মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে দ্বীপরাষ্ট্র। ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি। সোমবার পদত্যাগ পত্রে সই করেছেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষ (Sri Lankan President Gotabaya Rajapaksa)। আর তার পরেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে দেশ ছেড়ে পালালেন গোতাবায়া। রাষ্ট্রপতির দেশ ছাড়ার জল্পনা আগেই ছিল। দেশের সামরিক বাহিনীর বিমানে চেপেই পরিবার নিয়ে মালদ্বীপে (Maldives) পালিয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অনুমোদনের পরেই ১৩ জুলাই ভোরে রাষ্ট্রপতি, তাঁর স্ত্রী এবং দু'জন দেহরক্ষীকে নিয়ে সেনা বিমান মালদ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় ইমিগ্রেশন, শুল্ক এবং অন্যান্য সমস্ত বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (Ministry of Defense) অনুমোদন দিয়েছিল। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফ থেকেও রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কাতুনায়াকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়েছে বিমানটি। মালদ্বীপের ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে সেই বিমান। মালদ্বীপে পৌঁছে তাঁরা কোথায় গিয়েছেন সে বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে শ্রীলঙ্কার প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক পটবদল, আগামী সপ্তাহেই নতুন রাষ্ট্রপতি পাবে শ্রীলঙ্কা
সূত্রের খবর, অ্যান্টোনভ-২২ সামরিক বিমানে চেপে দেশ ছাড়েন গোতাবায়া। শ্রীলঙ্কার বায়ু সেনার মিডিয়া ডিরেক্টর (Sri Lankan Air Force Media Director) এক বিবৃতিতে বলেছেন, "শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি, তাঁর স্ত্রী ও ২ জন দেহরক্ষীকে দেশ ছাড়ার জন্যে ইমিগ্রেশন, শুল্ক এবং অন্যান্য বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ১৩ জুলাই ভোরে এয়ার ফোর্সের বিমানে তাঁদের মালদ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।"
আরও পড়ুন: দেনার দায়ে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়াল ভারত, স্বাগত জানালেন সনৎ জয়সূর্য
সোমবারই রাজাপক্ষ পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন। যা আজ সংসদের স্পিকারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। বুধবার তিনি ইস্তফা দেবেন, এমনটাই জানিয়েছিলেন স্পিকার। কিন্তু তার আগেই দেশ ছেড়েছেন রাজাপক্ষ। তবে তিনি আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, নিজের পরিবারকে নিরাপদ স্থানে না নিয়ে যেতে পারলে ইস্তফা দেবেন না।
রাষ্ট্রপতির দেশ ছাড়ার পরেই, ফ্লাওয়ার গার্ডেনে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের বাড়ির সামনে বিশাল জমায়েত করে জনতা। বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায় প্রাসাদের সামনে। দেখা নেই কোনও রক্ষীর। ফলে প্রাসাদ চত্বরে অবাধ বিচরণ জনতার। এই পরিস্থিতিতেই জারি হয়ে গেল জরুরি অবস্থা। জরুরি অবস্থা জারি হওয়ার পরেই দেশের কার্যনির্বাহী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন রনিল বিক্রমসিংহে।
[tw]
#WATCH | Sri Lanka: Security personnel continue to fire tear gas shells amid fresh protests in the vicinity of the Sri Lankan PM's residence in Colombo pic.twitter.com/PnvFkPjB5r
— ANI (@ANI) July 13, 2022
[/tw]
[tw]
Sri Lankan police use tear gas outside PM's residence to disperse protestors
— ANI Digital (@ani_digital) July 13, 2022
Read @ANI Story | https://t.co/HjWTGnmuRy#SriLankanPolice #TearGas #RanilWickremesinghe #SriLankanPMResidence pic.twitter.com/czF4IcRoae
[/tw]
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর দফতরেরও দখল নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। প্রতিবাদ রুখতে কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করে পুলিশ। রনিল বিক্রমসিংহে বলেন, ফ্যাসিস্ট শক্তি সরকার দখল করতে চাইছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাকে নির্দেশ দিলেন নয়া রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমসিংহে।
[tw]
Sri Lanka | Protestors breach the premises of Sri Lankan PM's office in Colombo, raise flag atop the building#SriLanka pic.twitter.com/JceFYxTVyI
— ANI (@ANI) July 13, 2022
[/tw]
নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত সাময়িক সময়ের জন্য রাষ্ট্রপতির পদে বহাল থাকবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে।
গত সপ্তাহের শেষেই রাষ্ট্রপতির বাস ভবনের দখল নেন দেশের সাধারণ মানুষ। বিষয়টি এমন দিকে গড়াতে পারে, সেকথা আগেই আঁচ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া। তাই আগেভাগেই রাষ্ট্রপতি ভবন ছাড়েন তিনি। তারপর থেকে তাঁর কোনও সন্ধান ছিল না। পরবর্তীতে শোনা যায়, তিনি শ্রীলঙ্কার নৌসেনা শিবিরে লুকিয়ে ছিলেন। অবশেষে বুধবার ভোরে সেনা বিমানে চেপে দেশ ছাড়েন তিনি।
+ There are no comments
Add yours