Ram Mandir: অযোধ্যায় প্রতিদিন চলছে সরযূ বন্দনা, পঞ্চপ্রদীপ, বৈদিক শ্লোকে এ যেন সত্যিই দেবভূমি

সেজে উঠছে অযোধ্যা, মন্দির উদ্বোধনের আগে ঘুরে দেখলেন আমাদের প্রতিনিধি শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, আজ পঞ্চম কিস্তি....
shajahan(1)
shajahan(1)

রামনগরী অযোধ্যা-পাঁচ

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, অযোধ্যা থেকে ফিরে: বারাণসীর গঙ্গা-আরতির প্রসিদ্ধি দেশজুড়ে রয়েছে। দশাশ্বমেধ ঘাটে গঙ্গা-আরতির সময় তিল ধারণের জায়গাটুকুও থাকে না। কপালে তিলক এঁকে ভক্তরা সমবেত হন গঙ্গার ঘাটে। রাম মন্দির উদ্বোধনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হতেই অযোধ্যার সরযূ নদীর আরতিও বিপুল জনপ্রিয় হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ নাগাদ অযোধ্যায় (Ram Mandir) পৌঁছাতেই তা বোঝা গেল। সরযূ অবশ্য অযোধ্যাবাসীর কাছে শুধু নদী নয়, সরযূকে মাতা সম্বোধন করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, অযোধ্যায় কোনও নদী না থাকার কারণে বশিষ্ঠর প্রার্থনায় ব্রহ্মা সরযূ নদীকে সৃষ্টি করেন। সরযূর ধারে যখন পৌঁছালাম সূর্য তখন সবেমাত্র অস্তমিত হয়েছে। ভক্ত ও সাধুসন্তদের ভিড়ে সরযূর ধারে তখন পা রাখারও জায়গা নেই। প্রশাসনের ব্যস্ততাও তুঙ্গে। কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে ভাসমান ঘাট। তবে সেখানে শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরই যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। সরযূ নদীর ওই ঘাটের ওপরেই সম্পন্ন হয় আরতি। পঞ্চপ্রদীপের আলোর প্রতিফলন সরযূর (Ram Mandir) জলে। সঙ্গে বৈদিক শ্লোক উচ্চারণ। সন্ধ্যার আলো-আঁধারি পরিবেশে মনে হচ্ছিল, এ যেন সত্যিই দেবভূমি। রাম মন্দিরের পাশাপাশি সরযূ নদীর আরতিও যে ভক্তদের গুরুত্বপূর্ণ তীর্থকেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে, তা বোঝাই যাচ্ছে।

তরুণ-তরুণীদের ঘোরার জায়গা সরযূর পাড়

স্মার্ট ফোন হাতে তরুণ-তরুণীদের সন্ধ্যার আড্ডারস্থলও হয়ে উঠেছে সরযূর ধার। যুব প্রজন্ম এখন কপালে দীর্ঘ হলুদ টিকা লাগিয়ে সামিল হচ্ছে সরযূর বন্দনায়। ভারতের প্রাচীন শাশ্বত সংস্কৃতিতেই যে আস্থা রয়েছে তরুণ প্রজন্মের তা বোঝা যায় সরযূর ধারে। হোটেল ব্যবসায়ী ধর্মেন্দ্র মিশ্র তাই কথায় কথায় জানালেন, ‘‘গোয়া নয়, মানুষজন এখন অযোধ্যাতেই আসছেন ঘুরতে।’’ সরযূ নদীর আরতির পরে দীর্ঘক্ষণ আমাদের সঙ্গে আলাপচারিতা করলেন আরতির মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত সন্ত শশীকান্ত দাস। স্থানীয় একটি আশ্রমের মহন্তের দায়িত্বও রয়েছে তাঁর ওপরে। তিনিই জানালেন, অযোধ্যা বদলে যাচ্ছে। আমাদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়লেন, ‘‘আগে আপনারা অযোধ্যায় এসেছেন কখনও?’’ আমরা তিনজন ছিলাম। প্রত্যেকেই সমবেতভাবে উত্তর দিলাম 'না'।

কী বলছেন সরযূ নদীর আরতি কমিটির প্রধান?

শশীকান্ত দাস বললেন, ‘‘আগে ঝামেলা অশান্তির ভয়ে কেউই সেভাবে অযোধ্যা আসতে চাইতেন না। অপপ্রচারও চলত, অযোধ্যা (Ram Mandir) এলেই অশান্তি হতে পারে। রামনগরী তাই হয়ে উঠেছিল উদাসী। কিন্তু এখন আপনাদের মতো লাখো মানুষ আসছেন অযোধ্যায়। মন্দির উদ্বোধনের পরে এই সংখ্যা কততে গিয়ে ঠেকবে তা বলা যাচ্ছে না। সামগ্রিকভাবে বদলে গিয়েছে অযোধ্যার চিত্র। ’’শশীকান্ত দাসের কথায় ঝরে পড়ল নরেন্দ্র মোদি ও যোগী আদিত্যনাথের ভূয়সী প্রশংসাও। তাঁর মতে, ‘‘অযোধ্যাকে বদলে দেওয়ার কারিগর নরেন্দ্র মোদি। তিনি ছিলেন বলেই রাম মন্দির (Ram Mandir) তৈরি হল অযোধ্যায়। বদলে গেল অযোধ্যার চিত্র। তার সঙ্গে নগরীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশ করছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও।’’ সরযূর ঠিক পাশেই বিশালাকার পার্ক। সেখানে প্রত্যহ সন্ধ্যায় আরতির পরে লেজার শো-এর মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে সম্পূর্ণ রামায়ণ। রাম মন্দির থেকে সরযূ যাওয়ার সড়ক রামপথ নামে পরিচিত। মন্দির-সড়ক-নদী সবই যেন রামচন্দ্রময় হয়ে উঠেছে অযোধ্যায়। শুধু তীর্থকেন্দ্র নয়, পর্যটনস্থল হিসেবেও ঘুরে আসা যেতেই পারে অযোধ্যা।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles