মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘার কাছে জুনপুটে (Junput) ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ হতে চলেছে। ওড়িশার চাঁদিপুর বা অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ হলেও এ রাজ্যে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। পূর্ব ফেব্রুয়ারির শেষে বা মার্চের গোড়াতেই এখান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করার কথা কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিআরডিও-র (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন)। তবে গোড়ায় কিছুই জানতেন না বাসিন্দারা। কয়েক দিন ধরে লঞ্চিং প্যাড তৈরি হচ্ছে, বসেছে বোর্ড।
এলাকাবাসীদের সরানোর উদ্যোগ (Junput)
কাঁথি থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে জুনপুট (Junput)। জুনপুটে তৈরি হয়েছে নতুন বোল্ডারের রাস্তা। টিনের ছাউনি দেওয়া লঞ্চিং প্যাডের পাশে বসেছে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থার বোর্ড। তার এক দিকে চলছে উপকূলরক্ষী বাহিনীর রেডার স্টেশন তৈরির কাজ। এখান থেকে দু'কিলোমিটারের মধ্যেই হরিপুর। ২০০৬ সালে সেখানে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির ঘোষণা হয়েছিল। স্থানীয় মৎস্যজীবীরা তখন কমিটি গড়ে আন্দোলনে নামেন। পাশে ছিল তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল। শেষে পিছু হটেছিল তদানীন্তন বাম সরকার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য কাঁথি-১ ব্লকের বিরামপুট এবং দেশপ্রাণ ব্লকের চেচড়াপুট গ্রামে এর মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে এই নিয়ে। সংশ্লিষ্ট দুই ব্লক প্রশাসন এবং ভূমি দফতর সমীক্ষা করে রিপোর্ট কাঁথির মহকুমাশাসকের দফতরে জমা দিয়েছে। ওই দুই গ্রাম থেকে ১৫৫০ জন পূর্ণবয়স্ক এবং ৩৭০ জন নাবালককে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। গবাদি পশুর ক্ষতির আশঙ্কায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
মৎস্যজীবীরা কী বললেন?
পূর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস শ্যামলের মতে, "জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হতে বসেছে। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ হলে সামুদ্রিক মাছের ঘাটতি হবেই।" জুনপুটে (Junput) মৎস্যজীবী প্রধান এলাকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এতে দূষণ বাড়বে। বিপন্ন হবে জীবন-জীবিকা।
জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের কী বক্তব্য?
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক তনবীর আফজল মানছেন, "ফেব্রুয়ারি শেষে বা মার্চের গোড়ায় ডিআরডিও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করবে। একটা রকেট ছাড়া হবে বালেশ্বর থেকে। আর একটা জুনপুট থেকে। কীভাবে মাঝ-আকাশে একটা ক্ষেপণাস্ত্র কী করে আরেকটাকে ধ্বংস করে, সেই সংক্রান্ত গবেষণার জন্য জেলার এই জায়গাটি বেছেছে ডিআরডিও। এ জন্য রাজ্য সরকার জমি দিয়েছে। সব রকম সহযোগিতা করা হয়েছে।" মহকুমাশাসক শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, "ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সময় সাময়িকভাবে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সব নিয়ন্ত্রণ করবে ডিআরডিও। কিছু মানুষকে কয়েক ঘণ্টার জন্য সরে যেতে হবে। ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও রয়েছে।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours