Ram Temple: অযোধ্যায় ফিরছেন রাম, পুরুষোত্তমের পদধূলি ধন্য জায়গাগুলি জানেন?

সোমে উদ্বোধন রাম মন্দিরের, চিনুন পুরুষোত্তম অবতারকে...
ram_path_f
ram_path_f

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তিনি পুরুষোত্তম। তিনি (Ram Temple) অবতার। দুষ্ট দমন করে শিষ্ট পালন করতেই তিনি ধারণ করেছিলেন পার্থিব দেহ। যে শরীর ধারণ করলে কষ্ট পায় জীব, সেই পঞ্চভৌতিক শরীর ধারণ করে দুঃখ-কষ্ট-বিরহ-দহনজ্বালা তিনি সয়েছেন আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো।

ভগবান রাম

ভারতভূমে প্রতিষ্ঠা করেছেন রামরাজ্য। তাই তিনি হয়েছেন মহাকাব্যের কেন্দ্রীয় চরিত্র। এই চরিত্রের পায়েই প্রণতি স্বীকার করেন আসমুদ্রহিমাচলবাসী। আবার নিছকই মহাকাব্যীয় কল্প-চরিত্র বলে গল্পকথা রটিয়ে দেয় অর্বাচিনের দল। এহেন মর্যাদা পুরুষোত্তম রামের জন্য তৈরি হয়েছে আস্ত একটি মন্দির। বানর সেনার সেতু বন্ধনের মতো যে মন্দির তৈরিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাহায্য করেছেন তামাম ভারতবাসী। যে মন্দিরে ২২ জানুয়ারি, সোমবার প্রতিষ্ঠিত হবে তাঁর বালকরূপের প্রতিমূর্তি। রচনা হবে নয়া ইতিহাস। যে ইতিহাসের সাক্ষী থাকবেন দেশ-বিদেশের হাজার আটেক মানুষ। তাঁরা সবাই (Ram Temple) যে ভক্ত, তা নন। তবে তাঁদের প্রত্যেকের কাছে রাম মর্যাদা পুরুষোত্তম।

পুরুষোত্তমের পদধূলি ধন্য ‘মহাভারত’

এহেন অবতার পুরুষোত্তমের পদধূলিতে ধন্য হয়েছে ‘মহাভারত’। অযোধ্যায় তিনি প্রকাশিত হন সেই কোন ইতিহাসের কালে। তারপর তাঁর দৃপ্ত পদচারণা অখণ্ড ভারতে। যে ভারতভূম ছিল তাঁর এক সময়ের লীলাভূমি, সেখানেই তিনি ছিলেন নিজ ভূমে পরদেশির মতো। তারপর সরযূ নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে সময়ের স্রোত। প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। আক্ষরিক অর্থেই এবার রাজপ্রাসাদে ঠাঁই পেতে চলেছেন ভগবান রাম।

অযোধ্যা

তাঁর শৈশবের লীলাভূমি অযোধ্যা (Ram Temple) এখন ফৈজাবাদ জেলার অন্তর্ভুক্ত। এই অযোধ্যায়ই কেটেছিল তাঁর শৈশব-বাল্য-কৈশোর। পরে বিয়ে হয় তাঁর। সীতাকে বিয়ে করতে তিনি গিয়েছিলেন নেপালের জনকপুরে। পরে পিতা দশরথের প্রতিজ্ঞা পালনে তিনি হন বনবাসী। তাঁর সঙ্গ নেন স্ত্রী সীতা ও ভাই লক্ষ্মণ। এর পর লঙ্কার রাবণ কর্তৃক অপহৃত হন সীতা।

অশোকবন

একদা রাজনন্দিনীর ঠাঁই হয় রাবণের অশোক বনে। বানর সেনার সহায়তায় সেখানে গিয়ে সীতাকে উদ্ধার করেন রাম। এজন্য তুমুল যুদ্ধ হয় লঙ্কায়। যে যুদ্ধে হত হন রাবণ। আসুরিক শক্তি অবনত হয় পুরুষোত্তম রামের পায়ে। সীতা এলিয়ার গ্রামের এই অশোক বনে রয়েছে সীতা আম্মার মন্দির।

চিত্রকূট-পঞ্চবটী

রামের (Ram Temple) পদধূলিতে ধন্য হয়েছে মধ্যপ্রদেশও। এখানে চিত্রকূট পাহাড়ের কাছে নদী তীরে লক্ষ্মণ তৈরি করেছিলেন কুটির। এখানেই রামের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল ভাই ভরতের। এখান থেকেই রামের পাদুকা নিয়ে ভারত ফিরে যান অযোধ্যায়। নাসিকের পঞ্চবটী বনে রাম-সীতার বসবাসের জন্য কুটির তৈরি করেছিলেন লক্ষ্মণ। এখান থেকেই অপহৃত হন সীতা। অন্ধ্রপ্রদেশের লেপাক্ষীও ধন্য হয়েছে রামের পদধূলিতে। এখানেই সীতা চুরির ঘটনার কথা রাম জানতে পারেন ভক্ত জটায়ূর কাছে। এখানেই ডানা কাটা অবস্থায় পড়েছিলেন জটায়ূ। এখানেই শাপোদ্ধার হয় শবরীর, রামের অপেক্ষায় এক যুগ ধরে পাথর হয়ে পড়েছিলেন যিনি।

আরও পড়ুুন: গোধরা গণহত্যায় হত ৫৮ করসেবকের পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ অযোধ্যায়

রামেশ্বরম

তামিলনাড়ুর রামেশ্বরম এবং ধনুষ্কোটিও রয়েছে রামের লীলাভূমির তালিকায়। ভক্ত হনুমান যখন সীতাকে অশোক বনে খুঁজে পেলেন, তখন রাম এই জায়গাটিতে একটি ধনুক পুঁতে রাখেন। সীতা উদ্ধারে লঙ্কায় যেতে বানর সেনার সাহায্যে এখানেই হয়েছিল সেতুবন্ধন। রাবণকে পরাস্ত করে দিভিরুমপোলা এলাকা থেকেই সীতাকে সঙ্গে নিয়ে অযোধ্যার দিকে রওনা দেন রাম। শ্রীঙ্গভেরপুরে গঙ্গা পার হন রাম-লক্ষ্মণ-সীতা। গঙ্গা পেরিয়ে রাম-লক্ষ্মণ-সীতা পৌঁছান প্রয়াগের ত্রিবেণী সঙ্গমে। এখানেই ভরদ্বাজ ঋষির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় রামের। পরে ভাই ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে রাম চলে যান চিত্রকূট পর্বতের দিকে। রামটেক এখানে ঋষি অগস্ত্যর কাছে ব্রহ্মাস্ত্রের বিষয়ে জানেন রাম।

দণ্ডকারণ্য

সেখান থেকে তাঁরা চলে যান ছত্তিশগড়ের দণ্ডকারণ্যে। আশীর্বাদ নেন অত্রি ঋষির। তাঁর স্ত্রী অনসূয়া সীতার হাতে তুলে দেন তাঁর হারানো গয়নার কয়েকটি। দণ্ডকারণ্যের পর তাঁরা যান কর্নাটকের কিষ্কিন্ধ্যায়। এখানেই রাম-লক্ষ্মণের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় বালি ও সুগ্রীবের। কিষ্কিন্ধ্যার হৃত সাম্রাজ্য ফেরত পেতে সুগ্রীবকে সাহায্যও করেছিলেন রাম। লঙ্কায় যাওয়ার যে সেতু তৈরি করা হয়েছিল, সেই সেতু রাম সেতু নামে পরিচিত। ভান্ডারদারা, তুলজাপুর, সুরিবানা, কোপ্পালের ধুলোয়ও রয়েছে মর্যাদা পুরুষোত্তমের পদচিহ্ন। তিরুচিরাপল্লি, রামপদ এবং রামনাথপূরম ধন্য হয়েছে তাঁর পদধূলিতে।  সুভেলায় সেনাদের একত্রিত করেছিলেন রাম।

আলাইমান্নার

শ্রীলঙ্কায় রয়েছে আলাইমান্নার সমুদ্র সৈকত। এখানেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয়েছিল রাম-রাবণের। ব্রহ্মাস্ত্র দিয়ে এই জায়গায়ই দশানন বধ করেন রাম। দুষ্ট দমন শেষে শিষ্ট পালন করতে পুরুষোত্তম অযোধ্যায় প্রতিষ্ঠা করেন রামরাজ্য। সোমবার তাঁর শৈশব-বাল্য-কৈশোরের সেই লীলাভূমিতেই প্রতিষ্ঠিত (Ram Temple) হবেন রামলালা। আবারও প্রতিষ্ঠা হবে রামরাজ্য। যে রাজ্যে সুখে কাল কাটাবেন ভারতবাসী। মন দেবেন রাম-নাম জপে। অস্ফুটে বলবেন, ‘মন জপ নাম...’।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles