মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মধ্যাহ্ন বিরতির সময় ভারতের অতি বড় সমর্থকও ভাবতে পারেননি, ভারত এই ম্যাচ জিতে যাবে। যেখানে এখন টি২০ ম্যাচে ২০০-র বেশি রান ওঠে, সেখানে ৫০ ওভারে ২৩০ রানের টার্গেট যে সহজেই পার করা সম্ভব, তা বলা বাহুল্য। কিন্তু, শামি-বুমরা সমৃদ্ধ ভারতীয় দলের বোলিং লাইন আপ দেখিয়ে দিল, এভাবেও ফিরে আসা যায়। এই রানের পুঁজি নিয়েও ম্যাচ জেতা যায়। এদিন লখনউয়ের ভারত রত্ন শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী একানা স্টেডিয়ামে গতবারের চ্যাম্পিয়নদের দুরমুশ করে জিতল ভারত। এই জয়ের ফলে কার্যত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল মেন ইন ব্লু-রা।
এদিন টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় ইংরেজরা। অন্য দিনের মতো, স্বভাবচিত আক্রমণাত্মক ঢঙেই শুরু করেছিলেন অধিনায়ক রোহিত। কিন্তু, চতুর্থ ওভারেই ছন্দপতন ঘটে। প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ক্রিস ওকসের বলে বোল্ড হন শুভমান গিল। এক রান পরই শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান কোহলি। এক পর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। একদিকে তখন দাঁড়িয়ে রোহিত। অন্যদিকে, একের পর এক তাঁর পার্টনার বদল হতে থাকে।
Undefeated India go to the top of the #CWC23 points table with their sixth successive win in the tournament 👊#INDvENG 📝: https://t.co/YdD8G15GrY pic.twitter.com/QlONBibUxd
— ICC Cricket World Cup (@cricketworldcup) October 29, 2023
এদিন ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান করেন রোহিত। ১০১ বলে ৮৭ রান করেন তিনি। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ১০টি চার ও একটি ছক্কায়। এছাড়া, কে এল রাহুল করেন ৩৯ (৫৮ বল) এবং সূর্যকুমার যাদব করেন ৪৯ (৪৭ বল)। ৬ জন ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ২২৯ রান করে ভারত।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান ও জনি বেয়ারস্টো জুটি। এদিনও ছন্দে ছিলেন না মহম্মদ সিরাজ। একদিকে, যখন জসপ্রিত বুমরা চাপ সৃষ্টি করছিলেন, তখন অন্যদিকে, তিনি রান দিচ্ছিলেন। ইংল্যান্ড শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন বুমরাই। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ডেভিড মালানকে ফেরান তিনি। পরের বলেই ফের আঘাত হানেন বুমরা। প্রথম বলেই তাঁর বলে লেগ বিফোর হয়ে ফিরে যান জো রুট।
বুমরা যেখানে শেষ করেন, সেখান থেকেই যেন শুরু করলেন শামি। যেন ব্যাটনটা হস্তান্তর হয়ে যায়। শামির আগুনে বোলিংয়ের কোনও জবাব ছিল না ইংল্যান্ড ব্যাটারদের কাছে। এক সময় শামির বোলিং ফিগার ছিল ৫ ওভার- ২ মেডেন-৫ রান-৩ উইকেট। এই ছোট্ট পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, আজ বাইশ গজে কী তাণ্ডব ঘটিয়েছেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, যখনই ইংল্যান্ড ব্যাটাররা কোনও পার্টনারশিপ তৈরি করার চেষ্টা করেছেন, তখনই বল করতে এসে, তা ভেঙে দিয়েছেন শামি। এদিন শামি ৪ উইকেট নেন। বুমরা নেন তিনটি।
ভারতের পেস আক্রমণের কথা বলার পাশাাপাশি স্পিন আক্রমণের কথা ভুলে গেলে চলবে না। এদিনও দুর্ধর্ষ ফর্মে ছিলেন কুলদীপ যাদব। জস বাটলারকে তিনি যে বলে আউট করেছেন, সেটা এই বিশ্বকাপের সেরা ডেলিভারির তালিকায় থাকতে বাধ্য। এদিনের ম্যাচে ২ উইকেট নেন কুলদীপ। একইভাবে, বরাবরের মতো মিতব্যয়ী ছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা। বুদ্ধিদিপ্ত বোলিং করে ইংল্যান্ড ব্যাটারদের ওপর তিনি এতটাই চাপ সৃষ্টি করেন, যার ফল ক্রিস ওকসের স্টাম্পিং।
ফলস্বরূপ, ২৩০ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে মাত্র ৩৪.৫ ওভারে ১২৯ রানে শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। ১০০ রানের ব্যবধানে জয়ী হয় ভারত। এই জয়ের ফলে, ফের একবার পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ পৌঁছে গেল মেন ইন ব্লু। ৬ ম্যাচ খেলে ভারতের পয়েন্ট এখন ১২। ফলে, সেমিফাইনালে এক পা বাড়িয়ে রাখল রোহিত-বাহিনী। অন্যদিকে, ৬ ম্য়াচে পাঁচটা হেরে বিশ্বকাপে বিদায় ঘণ্টা বাজল গতবারের চ্যাম্পিয়নদের।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours