মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ সাত ফুট ৮ ইঞ্চির দীর্ঘকায় মহিলা সিদ্দিকা পারভিনকে (Siddika Parvin) মনে পড়ছে। কয়েক বছর আগে পৃথিবীর একমাত্র দীর্ঘকায় মহিলা হিসেবে গিনেস বুকে নাম তুলে রাতারাতি খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন তিনি। তাঁকে নিয়ে অনেক হইচইও হয়েছিল। তবে, এখন সে সব শুধু অতীতের ধূসর স্মৃতি মাত্র। বছর আটেক আগেও গ্রামের রাস্তার ধূলো উড়িয়ে শাসক এবং বিরোধী দলের নেতা নেত্রীরা তাঁর বাড়ি বয়ে এসে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু, কেউ কথা রাখেনি।
কেমন আছেন সিদ্দিকা পারভিন?
পৃথিবীর একমাত্র অতিকায় মহিলা হিসেবে গিনেস বুকে স্বীকৃতি পাওয়া সিদ্দিকা পারভিন এখন অসুস্থ। দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রামে তিনি থাকেন। বাড়ি বলতে ভাঙাচোরা এক চিলতে ঘর। এখন তাঁর বয়স মাত্র ৩৩ বছর। এই বয়সেও তিনি ঠিকমতো নড়তে চড়তে পারেন না। আজ পর্যন্ত জোটেনি দিন গুজরানের কোনও সরকারি ভাতা। হয়নি আধার কার্ডও। বিরল রোগে তিনি আক্রান্ত। কিন্তু, তাঁর চিকিত্সা করানোর বিষয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। এক সময় নেতা, মন্ত্রীর সুপারিশে দলীয় কর্মী পরিবেষ্টিত হয়ে সিদ্দিকার চিকিৎসার জন্য তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন কিছুটা চিকিত্সা হয়েছিল। তারপর দিল্লি থেকে সেই যে বাড়িতে ফিরেছিলেন তিনি, আর তাঁর কেউ খোঁজ রাখেনি। এখনও তিনি সুস্থ নন। সোজা হয়ে এখন তিনি হাঁটতে পারেন না। ক্ষোভে সকলের সাথে ঠিক ভাবে কথা বলাও প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন অভিমানী সিদ্দিকা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩ বছর বয়সে সিদ্দিকার পিটুইটারি গ্রন্থিতে টিউমারের সমস্যা তৈরি হয়। তাঁর চেহারা দীর্ঘ হতে থাকে। পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে তাঁর খাবারের চাহিদা। রোজ প্রায় দু’কেজি চালের ভাত খাওয়ার চাহিদা মেটাতে হিমসিম খেতে হয় গরিব পরিবারটিকে। তারপর থেকে ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এহেন তেত্রিশ পেরনো সিদ্দিকাকে নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় দিন কাটচ্ছে তার দিনমজুর বাবা আফাজুদ্দিন ও তার মা মানসুরা বিবির। তাঁদের বক্তব্য, তাঁদের মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা কেউ করল না। এবার অন্তত একটি ভাতার ব্যবস্থা কেউ করে দিলে ভাল হয়। ভবিষ্যতে সিদ্দিকার অল্প হলেও নিশ্চিত সংস্থান থাকে। আর সেই দিনের পথ চেয়ে বসে রয়েছেন সিদ্দিকা ও তাঁর পরিবার ।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ
+ There are no comments
Add yours