Mamata Banerjee: বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে ভয়! তাই কি মাইক বন্ধের ‘নাটক’ মমতার?

NITI Aayog: নীতি আয়োগের বৈঠক মাঝপথে ছাড়লেন মমতা! নেপথ্যে কোন কারণ?
NITI-AAYOG-MEET-PM-MODI-MAMATA
NITI-AAYOG-MEET-PM-MODI-MAMATA

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে শনিবার বসেছে নীতি আয়োগের (NITI Aayog) নবম গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠক। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রীরা। রাজ্যের প্রতিনিধিস্বরূপ ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কিন্তু, বৈঠকের মাঝপথে তিনি ওয়াক-আউট করেন। বেরিয়ে এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তিনি দাবি করেন, তাঁকে নাকি বলতে দেওয়া হয়নি। তাঁর বলার সময় নাকি মাইক বন্ধ করা ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি কতটা যুক্তিযোগ্য বা তাঁর এই দাবির গ্রহণযোগ্যতা কতটা, তা জানার চেষ্টা করেছিল মাধ্যম। সেখান থেকে যে তথ্য উঠে এল, তা এক কথায় চমকপ্রদ।

মাইকের নিয়ন্ত্রণ বক্তার হাতেই...

কেন্দ্র এবং রাজ্য রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যা জানা গেল, তা হল— যে হলে বা ঘরে এধরনের বৈঠক হয়, সেখানকার মাইকগুলি ‘সেল্ফ অপারেটড’। বক্তার মুখের কাছেই মাইক স্ট্যান্ড। সেই স্ট্যান্ডেই থাকে অন-অফ করার সুইচ। অর্থাৎ, মাইকের নিয়ন্ত্রণ বক্তার হাতেই থাকে। এই একই সিস্টেম সংসদ সহ যে কোনও কনফারেন্স রুমে এখন থাকে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে যে তত্ত্ব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) খাড়া করেছেন, তা অসত্য এবং অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়। তাঁদের আরও দাবি, এসব করে তিনি মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন মাত্র।

বাংলাদেশ-কেন্দ্রিক প্রশ্ন এড়ানোর কৌশল?

এখন প্রশ্ন হল, হঠাৎ করে কেন এমনটা করতে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? কী উদ্দেশ্য নিয়ে? এখানেই উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য ও তত্ত্ব। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মমতার করা মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া আসে ঢাকা থেকে। প্রতিবেশি রাষ্ট্রের ক্ষোভ প্রশমনে বাধ্য হয়ে ময়দানে নামতে হয় দিল্লিকে। এই নিয়ে বৃহস্পতিবার মমতাকে (Mamata Banerjee) কড়া কথা শোনায় কেন্দ্র। বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে, বিদেশনীতি নিয়ে কথা বলা রাজ্যের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। জানা গিয়েছে, গোটা বিষয় নিয়ে মমতাকে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করতে এদিন উদ্যোগ নিচ্ছিলেন বৈঠকের বাইরে উপস্থিত সাংবাদিকরা। মুখ্যমন্ত্রী তা আঁচ করে নেন আগেভাগেই। সে সব এড়াতেই অত্যন্ত সচেতনভাবে এমন একটা ইস্যু (পড়তে হবে নাটক) তৈরি করলেন, যা দিয়ে বাংলাদেশ-কেন্দ্রিক প্রশ্ন পিছনের সারিতে চলে গেল। 

আরও পড়ুন: "নেতাদের থাকতে হবে", জেল বাজেট বাড়ানোর দাবি আপ নেতার, হাসির রোল সংসদে

প্রচারের আলো টানার চেষ্টা?

এছাড়া, আরও একটা কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তাদের মতে, লোকসভা ভোটের অব্যবহিত পরে ফের একবার বিরোধী শিবিরে ‘মধ্যমণি’ হয়ে উঠেছেন রাহুল গান্ধী। বিভিন্ন ইস্যুতে বিরোধী ‘ইন্ডি’ ব্লকের সর্বগ্রহণযোগ্য মুখ হয়ে উঠছেন রাহুল। ফলত, ‘ইন্ডি’ জোটে অনেকাটই ম্লান মমতার (Mamata Banerjee) দখল। অন্য সময়ে মমতা দিল্লি যাত্রা করলে, যা আকর্ষণ হত কেন্দ্রীয় (পড়তে হবে বিরোধী) রাজনীতিতে, বর্তমানে তা অনেকটাই ফিকে। রাহুলকে কেন্দ্র করেই কেন্দ্রে বিজেপি-বিরোধী রাজনীতি গড়ে উঠছে। তা বুঝতে পেরেই, নিজের দিকে প্রচারের আলোর অভিমুখ ঘোরানোর উদ্দেশ্যেই মমতা এই মাইক-তত্ত্ব খাড়া করেছেন বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের।

কনস্ট্রাকটিভ পলিটিক্সে স্বাচ্ছন্দ্য নন...

আরও একটা চমকপ্রদ তত্ত্ব উঠে এসেছে। যেটাও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বটে। অনেকের মতে, মমতা বরাবরই বিরোধী-রাজনীতি করে এসেছেন। তিনি তাতেই অভ্যস্ত, সাবলীল। রাজনৈতিক মহলের মতে, মমতা কোনওদিনই ডেভলেপমেন্টাল বা কনস্ট্রাকটিভ পলিটিক্স করেননি। ২০১১ সাল পর্যন্ত, উনি ছিলেন বাম-বিরোধী। এখন মোদি-বিরোধী। এমনকী, রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পরও, তাঁর একাধিক কর্মকাণ্ড দেখেও বোঝা দায় ছিল যে তিনি শাসক না বিরোধী। সেখানে, নীতি আয়োগ (NITI Aayog) হল আদ্যান্ত উন্নয়নমূলক বিষয়বস্তু-কেন্দ্রিক আলোচনার মঞ্চ। এখানে রাজ্য-কেন্দ্র সমন্বয়ে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা হয়। মমতা (Mamata Banerjee) যে এধরনের বৈঠকে সাচ্ছন্দ্য নন, তা সহজেই অনুমেয়। ফলস্বরূপ, এদিনের এই ‘নাটক’।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles