মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চৈত্র শেষে রেশ এখনও কাটেনি। এই আবহেই চলে এল নতুন (Bengali New Year) একটি বছর। গবেষক মহলের একাংশের দাবি, এইদিনেই হয়েছিল শশাঙ্কের রাজ্যাভিষেক। বাংলার ব্যবসায়ীরা নববর্ষের (Bengali New Year) প্রথম দিনটাকে হালখাতা হিসেবেও পালন করে থাকেন। পুজো হয় লক্ষ্মী-গণেশের, পাশাপাশি ক্রেতাদের মিষ্টিমুখও করানো হয়। বিতরণ করা হয় নতুন বাংলা ক্যালেণ্ডার। তাই বাংলা নববর্ষের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে আছে হালখাতা। টেনিদার হালখাতার খাওয়াদাওয়া, আজও নিশ্চয়ই মনে পড়ে আমাদের। বাঙালির ঐতিহ্য, ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এই হালখাতা।
হালখাতা মানে কী
বিশেষজ্ঞদের মতে, হাল মানে নতুন, হালখাতা অর্থাত্ নতুন খাতা। পুরনো বছরের সব হিসেব মিটিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই শুরু হয় নতুন খাতায় হিসেব-নিকেশ করা। জানা যায়, চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে প্রজারা খাজনা পরিশোধ করতেন এবং বৈশাখ মাসের প্রথম দিনে প্রজাদের মিষ্টিমুখ করাতেন জমিদাররা।
নতুন যে খাতায় ব্যবসার হিসেব রাখা হবে, সেই খাতাটি কোনও মন্দিরে নিয়ে গিয়ে পুজো করিয়ে আনার প্রথা আছে। খাতার প্রথম পাতায় সিঁদুর দিয়ে স্বস্তিক চিহ্ব এঁকে দেন পুরোহিতরা। পশ্চিমবঙ্গের অনেক প্রসিদ্ধ মন্দিরে এদিন চোখে পড়ার মতো ভিড় দেখা যায়। কালীঘাট মন্দিরে উপচে পড়ে ব্যবসায়ীদের ভিড়। হিন্দুধর্মে স্বস্তিক চিহ্ন বিশেষ মঙ্গল বার্তা বহন করে। তাই যে কোনও পুজো বা শুভ অনুষ্ঠানে সিঁদুর দিয়ে স্বস্তিক এঁকে দেওয়া হয়।
বাড়িতে বা ব্যবসার স্থানে এদিন আঁকা হয় মঙ্গলচিহ্ন
হালখাতা খোলার সময় স্বস্তিক চিহ্ন আঁকেন অনেকে। তবে বাঙালিদের কাছে মঙ্গল চিহ্ন আরও গুরুত্বপূর্ণ। পুজো, শুভ অনুষ্ঠানের এই মঙ্গল চিহ্ন আঁকা হয়। একে আবার বাঙালির শাশ্বত প্রতীক পুত্তলিকাও বলা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে এই শুভ চিহ্ন নতুন নয়, প্রায় সিন্ধু সভ্যতার বিভিন্ন নিদর্শনে দেখা গিয়েছে। কোনও পুতুল বা মানুষের নয়, এটি দেবী লজ্জা গৌরীর মূর্তির আদলে নির্মিত।
তিনি পুরাণ মতে মাতৃকাদেবী। অনেক বিশিষ্টদের মতে, এটি পরমেশ্বরের পালনকর্তা রূপের স্বরূপ। ভগবান বিষ্ণুর চিহ্ন হিসেবে দেখা হয়। মঙ্গল ঘটটিকে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড ও মানব দেহের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। পঞ্চদেবতা বা পরমেশ্বরের পাঁচ রূপকেই এখানে বর্ণিত করা হয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours