মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বয়স যে শুধুই সংখ্যা তার প্রমাণ রেখে গিয়েছে অনেকেই। সেই খাতায় নাম লেখালেন ত্রিপুরার (Tripura) এক বাসিন্দা। স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে যদি জুড়ে যায় অদম্য জেদ তাহলে কোনও বাধাই যেন দমিয়ে রাখতে পারে না। আজ সেটাই করে দেখালেন পঞ্চাশোর্ধ শিলা রানি দাস (Shila Rani Das)। শৈশবের অধরা স্বপ্নকে পূরণ করলেন তিনি। জীবন পাঠশালার পাট চুকিয়ে দিলেও তাতে রাজি ছিলেন না শিলা দেবী। তাই নিজের দুই মেয়েকে পাশে নিয়ে করলেন মাধ্যমিক পাশ (secondary examination)। সঙ্গে দুই মেয়ে পেরোলেন উচ্চ মাধ্যমিকের (Higher Secondary) গণ্ডি।
আরও পড়ুন: উপনির্বাচনে যোগীরাজ্যে গেরুয়া ঝড়, ত্রিপুরায় কুপোকাত তৃণমূল
মাধ্যমিক পাশ করে উচ্ছ্বসিত শিলা রানি দাস জানান, "কিশোরী অবস্থায় একাধিকবার পরীক্ষায় বসার চেষ্টা করেছি। শেষবার স্বামীর মৃত্যু সবকিছু ওলটপালট করে দেয়। জেদ ছাড়িনি। তাই, আজ মাধ্যমিক পাশ করার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হয়েছে।"
আরও পড়ুন: পিতা-কন্যার যুগলবন্দী! ভারতীয় বায়ুসেনায় একসঙ্গে যুদ্ধবিমান চালিয়ে গড়ে তুললেন ইতিহাস
বুধবার ত্রিপুরার মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। বড়দোয়ালি মিলন সংঘ এলাকার বাসিন্দা শিলা রানি দাস(৫৩) এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছেন। আপাতত তিনি পুরনিগমে কর্মরত। শিলা দেবী জানান, "১৯৯৪ সালে পরীক্ষায় বসার আবেদনপত্র জমা দিয়েও, পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। এরপর আরও দুবার চেষ্টা করেছি। স্বামী যেবার মারা গেলেন সেবারও পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। সবটা ওলটপালট হয়ে গেল। স্বামীর মৃত্যুর পর আর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি।" তাঁর কথায়, "মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার স্বপ্ন মনের মধ্যেই পুষে রেখেছিলাম। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
নজরুল বিদ্যা মন্দির থেকে পরীক্ষা দিয়েছিলেন শিলা রানি দাস। তাঁর দুই মেয়ে বাণী বিদ্যাপীঠ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। মা ও দুই মেয়ের সফলতায় খুশি পরিবারের সক্কলে।
ছোট মেয়ে বলেন, "মা আজ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছেন। ঠাকুরের অশেষ কৃপায় তা সম্ভব হয়েছে।" বড় মেয়ের কথায়, "শ্বশুর বাড়িতে থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছি। তাই মাকে বিশেষ সাহায্য করে উঠতে পারিনি। কিন্ত আজ ফলাফলে ভীষণ খুশি হয়েছি।" শিলা রাণী দাস বলেন, "মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য দুই মেয়ে সাহস যুগিয়েছে। তাই আজ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পেরেছি।" আগামীদিনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছেও রয়েছে বলে জানিছেন শিলা দেবী।
+ There are no comments
Add yours