মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গল্পের গরু গাছে ওঠে। কিন্তু, কখনও কোনও সারমেয়কে মোবাইলে ফোন করতে শুনেছেন। এটা গল্প মনে হলেও সত্যি। বাস্তবে এমনটাও ঘটে! ঘরের ভিতরে আটকে পড়ে শেষ পর্যন্ত ফোন করে কান্নাকাটি করে নিজেকে মুক্তির আর্জি জানাল ঘরবন্দি এক সারমেয় (Dog)। শনিবার সন্ধ্যায় এমনই এক অভিনব ঘটনার সাক্ষী থাকল হুগলির গুপ্তিপাড়া- ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস। বিষয়টি জানাজানি হতেই পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে তালা খুলে সারমেয়কে উদ্ধার করা হয়।
ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল?
এমনিতেই এই পঞ্চায়েত অফিস জুড়ে কয়েকটি সারমেয় (Dog) রাজ করে। পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ হয়ে গেলে তারা আবার রাস্তায় নেমে পড়ে। তাদের রোজকার রুটিন এটাই। শনিবার সমস্ত কাজকর্ম শেষে এই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বজিত নাগ অফিস বন্ধ করে সাটার নামিয়ে বাড়ি ফিরে যান। পঞ্চায়েত অফিস থেকে কিছুটা দূরেই তাঁর বাড়ি। সন্ধ্যা ৬ টার কিছুটা পরেই পঞ্চায়েত অফিসের তাঁর অফিস রুমে থাকা ল্যান্ড লাইন থেকে উপপ্রধানের মোবাইলে ফোন আসে। মোবাইলে অফিসের ল্যান্ড লাইনের নম্বর দেখে তিনি চমকে ওঠেন। কারণ, ঘণ্টাখানেক আগেই নিজের ওই অফিস রুমে তালা মেরে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। তাহলে অফিস রুমে আবার কে ঢুকল, কে মোবাইল নম্বরে তাঁকে ফোন করছে, এসব কথা ভেবে তিনি খানিকক্ষণ হ্যালো হ্যালো করেন। এরপর কিছুক্ষণ চুপ থাকেন। কয়েক সেকেন্ড পর অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসে সারমেয়র করুণ আর্তি। বিশ্বজিতবাবু পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পেরে পঞ্চায়ত অফিসে চলে আসেন। এলাকার উৎসুকরাও আসেন। খোলা হয় তালা। দেখা যায় সত্যি সত্যি একটি সারমেয় অফিসে ঢুকে বসে কাঁদছে। মুক্তি পেয়ে এক ছুটে বাইরে। আসলে বাইরে তার পরিবারের সদস্যরা তার জন্য অপেক্ষা করছে।
সারমেয়কে উদ্ধার করার পর কী বললেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান?
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাথ বলেন, অফিসের ল্যান্ড ফোন থেকে মোবাইলে ফোন আসায় প্রথমে চমকে উঠেছিলাম। তারপর সারমেয়র (Dog) করুণ ডাক শুনে মনে হচ্ছে, 'আমি আটকে পড়েছি, আমায় রক্ষা করো।' আমি ব্যাপারটা খানিকটা আন্দাজ করেই পঞ্চায়েত অফিসে যাই। আমি অফিসে গিয়ে দেখি, ফোনের রিসিভার যথাস্থানেই আছে। কিন্তু, কিভাবে এটা সম্ভব? আসল কারণটা ততক্ষণে আমি বুঝতে পারি। আমি অফিস থেকে চলে যাওয়ার সময় ল্যান্ড লাইনটা নিজের মোবাইলে ডাইভার্ট করে দিয়েছিলাম। যাতে কারও প্রয়োজনে আমাকে পাওয়া যায়। আমার ফোনে এমন একটি ব্যবস্থা করা রয়েছে, যে কেউ ল্যান্ড ফোনের রিসিভারটা তুলে কিছুক্ষণ কথা না বললে ল্যান্ড ফোনের নম্বর থেকে সরাসরি আমার মোবাইলে কল চলে আসে। আমার মনে হয়, কোনওভাবে সারমেয়র পা তারে লেগেই হোক রিসিভারটা সরে যায়। আর ওই ল্যান্ড ফোন থেকে আমার মোবাইলে কল চলে আসে। ফোন আসার পর অপরপ্রান্ত থেকে সারমেয়র কান্নার আওয়াজ পাই। এরপরই আমি এসে দেখি ফোনের রিসিভাররা ল্যান্ড লাইনে রাখা রয়েছে। সম্ভবত ওই সারমেয়টি ফোন তোলার পর আবার রিসিভারে সেটি রেখে দেয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours