মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাড়ার ছেলেরাই শাড়ি আর কপালে টিপ পরে ঢাক-ঢোল সহকারে বাজনা বাজিয়ে যান জল ভরতে। মালোপাড়া বারোয়ারির জগদ্ধাত্রী পুজোয় এই বিশেষ নিয়ম চলে আসছে বহু যুগ ধরে। পুজোর আগের দিন মাঝ রাতে মেয়েরাই পাড়ার ছেলেদের পরিয়ে দেন শাড়ি। এরপর ঢাকের বাজনা সহযোগে সেই শাড়ি পরিহিত ছেলেরাই মা জলেশ্বরীর পুজোর জন্য যান জল ভরতে। জল ভরার সময় রাস্তায় তিন দেবতার মন্দিরে এসে তাঁরা আমন্ত্রণ জানিয়ে যান এবং সেই আমন্ত্রণের মধ্যে দিয়েই করা হয় জগদ্ধাত্রী (মা জলেশ্বরী) পুজোর সূচনা। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে যাবতীয় নিয়ম মেনে নিষ্ঠার সঙ্গে হয়ে আসছে মা জলেশ্বরীর পুজো (Krishnanagar)।
বিশেষ আকর্ষণ ধুনো পোড়ানো (Krishnanagar)
রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজবাড়ির পুজোর পর কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar) সব থেকে পুরনো পুজো হল এই মালোপাড়া বারোয়ারির মা জলেশ্বরীর পুজো। এই পুজোর বিশেষত্ব অনেক। রাজার থেকে অনুদান পেয়ে শুরু হয় এই পুজো এবং এখনও অনুদান আসে। মা জলেশ্বরী মালোপাড়ার দেবী। এখানে একটা বিশেষ আকর্ষণ হল, ধুনো পোড়ানো। একজন মানুষের মাথায় ও দুই হাতে ধুনো পোড়ানো হয়। লেলিহান শিখা ছুঁয়ে যায় মন্দিরের ছাদ। মালোপাড়ার মা জলেশ্বরীর বিসর্জন কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্যশালী সাঙ-এর দ্বারা হয় না। অর্থাৎ, কাঁধে হয় না, গাড়িতে হয় এবং একমাত্র ওনার সামনে এখনও জ্বলে কার্বাইট গ্যাসের বাতি।
ভক্তদের মনে পাকাপাকি জায়গা (Krishnanagar)
উল্লেখ্য, বঙ্গের তখতে তখন নবাব আলিবর্দি খাঁ। তাঁর রাজত্বকালে নদীয়ার রাজার কাছ থেকে ১২ লক্ষ টাকা নজরানা দাবি করা হয়। কৃষ্ণচন্দ্র রায় তা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয় মুর্শিদাবাদে। ছাড়া পেয়ে রাজা যখন নদীপথে কৃষ্ণনগরে (Krishnanagar) ফিরছেন, শুনতে পেলেন মা দুর্গার বিসর্জনের বাজনা। সেই বছর দুর্গাপুজো করতে না পারায় অত্যন্ত দুঃখ পান তিনি এবং তার পরেই দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুরু করেন জগদ্ধাত্রী পুজো। এই গল্প বহু প্রচলিত। কিন্তু তার মাঝে পুরনো পুজো হিসেবে অনেকের মনেই পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছে মা জলেশ্বরীর পুজো। কারণ, রাজবাড়ির প্রতিমা বিসর্জন করে আসছেন এই মালোপাড়ার লোকজন। তাই মহারাজা বিশেষ অনুদান দিয়ে এখানে পুজোটি চালু করেছিলেন। অনেকে আবার বলেন, মহারাজ নয়, আসলে এটি রানির পুজো। ফলে রাজ পরিবারের সঙ্গে এই পুজোর একটা যোগসূত্র রয়েইছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours