Howrah Violence: হাওড়ায় ‘ফেল’ দুই পুলিশকর্তার কলকাতায় ‘প্রোমোশন পোস্টিং’!

Howrah: আখেরে বদলি করে কলকাতায় এনে যাকে বলে রীতিমতো 'প্রাইজ পোষ্টিং' দেওয়া হয়েছে...
csudhakar-saumyaroy
csudhakar-saumyaroy

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিজেপি (BJP) সাসপেন্ডেড নেত্রী নূপুর শর্মার (Nupur Sharma) মন্তব্যের জেরে হাওড়ার অগ্নিগর্ভ (Howrah violence) পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় মমতা (Mamata) প্রশাসনের দিকে উঠতে শুরু করেছে অভিযোগের আঙুল। এই পরিস্থিতিতে, শনিবার বিকেলে নবান্নতে (Nabanna) উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে নেওয়া হয় 'গুরুত্বপূর্ণ' সিদ্ধান্ত। রাজ্য প্রশাসনের হেডকোয়ার্টার থেকে জানিয়ে দেওয়া হল যে, হাওড়া শহর (Howrah City) ও হাওড়া গ্রামীণ (Howrah Rural)— এই দুই এলাকার শীর্ষ পুলিশকর্তাকে সরানো হচ্ছে।

প্রথমদিকে হয়ত মনে হয়েছিল, হয়ত প্রশাসন কড়া হাতে বিষয়টিকে দমন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু, ভুল ভাঙে কিছুক্ষণের মধ্যেই। কারণ, দুই এলাকার পুলিশকর্তাকে সরিয়ে যে নতুন পদে বসানো হয়েছে, তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো। সাধারণত, এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রুখতে ব্যর্থ পুলিশকর্তাদের 'পানিশমেন্ট পোস্টিং' দেওয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ, আগের থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ পদে অথবা কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়। কিন্তু, এক্ষেত্রে, ঘটনা ঠিক উল্টো।

হাওড়ায় (Howrah) ব্যর্থ দুই পুলিশ কর্তাকেই আখেরে বদলি করে কলকাতায় এনে যাকে বলে রীতিমতো 'প্রাইজ পোষ্টিং' দেওয়া হয়েছে। যেমন, হাওড়ায় 'ফেল' পুলিশকর্তা তথা হাওড়া (শহর) পুলিশ কমিশনার সি সুধাকরকে (C Sudhakar) আনা হয়েছে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার পদে। যে পদে আসার জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। অন্যদিকে, হাওড়ায় আরেক ব্যর্থ পুলিশকর্তা তথা হাওড়া (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সৌম্য রায়কে (Saumya Roy) আনা হয়েছে কলকাতা পুলিশের সাউথ ওয়েস্টের ডেপুটি কমিশনার পদে আনা হয়েছে।

ব্যর্থতার জন্য তো শাস্তি হয় বলেই শোনা যায়। আইনকানুন সামলাতে না পারলে, পানিশমেন্ট পোস্টিং হয় বলেই এতদিন সকলেই জানেন। কিন্তু, ব্যর্থ হওয়ার জন্য 'পানিশমেন্ট পদোন্নতি' বা 'প্রাইজ পোস্টিং' দেওয়া হল— এমন কাণ্ড একমাত্র মমতা প্রশাসনের পক্ষেই সম্ভব। আর এখান থেকেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। প্রথমত, তাহলে কি পুলিশ কর্তাদের আদৌ কোন দোষ ছিল না? তাঁরা সেটাই করেছেন, যা তাঁদের করতে বলা হয়েছিল? তাই যদি না হবে, তাহলে কেন বদলি করা হল অধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে? 

যেমন ধরা যাক, হাওড়া গ্রামীণ ক্ষেত্রটি। গত তিনদিন ধরে ডোমজুড়, পাঁচলা ও সলপে একাধিক হিংসা ঘটেছে। এসবকটি এলাকা হাওড়া গ্রামীণ এলাকার আওতাধীন। সেখানকার পুলিশ সুপার ছিলেন সৌম্য রায়। যিনি কিনা আবার সোনারপুর দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্রর স্বামী। অতীতে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় লাভলির প্রার্থিপদ ঘোষণার পরেই বিতর্কে জড়ান এই আইপিএস অফিসার। বিরোধীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্ত্রী লাভলি ভোটে প্রার্থী হওয়ায় সৌম্যকে পুলিশের উচ্চপদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।



সাম্প্রতিক অতীতে, হাওড়ার আমতার বাসিন্দা ছাত্রনেতা আনিস খানের (Anees Khan) অস্বাভাবিক মৃত্যুর সময়ই এই আইপিএস অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগ ওঠে। অনেকেই দাবি করেছিলেন, আনিসের মৃত্যুর ঘটনা ‘ধামাচাপা’ দিতে চাইছেন সৌম্য। সেই সময়ও, সৌম্যর বদলির জোরালো দাবি উঠেছিল। কিন্তু, তাঁকে সরানো হয়নি। 


বিরোধীদের মতে, এই বদলি আখেরে স্রেফ একটা 'আইওয়াশ' ছাড়া কিছুই নয়। পুলিশকর্তা বদলের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র তাহলে কি লোক দেখানোর প্রক্রিয়া মাত্র? প্রশাসনের দাবি, এটা নাকি রুটিল বদলি! কাকতালীয়ভাবে, রুটিন বদলিতে এমন দুজনকে সরানো হল, যেখানে এখন গত তিনদিন ধরে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে। বিরোধীদের দাবি, সৌম্যকে ‘আড়ালে রাখতেই’ তাঁকে হাওড়ার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে কলকাতা পুলিশে নিয়ে আসা হল।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles