মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানে ফের অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীর হাতে খুন হল আরেক জঙ্গি-নেতা (Terrorist Killed in Pakistan)। পাক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গত শুক্রবার পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানের মিরালি এলাকায় অজ্ঞাত পরিচয় বন্দুকবাজের গুলিতে খুন হয়েছে লস্কর-ই-জব্বরের প্রতিষ্ঠাতা দাউদ মালিক (Dawood Malik)। দাউদের আরেকটি পরিচয় রয়েছে। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিল এই দাউদ। এই নিয়ে পাকিস্তানে সাম্প্রতিককালে দুই শীর্ষ জঙ্গি-নেতার ঘনিষ্ঠ সহযোগী খুন হল। এর আগে, অক্টোবরের গোড়ায় করাচিতে ব্যস্ত রাস্তায় মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সইদের অন্যতম সহযোগী মুফতি কায়সর ফারুককে খুন করে পালায় অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীরা।
গুলি করেই চম্পট মুখোশধারী আততায়ীর
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, হত্যাকারী মুখোশ পরে এসেছিল। ফলে তাকে চিহ্নিত করা যায়নি। দিনের বেলা সকলের সামনেই মাসুদ ঘনিষ্ঠ দাউদকে (Dawood Malik) গুলিতে ঝাঁঝরা করে চম্পট দেয় ওই আততায়ী। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি। জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানের প্রত্যন্ত ওয়াজিরিস্তানের উত্তরাংশে লোকচক্ষুর অন্তরালে কার্যত গর্তের মধ্যে লুকিয়ে থাকত কট্টর এই জঙ্গি নেতা। কিন্তু, চিকিৎসার জন্য সেদিন একটি ক্লিনিকে গিয়েছিল দাউদ মালিক। সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে একাধিক ভারত বিরোধী কার্যকলাপ এবং সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত ছিল দাউদ মালিক।
১৯ মাসে পাকিস্তানে খুন ১৭ ভারত-বিরোধী জঙ্গি-নেতা
সাম্প্রতিককালে, পাকিস্তানে পর পর অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীর হামলায় খতম হয়ে চলেছে একের পর এক জঙ্গি-নেতা (Terrorist Killed in Pakistan)। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১৯ মাসে পাকিস্তানের মাটিতে ১৭ জন ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসবাদী নেতা খুন হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে, গত ১১ অক্টোবর, শিয়ালকোটে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই-মহম্মদের শীর্ষ নেতা তথা পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হওয়া জঙ্গি হামলার মাস্টারমাইন্ড শাহিদ লতিফকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে খতম করে দুই অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী। তার আগে, অক্টোবরেই মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সইদের অন্যতম সহযোগী মুফতি কায়সর ফারুককে খুন করা হয়েছিল পাকিস্তানে। করাচিতে এক অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী ওই জঙ্গিকে গুলি করে হত্যা করে।
গত মাসে, জঙ্গি মহম্মদ রিয়াজকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদ থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে রাওয়ালকোটের একটি মসজিদে খুন করে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীরা। আবু কাসিম কাশ্মীরি নামেও পরিচিত ছিল মহম্মদ রিয়াজ। ১২ সেপ্টেম্বর করাচিতে খুন হয় মৌলানা জিয়াউর রহমান। লস্কর-ই-তৈবার এই জঙ্গির বিরুদ্ধে ভারতে একাধিক হামলার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। এর আগে পাক মাটিতে খুন হয় মিস্ত্রি জহুর ইব্রাহিম। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তার মাথায় দু'বার গুলি করে আততায়ী। ভারতের আইসি-৮১৪ বিমান হাইজ্যাকিংয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল কুখ্যাত এই জঙ্গিনেতা।
তার আগে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে আইএসআই সদর দফতরের সামনেই অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীর গুলিতে হিজবুল মুজাহিদিনের কমান্ডার বশির পীর নিহত হয় (Terrorist Killed in Pakistan)। গত বছর তাকে সন্ত্রাসবিরোধী ঘোষণা করেছিল ভারত। এর ঠিক ২ দিন পর, ২২ ফেব্রুয়ারি ইজাজ আহমেদ আহঙ্গার নামে এক জঙ্গিকে আফগানিস্তানের কাবুলে খতম করা হয়। ইজাজ ভারতে ইসলামিক স্টেট-এর শাখা চালু করতে চাইছিল। এর কিছুদিন পর আল বদর জঙ্গিগোষ্ঠীর কমান্ডার সৈয়দ খালিদ রাজাকে পাকিস্তানের করাচিতে তার বাড়ির বাইরে গুলি করে হত্যা করে এক অজ্ঞাপরিচয় আততায়ী। পরের মাসে ভারতের ওয়ান্টেডের তালিকায় থাকা সৈয়দ নূর শালোবারকে খুন করা হয়। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকায় অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা তাকে গুলি করে খুন করে। এই তালিকাতেই নবতম সংযোজন জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-জব্বরের প্রতিষ্ঠাতা দাউদ মালিক (Dawood Malik)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours