তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
গরমে নাজেহাল আট থেকে আশি। তাপমাত্রার পারদ বাড়তেই (Heatwave) নানান শারীরিক সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। বিশেষত শিশুদের একাধিক সমস্যা বাড়ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই সময়ে বাড়তি সতর্ক না হলেই বিপদ বাড়বে। কলকাতায় ইতিমধ্যেই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। একই অবস্থা রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলোতেও। বিশেষত বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি। তাপপ্রবাহের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আবহবিদদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, আগামী কয়েকদিন রাজ্যের সর্বত্র গরম বাড়বে। অস্বস্তি থাকবেই। আর এই পরিস্থিতিতেই শিশুদের এক বিশেষ সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে জানাচ্ছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
কী ধরনের জ্বর দেখা দিচ্ছে?
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, গরমে শিশুদের জ্বর হচ্ছে। কিন্তু কোনও ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া ঘটিত কারণে এই জ্বর নয়। একে জ্বর বলতেও নারাজ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, পরিবেশ অনেকটাই বদলে গিয়েছে। তাপমাত্রার পারদ মারাত্মক বাড়ছে। আর এই পরিবর্তনের সঙ্গে শরীর মানিয়ে নিতে পারছে না। বিশেষত পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের শরীর আরও বেশি মানিয়ে নিতে পারছে না। পরিবেশের তাপমাত্রার (Heatwave) সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রা মানিয়ে নিতে না পারলে অনেক সময়েই এই সমস্যা দেখা যায়। তাই বাইরে গরমের জেরে অনেক শিশুর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। থার্মোমিটারে দেখা যাচ্ছে, অনেক সময়েই শরীরের তাপমাত্রা ১০০ থেকে ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, একে Heat exhaustion বলা যেতে পারে। শিশুদের এই সমস্যা বেশি হচ্ছে। কারণ, পাঁচ বছরের কম বয়সি অধিকাংশ শিশুর ঘাম কম হয়। আর তার জেরেই শরীর গরম হয়ে যাচ্ছে।
কীভাবে সন্তানকে সুস্থ রাখবেন? (Heatwave)
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এই গরমে শিশুকে সুস্থ রাখতে জল বেশি পরিমাণে খাওয়ানো জরুরি। গরমে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। মূত্রত্যাগের পরিমাণ কমছে কিনা সেদিকে নজরদারি জরুরি। তাঁদের পরামর্শ, দেড় থেকে দু'গুণ পরিমাণ জল খাওয়া বাড়াতে হবে। তবেই এই সমস্যা মোকাবিলা সম্ভব। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, নিয়মিত ডাবের জল খাওয়া জরুরি। তিন বছরের উর্ধ্বে শিশুদের গরমে নিয়মিত ডাবের জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, ডাবের জলে থাকে একাধিক খনিজ পদার্থ। তাই শরীরে জলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ক্লান্তি দূর করতে ও সুস্থ থাকতে সাহায্য করে ডাবের জল।
তরমুজ জাতীয় ফল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন এই আবহাওয়ায় (Heatwave) রসালো ফল খাওয়া দরকার। তরমুজ, ড্রাগন ফ্রুটের মতো ফল শিশুরা খেলে একদিকে এনার্জির জোগান হবে আরেকদিকে শরীর ঠান্ডা থাকবে। ফলে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
প্রাণীজ প্রোটিনে সতর্কতা
পাশপাশি প্রাণীজ প্রোটিন খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই আবহাওয়া কতটা পরিমাণে প্রাণীজ প্রোটিন শিশুকে দেওয়া হবে, সেদিকে নজরদারি জরুরি। কারণ, প্রাণীজ প্রোটিন সহজপাচ্য নয়। তাই পরিমাণের দিকে বিশেষ নজরদারি জরুরি।
তবে, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শিশুর শরীরের তাপমাত্রা বাড়ার (Heatwave) পাশাপাশি ঝিমিয়ে থাকলে, হাত ও পায়ের পেশিতে খিঁচুনি কিংবা অত্যন্ত যন্ত্রণা অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার। যাতে পরিস্থিতি বিপজ্জনক না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকা জরুরি।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours