ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে নরেন্দ্রাদি অন্তরঙ্গ ও অন্যান্য ভক্তসঙ্গে
প্রথম পরিচ্ছেদ
দক্ষিণেশ্বরে কেদারের উৎসব
ওস্তাদটি বেশ গান গাহিয়াছিলেন। ঠাকুর (Ramakrishna) প্রসন্ন হইয়াছেন। তাঁহাকে বলিতেছেন, যে মানুষে একটি বড় গুণ আছে, যেমন সঙ্গীতবিদ্যা, তাতে ঈশ্বরের শক্তি আছে বিশেষরূপে!
ওস্তাদ—মহাশয়, কি উপায়ে তাঁকে পাওয়া যায়?
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ভক্তিই সার, ঈশ্বর তো সর্বভূতে আছেন; তবে ভক্ত কাকে বলি? যার মন সর্বদা ঈশ্বরেতে আছে। আর অহংকার অভিমান থাকলে হয় না। আমি রূপ ঢিপিতে ঈশ্বরের কৃপারূপ জল জমে না, গড়িয়ে যায়। আমি যন্ত্র।
(কেদারাদি ভক্তদের প্রতি)—সব পথ দিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়। সর্ব ধর্মই সত্য। ছাদে উঠা নিয়ে বিষয়। তা তুমি পাকা সিঁড়ি দিয়েও উঠতে পার; কাঠের সিঁড়ি দিয়েও উঠতে পার; বাঁশের সিঁড়ি দিয়েও উঠতে পার; আর দড়ি দিয়েও উঠতে পার। আবার একটি আছোলা বাঁশ দিয়েও উঠতে পার।
যদি বল, ওদের ধর্মে অনেক ভুল, কুসংস্কার আছে, আমি বলি, তা থাকলেই বা, সকল ধর্মেই ভুল আছে। সব্বাই মনে করে আমার ঘড়িই ঠিক যাচ্ছে। ব্যাকুলতা থাকলেই হল; তাঁর উপর ভালবাসা, টান থাকলেই হল। তিনি যে অন্তর্যামী, অন্তরের টান ব্যাকুলতা দেখতে পান। মনে কর, এক বাপের অনেকগুলি ছেলে, বড় ছেলেরা কেউ বাবা, কেউ পাপা—এই সব স্পষ্ট বলে তাঁকে ডাকে। যারা ‘বা’ কি ‘পা’ পর্যন্ত বলতে পারে—বাবা কি তাদের উপর রাগ করবেন? বাবা জানেন যে, ওরা আমাকেই ডাকছে তবে ভালকরে উচ্চারণ করতে পারে না। বাপের কাছে সব ছেলেই সমান।
আবার ভক্তেরা তাঁকেই নানা নামে ডাকছে; এক ব্যক্তিকেই ডাকছে। এক পুকুরের চারটি ঘাট। হিন্দুরা জল খাচ্ছে একঘাটে বলছে জল; মুসলমানরা আর-এক ঘাটে খাচ্ছে বলছে পানি; ইংরেজরা আর-একঘাটে খাচ্ছে বলছে ওয়াটার; আবার অন্যলোক একঘাটে বলছে aqua।
এক ঈশ্বর (Ramakrishna) তাঁর নানা নাম।
আরও পড়ুনঃ “সচ্চিদানন্দলাভ হলে সমাধি হয়, তখন কর্মত্যাগ হয়ে যায়”
আরও পড়ুনঃ “তিনি দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, বলরাম! তুমি? এত রাত্রে?”
আরও পড়ুনঃ “পাপ করলে তার ফল পেতে হবে! লঙ্কা খেলে তার ঝাল লাগবে না?”
আরও পড়ুনঃ “ব্যাকুলতা না এলে কিছুই হয় না, সাধুসঙ্গ করতে করতে ঈশ্বরের জন্য প্রাণ ব্যাকুল হয়”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours