মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে ৪৮ হাজার ৬০০ ধর্ষণ ও পকসো মামলা ঝুলে রয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রের অনুমোদন থাকলেও ১১টি ফাস্ট ট্র্যাক আদালত গঠন নিয়ে এখনও পর্যন্ত উদ্যোগ নেয়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সম্প্রতি চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী। আরজি করের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষণ ও মহিলাদের উপর নির্যাতন নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই চিঠির জবাব দেয় কেন্দ্র। সেই চিঠিতে অন্নপূর্ণা জানালেন, ধর্ষণ ও শিশুদের উপর নির্যাতনের মামলার দ্রুত শুনানির জন্য পশ্চিমবঙ্গকে ১২৩টি ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তার মধ্যে বেশিরভাগের কাজ শুরু হয়নি। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী আরও বলেন, মহিলা ও শিশুদের সমস্যা দূরীকরণে কেন্দ্র একটি ন্যাশনাল হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গ সরকার তা চালু করেনি।
কেন্দ্রের চিঠিতে কী বলা হল
আরজি কর-কাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে গত ২২ অগাস্ট চিঠি লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্ষকদের শাস্তি দিতে কঠোর কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়নের আবেদন জানান। এইসব ঘটনার দ্রুত বিচারের জন্য ফাস্ট ট্র্যাক আদালত গঠনের কথাও বলেন তিনি। তাঁর চিঠির জবাবে কেন্দ্রীয় নারী এবং শিশু কল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী চিঠি লিখে জানান, ১ জুলাই থেকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা লাগু হয়েছে। মহিলাদের উপর অত্যাচার বন্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। ফাস্ট ট্র্যাক আদালত গঠন নিয়ে অন্নপূর্ণা দেবী লিখেছেন, এই ধরনের আদালত গঠনের জন্য ২০১৯ সালের অক্টোবরে কেন্দ্র একটি প্রকল্প শুরু করে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখেছেন, “চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের ৩০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৭৫২টি ফাস্ট ট্র্যাক আদালত কাজ করছে। তার মধ্যে ৪০৯টি পকসো আদালত। প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে এইসব আদালতে ২ লক্ষ ৫৩ হাজার মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে পশ্চিমবঙ্গকে ১২৩টি ফাস্ট ট্র্যাক আদালত গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ২০টি শুধু পকসো আদালত। কিন্তু, ২০২৩ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই আদালতগুলির কাজ শুরু হয়নি।”
আরও পড়ুন: নিহত তরুণীর দেহের কাছে ৩ সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ! ভাইরাল ভিডিও তুলল একাধিক প্রশ্ন
বঞ্চিত হচ্ছেন রাজ্যের মহিলারা
কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। এই আবহে কেন্দ্রের চিঠিতে বেশ অস্বস্তিতে রাজ্য। কেন্দ্রের চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, তারা বার বার অনুরোধ করে মনে করালেও রাজ্যে মহিলা (১৮১) এবং শিশু (১০৯৮)-দের সাহায্যে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়নি। চালু করা হয়নি ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স সাপোর্ট সিস্টেম’ও। এর ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন রাজ্যের মহিলা এবং শিশুরা। চিঠির শেষে অন্নপূর্ণা আশাপ্রকাশ করেছেন, রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের নির্যাতনের পথ বন্ধ করে সুরক্ষা দেওয়া হোক। লিঙ্গবৈষম্য দূর করার অনুরোধও করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours