Partha Chatterjee: মন্ত্রিত্ব থেকে দলীয় পদ, সবকিছু থেকেই পার্থকে ছেঁটে ফেললেন মমতা

তদন্ত শেষ হওয়া না পর্যন্ত তৃণমূলের সব পদ থেকে সাসপেন্ড পার্থ। মন্ত্রিসভার তিনটি দফতর থেকেও অব্যাহতি।
mamata_story
mamata_story

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রথমে মন্ত্রিত্ব, তারপর পদ। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সবকিছু হারালেন একদা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বলা ভালো, এসএসসি কেলেঙ্কারির দায় মাথায় চাপিয়ে পার্থকে দল থেকেই ছেঁটে ফেলল তৃণমূল। বিকেল পাঁচটার বৈঠকের পর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, যতদিন না তদন্ত শেষ হচ্ছে, দল থেকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। অর্থাৎ, পার্থ আর তৃণমূলের মহাসচিব থাকছেন না। থাকছেন না তৃণমূল মুখপত্র জাগো বাংলার সম্পাদকের পদেও। পাঁচটি পদ থেকেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। 

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মা মাটি মানুষের সরকারে কার্যত দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলেও ছিলেন মহাসচিব পদে। কিন্তু টালিগঞ্জের পর বেলঘরিয়াতেও মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের পর আর ঝুঁকি নিতে পারল না দল। আজ বিকেলেই তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠক বসে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, তদন্ত যতদিন না শেষ হবে, ততদিন দল থেকে সাসপেন্ড থাকবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিজেকে যেদিন নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন , সেদিনই দল তাঁর ওপর শাস্তি অপসারণ নিয়ে ফের চিন্তাভাবনা করবে। 

বিকেলের এই সিদ্ধান্তের আগে আজ দুপুরেই মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর হাতে থাকা তিনটি দফতরই আপাতত থাকছে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। তবে শিল্প দফতর নিজের হাতে রেখে বাকি দুটি দফতর বন্টন করে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে, তথ্য প্রযুক্তি পেতে পারেন ব্রাত্য বসু। পরিষদীয় মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি তাপস রায়ের। নবান্ন সূত্রে অবশ্য নির্মল ঘোষের নামও পরিষদীয় মন্ত্রী হিসেবে ভেসে উঠছে। পার্থকে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সরকারি নোটিফিকেশন আজই জারি হয়।  ২৮জুলাই থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। তবে সরকারি নোটিফিকেশনে বরখাস্ত শব্দটি ব্যবহার না করে অব্যাহতি শব্দটি লেখায় সরকারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কেলেঙ্কারির ঘটনায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যেভাবে কামিনীকাঞ্চন যোগ সামনে এসেছে, তাতে তৃণমূল কংগ্রেস যে দায় এড়াতে পারে না, বিরোধীরা বারবার সেই প্রসঙ্গ সামনে এনেছে। রাজ্যের সাধারণ মানুষের মনেও প্রশ্ন উঠেছে, একা পার্থ চট্টোপাধ্যায় কি এই কোটি কোটি টাকা তুলতে পারেন? নাকি সঙ্গে আছে দলের আরও অনেকে? খোদ অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ও ইডির জেরার মুখে জানিয়েছেন, এই টাকা তোলার সঙ্গে অনেকেই যুক্ত আছে। এই অভিযোগ আর মানুষের মনে ওঠা প্রশ্ন , ভাবাতে শুরু করেছে তৃণমূলকে। তাই যে মুখ্যমন্ত্রী দুদিন আগে বলেছিলেন, এটা ষড়যন্ত্র কিনা দেখতে হবে, এখন তিনিও বুঝতে পারছেন, শিয়রে সমন। তাই আপাতত পার্থকে বলি দিতে পিছু হঠলেন না তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, যে সমস্ত ছবি সামনে আসছে, তার প্রেক্ষিতেই দল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান দলের সমস্ত পদ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে  সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব ছাড়াও দলীয় মুখপত্র জাগো বাংলার সম্পাদক, জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য এবং শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ইডি তল্লাশির ৪৮ ঘণ্টা পর প্রথমবার মুখ খুলেছিল তৃণমূল। তখনও এই দ্বন্দ্ব ছিল। ৭২ ঘণ্টা পর মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও তখন মন্ত্রী পার্থ নয়, নিজেকে বাঁচাতেই ব্যস্ত ছিলেন দলনেত্রী। বলেন আমার হাতেও আলকাতরা আছে, আমাকে বদনাম করলে আমিও আলকাতরা লাগাতে পারি। কোন ওয়াশিং মেশিন তা ধুতে পারবে না।

সময়ই বলবে, এসএসসি কেলেঙ্কারিতে ৫০ কোটিরও বেশি টাকা উদ্ধারে কারা কারা জড়িত। তবে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস যে মানুষের বিশ্বাস একেবারেই হারিয়েছে, তা দোকানে-বাজারে কান পাতলেই বোঝা যাচ্ছে। 

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles