মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সিংহ দুয়ার মুখার্জি পরিবার। নামটা অতি পরিচিত নদিয়ার বীরনগরবাসীর কাছে। প্রায় ৭০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন এবং মিশ্রিত ধাতুর তৈরি রথে পূজিত হন আরাধ্য দেবতা জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা (Rath Yatra)। মুখার্জি বাড়ির সদস্যরা জানিয়েছেন, রথটি ৭০০ বছর আগে ঢাকা থেকে নদিয়ার ফুলিয়াতে আনা হয়। সেখানে ২০০ বছর অবস্থান করার পর নিয়ে যাওয়া হয় মুখার্জি পরিবারে। রথটি তৈরি তামা ও পিতল দিয়ে। রথের চাকাও তৈরি মিশ্রিত ধাতু দিয়ে। এখনও মুখার্জি পরিবারে গেলে দেখা যাবে প্রাচীনত্বের ছোঁয়া। সুদর্শন কারুকার্যের মধ্যে দিয়ে এখনও ফুটে ওঠে ইটের প্রাচীর।
রথ উৎসবের (Rath Yatra) দিন সবাই একত্রিত হন
একটা সময় দেশ-বিদেশ থেকে পণ্ডিতরা আসতেন। ধুম ধাম করে পালিত হত রথ উৎসব (Rath Yatra)। উৎসব শেষে পণ্ডিতরা দীর্ঘদিন ওই স্থানে বসবাস করতেন। কিন্তু হঠাৎই গভীর রাতে চুরি করার উদ্দেশ্যে ছক করে একদল ডাকাত। এরপর চুরি করে নেয় রথের সারথি ও মূল্যবান বেশ কিছু ধাতু। তারপর থেকে সারা বছরই বিগ্রহ দেবতাদের রাখা হয় মুখার্জি বাড়ির একটি শিব মন্দিরে। তবে সেকালের রথ উৎসবের জাঁকজমকে এখন অনেকটাই ঘাটতি পড়েছে। চিরাচরিত প্রথা মেনে রথ উৎসব পালন হলেও আগের মতো আর মানুষের আনাগোনা দেখা যায় না। তবে পরিবারের সদস্যরা কর্মসূত্রে বিভিন্ন জায়গায় থাকলেও এই রথ উৎসবের দিন সবাই একত্রিত হয়ে পালন করেন রথ উৎসব। মিশ্রিত ধাতুর রথের চারদিকে ঘুরলে দেখা যাবে সেকালের শিল্পীদের অপূর্ব কারুকার্য, যা এখনকার শিল্পীদের ভাবনার বিষয়। চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী রথের রশিতে টান দেন মুখার্জি পরিবারের বংশধররা। এর পরে একই জায়গাতে রেখে দেওয়া হয় মিশ্রিত ধাতুর তৈরি রথ সহ আরাধ্য দেবতা জগন্নাথ, বলরাম সুভদ্রা দেবীকে।
এখনও নিয়মিত পালিত হয় এই রথযাত্রা (Rath Yatra)
আজ উল্টোরথ, সকাল থেকেই রথকে সাজানো হয় সুন্দরভাবে। বিকেলের পরে হরিনাম সংকীর্তন করে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা দেবীকে নিয়ে যাওয়া হবে আবার শিব মন্দিরে। বংশের ৩৬ তম বংশধর অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ৭০০ বছর আগে ঢাকা থেকে এই রথটি ফুলিয়া এলাকায় ছিল প্রায় ২০০ বছর ধরে। বিভিন্ন কারণে পরবর্তীকালে ওই রথ নিয়ে এসে নিজেদের বাড়িতে একটি মন্দিরে রাখে আমাদের এই বংশধরের। প্রাচীন সেই রীতি মেনেই এখনও নিয়মিত পালিত হয় এই রথযাত্রা (Rath Yatra)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours