মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আট দিন পর মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দির থেকে এবার ফেরার পালা (Rath Yatra 2024) প্রভুর। আষাঢ় মাসের দশমী তিথিতে শ্রীক্ষেত্র জগন্নাথ ধামে (Jagannath Temple) ফিরে আসবেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। সারা বিশ্ব এটিকে উল্টো রথ হিসেবে জানলেও, আসলে এর নাম ‘বহুদা যাত্রা’। মন্দিরের সামনে এসেও তিনদিন ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকবেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। কিন্তু কেন? কেন তিনদিন নিজ গৃহে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করতে হবে প্রভুকে। এই তিনদিন কোথায় থাকবেন তাঁরা?
তিন দিন প্রভুর অপেক্ষা (Rath Yatra 2024)
কথিত আছে মাসির বাড়ি থেকে ফিরে সহজে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা মূল মন্দিরে (Jagannath Temple) প্রবেশের অনুমতি পান না। কারণ তাঁরা দেবীর লক্ষ্মীকে শ্রী মন্দিরে একা রেখেই মাসির বাড়িতে (Rath Yatra 2024) গিয়েছিলেন এবং আনন্দে মেতে ছিলেন। তাই অভিমানী দেবী সটান মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেন। সেই থেকে টানা তিন দিন দরজার সামনেই অপেক্ষা করতে হয় তাঁদের। আর এই দিনগুলিতে হয় নানান ধরনের উৎসব।
তিনদিন মহোৎসব
রীতি অনুযায়ী মন্দিরের (Jagannath Temple) সামনে তিনদিন মহোৎসব পালন করা হয়। উল্টো রথের (Rath Yatra 2024) দিন 'সুনা বেশে' পূজা করা হয়। অর্থাৎ, সোনা দিয়ে সাজানো হয় তিন দেব-দেবীকে। দ্বিতীয় দিন পালন করা হয় অধরপনা, তৃতীয় দিন হয় রসগোল্লা উৎসব বা নীলাদ্রি ভেজ।
‘সুনা বেশ’
একাদশী তিথিতে তিথিতে উল্টো রথের দিন, তিন দেব-দেবী সোনার বেশভূষায় সজ্জিত হন রথেই। স্বর্ণালংকার পরিয়ে তাঁদের আরাধনা হয়। এরই নাম ‘সুনা বেশ’। এবার ‘সুনা বেশ’ পালন করা হবে ১৬ জুলাই।
অধরপনা
সুনা বেশের পরের দিন দ্বাদশীর দিন হবে ‘অধরপনা’ উৎসব। এই রীতি অনুযায়ী দ্বাদশীর দিন সন্ধ্যাবেলায় জগন্নাথ দেবকে সরবত খাওয়ানো হয়।
রসগোল্লা উৎসব
ত্রয়োদশীর দিন পালন করা হয় এই উৎসব। জগন্নাথ দেবকে কয়েকশো হাঁড়ি রসগোল্লা ও ৫৬ ভোগ নিবেদন করা হয়। এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় তিন দিনের সাজা। তৃতীয় দিনই (Jagannath Temple) মূলরত্ন বেদীতে তোলা হয় জগন্নাথ, বলরাম সুভদ্রাকে।
পুরাণের মত
কথিত রয়েছে, মহারাজ ইন্দ্রদ্যুম্নর আমলে জগন্নাথদেব, বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তি তৈরি হয়। সেই সময়েই রথযাত্রাও চালু হয়। আবার অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, রথযাত্রার ইতিহাস আলাদা। ১০৭৮ সালে তৈরি হয়েছিল পুরীর জগন্নাথ মন্দির। ১১৭৪ সালে মেরামতি করানোর হয়। তার পরেই নাকি তা বর্তমান জগন্নাথ মন্দিরের চেহারা নেয়। তখন শুরু হয় রথযাত্রা। কপিলা সংহিতা, ব্রহ্ম পুরাণ, পদ্ম পুরাণ ও স্কন্দ পুরাণে রথযাত্রা সম্পর্কে পাওয়া যায় তথ্য। ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ বলছে, রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত।
আরও পড়ুন: শৈশবের স্মৃতি ফেরাবে হুগলির রথের মেলার পুতুল নাচ
সমুদ্রে ভেসে আসা কাঠের খণ্ড দিয়ে তিনি দেবমূর্তি নির্মাণে আদেশ পান। আরও এক সূত্র বলে, তিনি বিষ্ণু মন্দির গড়ার স্বপ্নাদেশ পান। তবে এই মন্দির গড়া নিয়ে ছিল না ধারণা। আদেশ ছিল মূর্তি গড়ার সময়ে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না মন্দিরে। মূর্তি গড়ছিলেন স্বয়ং বিশ্বকর্মা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours