্ট জমা করবে।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম কোথায় পরিদর্শন করল?
গতকাল বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার হিংসা কবিলত এলাকা পরিদর্শন করে এই টিম। উল্লেখ্য, বসিরহাট, ন্যাজট, মিনাখাঁ, হিঙ্গলগঞ্জে মনোনয়ন করার পর বিজেপি কর্মীরা এলাকা ছাড়া হয়ে গিয়েছিলেন। পরে হাইকোর্টের আদেশে মনোনয়ন জমা করতে গেলেও পারেননি। বিজেপির এই কেন্দ্রীয় টিম আজ সকালে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের বিরুদ্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে। রাজ্যের সাধারণ মানুষের জীবন এবং সম্পত্তির সুরক্ষা চেয়ে বিশেষ আবেদন করে এই টিম। এরপর দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) বাসন্তী এবং ডায়মন্ডহারবার যাওয়ার কথা ঘোষণা করে টিম। সেই সঙ্গে টিমের পক্ষ থেকে রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, আমি আশা করব মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কোনও রকম বাধা না দিয়ে হিংসা কবলিত এলাকা এবং নিপীড়িত মানুষের সঙ্গে কথা বলবার সুযোগ দেবেন। গণতন্ত্রের এই যে কঠিন পরিস্থিতি, তা অত্যন্ত লজ্জার।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম কী বলল?
টিমের পক্ষ থেকে সোনাখালিতে রবিশঙ্কর প্রসাদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমে হুমকি দেয়, মনোনয়ন করলে বাড়িতে হামলা হবে। দ্বিতীয়ত পর্যায়ে হুমকি আসে, ভোটের প্রচার করলে বাড়ি থেকে সন্তানদের অপহরণ করা হবে। আর তৃতীয় পর্যায়ে ভোটে জয়ী হলে জয়ী ঘোষণা করা হবে না, সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না! ঠিক এইভাবেই এলাকায় তৃণমূল হিংসা চালিয়েছে। টিমের পক্ষ থেকে তিনি আরও বলেন, জীবন এবং সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। এই প্রসঙ্গে টিমের কাছে এক বিজেপির মহিলা প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, ভোটের গণনার শেষে তৃণমূল প্রার্থীরাই আমাকে বলেছিলেন, আমি নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। কিন্তু কোনও সার্টিফিকেট না দিয়ে বসিয়ে রাখে! আর এরপর অনেক সময়ের পর ঘোষণা হয়, জয়ী হয়েছে তৃণমূল! ঠিক এইভাবেই আমাদের সঙ্গে প্রবঞ্চনা করছে কমিশন। আমরা বিচার চাই!
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours