মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভোট শেষেও জারি মৃত্যু মিছিল। ভোট পরবর্তী হিংসায় দুষ্কৃতীদের আক্রমণে এবার প্রাণ গেল দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) আরও এক তৃণমূল কর্মীর। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে রক্ত ঝরেছে সারা পশ্চিমবঙ্গে। এই নির্বাচনে অবশ্য সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে শাসক দলেরই। এই আবহে ফের আরও এক শাসক দলের কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠল।
কোথায় খুনের ঘটনা ঘটল (South 24 Parganas)?
দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) রায়দিঘি বিধানসভার কাশীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদপাশা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম বিপ্লব হালদার। জানা গিয়েছে, বিপ্লবের বুথে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হন। এরপরই দুষ্কৃতীরা এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূলের অভিযোগ, দুই দলের সংঘর্ষের আবহে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বিপ্লবকে কুপিয়ে খুন করে। যদিও খুনের ঘটনা অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষেই খুন হন এই তৃণমূল কর্মী। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। বিপ্লবের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে খুন হয়েছিল বাসন্তীতেও
এর আগে ভোটগ্রহণ চলাকালীন দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) বাসন্তীতে প্রাণ হারিয়েছিলেন এক ভোটার। মৃত ব্যক্তির নাম আনিসুর রহমান। দাবি করা হয়, তিনি তৃণমূল প্রার্থীর আত্মীয়। বোমার আঘাতে প্রাণ হারান তিনি। উল্লেখ্য, যুব ও তৃণমূলের মূল সংগঠনের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এর আগেও বাসন্তীর মাটি রক্তে লাল হয়েছিল। সেখানে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল নিজে। ভোটের দিনও রক্তাক্ত হয় বাসন্তী! যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দেয় ঘাসফুল শিবির। এবার ভোটপর্বের সময়ই বাংলার মোট ৪২ জনের প্রাণ গিয়েছে। ভোটের দিন মারা গিয়েছিলেন ১৬। ভোটের দিনের হিংসায় জখম আরও দুই ব্যক্তি মারা যান পরে। আর এবার ভোট পরবর্তী হিংসার বলি আরও এক তৃণমূল কর্মী। অপর দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমাতেও দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব চলল।
পাথরপ্রতিমায় বাড়িতে ঢুকে হামলা
ভোট শেষেও হিংসা অব্যাহত জেলার বিভিন্ন জায়গায়। পাথরপ্রতিমায় (South 24 Parganas) তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পাথরপ্রতিমার পূর্বশ্রীধর নগর বালিখালপাড়া এলাকায়। স্থানীয় তৃণমূল জানায়, মঙ্গলবার রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অর্ধেন্দু ভূঁইয়া সহ একাধিক তৃণমূল কংগ্রেসের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায় বিজেপির দুষ্কৃতীরা। তারা বাঁশ, রড থেকে শুরু করে একাধিক অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। আর তার ফলেই তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অর্ধেন্দু ভূঁইয়া সহ ৮ থেকে ৯ জন কর্মী গুরুতর আহত হয়। আহত অবস্থায় পাথরপ্রতিমা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকেরা। অন্যদিকে এই ঘটনার দায় অস্বীকার করা হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। বিজেপির অভিযোগ, যুব তৃণমূল এবং মাদার তৃণমূলের সংঘর্ষের কারণেই এই হিংসার ঘটনা ঘটে। তবে এই ঘটনায় পাথরপ্রতিমা থানা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গোটা বিষয়ের তদন্ত শুরু করেছে পাথরপ্রতিমা থানার পুলিশ।
বিজেপির বক্তব্য
মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি প্রদ্যুৎ কুমার বৈদ্য বলেন, তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ফলেই রায়দিঘিতে মৃত্যু হয়েছে। বিজেপি বুথে জিতলেও আমরা কোনও হিংসার আশ্রয়কে বিশ্বাস করি না। তিনি আরও বলেন, পাথরপ্রতিমাতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours