মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রাইভেট গাড়ির বাড়বড়ন্তে নাজেহাল জনজীবন। চিন্তিত সরকারও। যানজট থেকে পরিবেশ দূষণ এসবেতেই বড় ভূমিকা পালন করে বিপুল সংখ্যক প্রাইভেট গাড়িগুলি (Private Car)। এই পরিস্থিতিতে দূষণ ও জানযট রোধে সকলকে নিজ নিজ গাড়ি না বের করে শেয়ার গাড়ি ব্যবহার করার পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞরা।
সবচেয়ে ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয় "শেয়ার্ড" পরিবহন (Shared Vehicle) মাধ্যম হল স্কুল বাস (School Bus)। কলকাতার বুকে এই স্কুল বাসগুলির সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে গত পাঁচ বছর ধরে একটি সমীক্ষা চালাচ্ছিল আইআইটি খড়গপুর (IIT Kharagpur)। সম্প্রতি তার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তারা।
স্কুল বাসগুলি ঠিক কতটা সুবিধাজনক, পরিবেশের ওপর তার কী প্রভাব, সময় কতটা বাঁচে, নিরাপত্তা, কর্মচারীদের ব্যবহার, সুরক্ষা, অভিভাবকদের কাছে জনপ্রিয়তা এসব কিছু সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে সেই রিপোর্টে।
সব মিলিয়ে স্কুল বাস ব্যবহারের পক্ষেই সওয়াল করেছে ওই প্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কলকাতার মতো জনবহুল এলাকায় স্কুল বাস অনেকাংশেই উপযোগী বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ কমিটি।
অভিভাবকরা কী চাইছেন সেটা বুঝতে সমীক্ষা (Survey) চালানো হয়। কর্মচারী, স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলে বিশেষজ্ঞদের কমিটি। ১২ হাজার অভিভাবকের সঙ্গে সমীক্ষার বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়। তাঁদের মধ্যে ৭ হাজার প্রশ্নের উত্তর দেন।
দুটি পর্যায়ে করা হয় সমীক্ষাটি। প্রথম পর্যায়ে জানতে চাওয়া হয় কী কী পরিবর্তন আনতে হবে যানজট বা পরিবেশ সংক্রান্ত অসুবিধে এড়াতে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে জানতে চাওয়া হয় তাদের পছন্দের পরিবহন মাধ্যম কী এবং তাতে কী পরিবর্তন আনতে হবে?
সমীক্ষায় বলা হচ্ছে, স্কুল বাসের ব্যবহারে ৫-৭% প্রাইভেট কারের ব্যবহার কমবে। প্রাইভেট কারের মালিকাধীন অভিভাবকদেরও খরচ ২-৩% কমবে। এবং যানজট থেকেও অনেকাংশেই মুক্তি পাবে এই শহর। এক্ষেত্রে অভিভাবক, স্কুল কর্তৃপক্ষ, বাসের ড্রাইভার, কন্ডাক্টর এবং বাস মালিকরা সবাই নির্দিষ্ট নিয়মাবলী বা এসওপি অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। যা সব স্কুলের বাসে ক্ষেত্রেই এক থাকবে।
সব চালক এবং কন্ডাক্টরদের যাবতীয় তথ্য থাকা উচিৎ পুলিশের কাছে, এমনটাই মনে করছেন অভিভাবকরা। প্রতিটি চালকের অন্তত ৫ বছর গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা থাকা উচিৎ। সরকারের তরফ থেকে গাড়ির গতির বেঁধে দিতে হবে। প্রতিটি গাড়ির তথ্য রাখবে পুলিশ। অভিভাবকরাও চাইলে চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স খতিয়ে দেখতে পারেন বা তার কপিও রাখতে পারেন।
এছাড়া, ওই রিপোর্টে আরও সুপারিশ করা হয়েছে-- অভিভাবকরা গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, চাকার পরিস্থিতিসহ যাবতীয় তথ্য নিজেদের কাছে রাখতে পারেন। সিট বেল্ট না থাকলে সেই বাসে সন্তানকে ছাড়তে আপত্তিও জানাতে পারেন অভিভাবক। মদ্যপান বা গুটখা সেবন করে ড্রাইভার গাড়ি চালাবেন না। পুলিশের সব নির্দেশ মানতে হবে। বাচ্চাদের একা ছাড়া যাবে না। নিয়মাবলীতে এই বিষয়গুলির সুপারিশ করা হয়েছে আইআইটি খড়গপুরের সমীক্ষায়।
+ There are no comments
Add yours