মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্য সরকারি হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ব্যবহার করা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর (RG Kar Incident) মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় নিজেই গত শুনানির প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়ে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? তখনই রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, ‘রাত্রি সাথী’ নামের একটি বাহিনী তৈরি করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বিষয়ক এজেন্সিকে এই দায়িত্ব দেওয়া হবে। তখনই নিরাপত্তার বিষয়ে চুক্তিভিত্তিক তথা ঠিকাকর্মী নিয়োগের প্রবণতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ
আরজি কর হাসপাতালে (RG Kar Incident) চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের মামলায় প্রথম গ্রেফতার হয়েছেন যিনি, তিনি কলকাতা পুলিশের একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। সেই প্রসঙ্গ টেনে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘অভিযুক্ত পুলিশের একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। নিরাপত্তার জন্য সিভিক ভলান্টিয়ারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি তো? নিরাপত্তার অভাব ছিল বলেই তো ওই সিভিক ভলান্টিয়ার সারা হাসপাতাল ঘুরে বেড়িয়েছেন। আবার নিরাপত্তার দায়িত্বে অস্থায়ী কর্মী রাখবেন? যেখানে সব সময় কাজ চলছে, ডাক্তারেরা ৩৬ ঘণ্টা কাজ করছেন, সেখানে এমন নিরাপত্তা কেন? ওই চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ৭ দিনের ট্রেনিং দিয়ে কী ভাবে তাঁদের থেকে উপযুক্ত নিরাপত্তার আশা করেন? কী ভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করতে পারে রাজ্য? রাজ্যের এই বিষয়ে ভাবা উচিত।’’
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাক পুলিশ
হাসপাতালগুলিতে নিদেনপক্ষে পুলিশ রাখার পরামর্শ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা, সরকারি হাসপাতালগুলির পরিসংখ্যান এবং সেখানে কমবয়সি মহিলাদের কাজের বিষয় উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘২৮টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে রাজ্যে। আরও ১৭টি হাসপাতাল সরকারের সঙ্গে যুক্ত। সেখানে ১৮-২৩ বছরের তরুণীরা কাজ করেন। তাঁদের নিরাপত্তায় চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ হলে নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। সরকারি হাসপাতালে কমপক্ষে পুলিশকর্মী রাখা উচিত।’’ হাসপাতালে প্রশিক্ষিত পুলিশকর্মী নিয়োগের দাবি জানান জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং।
আরও পড়ুন: রাতে কেন কাজ করতে পারবে না মেয়েরা? রাজ্যকে বিজ্ঞপ্তি পাল্টাতে সুপ্রিম-নির্দেশ
নিরাপত্তার বিষয়ে রাজ্যের পদক্ষেপ
এদিন সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) রাজ্যের তরফ জানানো হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে আরজি কর (RG Kar Incident) মেডিক্যাল কলেজে আগে ৩৭টি সিসি ক্যামেরা ছিল। আরও ৪১৫টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। একথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এখন বলছেন ৪১৫টি ক্যামেরা লাগানো হবে। আগে মাত্র ৩৭টি ছিল!’’ রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘‘স্বাস্থ্যসচিবকে বলুন মহিলা ডাক্তারদের বিশ্রামগারে যেন বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা থাকে।’’ রাজ্য জানিয়েছে, রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে ডাক্তারদের জন্য শৌচাগার, বিশ্রামকক্ষেরও ব্যবস্থা করা হবে। এরপর সুপ্রিম কোর্ট জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংকে জানান, সুরক্ষা-নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যের আশ্বাস মেনে এবার তাঁদের কাজে ফেরা উচিত।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours