মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দিনকয়েক আগে পাসপোর্ট জালিয়াতি সামনে আসতেই রীতিমতো চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল সিবিআইয়ের হাতে। ভুয়ো নথির সাহায্যে পাসপোর্ট বানিয়ে চিনা গুপ্তচররা নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করছে। নেপাল হয়ে তারা সোজা চলে যাচ্ছে দক্ষিণ ভারতে। দেশে দেশে গুপ্তচরবৃত্তি এবং নজরদারি চালানোর অভ্যাস শি জিনপিং-এর দেশের নতুন কিছু নয়। ভারত মহাসাগর এলাকায় নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে ২০১৭ সালেই শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা বন্দর ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেয় চিন। বলা ভাল লিজ দিতে বাধ্য হয় ভারতের দক্ষিণের দ্বীপরাষ্ট্র। হামবানটোটা বন্দরকে লিজ নেওয়ার ফলে স্বাধীন শ্রীলঙ্কার সার্বভৌমত্ব প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীকালে শ্রীলঙ্কাতে আর্থিক সংকটও মারাত্মক আকার ধারন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্রীলঙ্কার মতো একই পরিণতি হতে পারে ভারতের হিমালয়ের কোলে পার্বত্য রাষ্ট্র নেপালেরও।
নেপালের হামবানটোটা হতে চলেছে পোখরা বিমানবন্দর
নেপালের পোখরা (Pokhara) বন্দর চিনের তৈরি। সম্প্রতি নেপালের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অরুণ কুমার সুবেদী সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘‘নেপালের হামবানটোটা হতে চলেছে পোখরা বিমানবন্দর।’’ নেপালের পোখরা (Pokhara) বিমানবন্দরের নির্মাণ নিয়ে বিতর্কও কম নেই। অতি নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগ উঠেছে চিনের বিরুদ্ধেই। চলতি বছরের গোড়ার দিকেই এই বিমানবন্দর চালু হলেও আন্তর্জাতিক বিমান ওঠানামা করতে দেখা যায়নি এখানে। তার চেয়ে বরং চিন চ্যাটার্ড বিমানই ওঠা নামা করতে দেখা যাচ্ছে। এতেও প্রশ্ন উঠছে, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করার জন্যই কি এই বিমানবন্দর তৈরি করেছে চিন?
চিনের আগ্রাসন
গত বছর নেপালের বালুওয়াটারে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবাকে পোখরা (Pokhara) বিমানবন্দরটি হস্তান্তর করেন চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ওয়াই। উদ্বোধনের আগে এই বিমানবন্দর ঘিরে বিতর্কও তৈরি হয়। কাঠমান্ডুতে চিনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে একতরফা ভাবে ঘোষণা করা হয় যে পোখরা বিমানবন্দরটি চিন-নেপাল বিআরআই-এর প্রধান প্রকল্প। বিবৃতিতে বলা হয় “চিন-নেপাল বিআরআই কোঅপারেশনের একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্ট এটি। নেপালি সরকার ও নেপালি নাগরিকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা।” তবে নেপালের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, চিনা দূতাবাসের এহেন মন্তব্য ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন সেদেশের প্রধানমন্ত্রী।
নেপালের সংবাদপত্রগুলিও চিনের বিরুদ্ধে লিখতে শুরু করে
নেপালের সংবাদপত্রগুলিও চিনের এই আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে যায়। জনপ্রিয় নেপালি সংবাদপত্র ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’ সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে লেখা হয়, বিমানবন্দরটির নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের মার্চ মাসে চিনের সঙ্গে সহজ শর্তে ঋণে ২১৫.৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মউ স্বাক্ষর করেছিল নেপাল। নেপাল সরকারের এহেন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্নও তোলে কাঠমান্ডু পোস্ট (Pokhara)। তথ্য বলছে, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাজ শুরু হয়। পাঁচ বছরে এই নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এই বিমানবন্দর তৈরিতে মোট খরচ হয়েছিল ৩০৫ মিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় এখন যা ২৪৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২১৫ মিলিয়ন ডলার লোন নেওয়া হয়েছে চিনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাঙ্ক থেকে। এখন ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য ১৭৭৫ কোটি টাকা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours