মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাস্তায় পড়িয়ে ১৩০ টি দেশের মধ্যে শীর্ষ দশজনের চূড়ান্ত তালিকায় নাম নথিভূক্ত করে ফেলেছেন ‘রাস্তার মাস্টার’ বলে খ্যাত দীপনারায়ণ নায়ক (School Teacher)। তিনি গ্লোবাল টিচার প্রাইজ, ২০২৩ সম্মানে ভূষিত হন। তাঁর বাড়ি আসানসোলের (Asansol) জামুড়িয়ার নন্ডি গ্রামে। বর্তমানে তিনি জামুড়িয়ার ১ নম্বর সার্কেলের তিলকা মাঝি আদিবাসী ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের পিছিয়ে থাকা মানুষদের শিক্ষিত করে তোলার স্বপ্নও ছিল তাঁর। তাই এলাকার ছেলে-মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছানোর জন্য থ্রি জেনারেশন এডুকেশন শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গোটা জেলা।
কেন তিনি ‘রাস্তার মাস্টার’ (School Teacher)?
বর্তমান প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা শিখিয়ে, পরিবারে মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমাকে প্রাথমিক জ্ঞানের আলোতে শিক্ষিত করে তোলার ভাবনা ছিল দীপনারায়ণ নায়কের (School Teacher)। যখন বিশ্ব জুড়ে মহামারী করোনা আবহ, অফিস-আদালত থেকে স্কুল-কলেজ বন্ধ, সেই সময় তিনি রাস্তায় নেমে শিক্ষকতা শুরু করেন। তাঁর ইচ্ছাশক্তিকে কোনও বাধাই আটকে রাখতে পারেনি। করোনার সময় রীতিমতো সামজিক সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে, নিয়ম মেনে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী এবং এলাকার (Asansol) ছেলে-মেয়েদের রাস্তার উপরেই পড়াতে শুরু করেন তিনি। আর এভাবেই তিনি ‘রাস্তার মাস্টার’ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন।
গ্লোবাল টিচার প্রাইজ সম্মানে ভূষিত রাস্তার মাস্টার
এলাকায় (Asansol) ‘রাস্তার মাস্টার’ নামে পরিচিত দীপনারায়ণ নায়ক (School Teacher) পড়ানোর পাশাপাশি সামজসেবার কাজেও যুক্ত থাকতেন। দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পুষ্টিযুক্ত খাবারেরও ব্যবস্থা করতেন তিনি। আর এই সব কাজের জন্যই গ্লোবাল টিচার প্রাইজ ২০২৩ সম্মানে ভূষিত হন। মোট ১৩০ টি দেশের মধ্যে, শীর্ষ দশ শিক্ষকের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। আর তার মধ্যেই চূড়ান্ত তালিকায় মনোনীত হন দীপনারায়ণ নায়ক। অভাবের সংসারে পড়াশুনা করে বড়ো হয়ে, এই বিশ্ব সম্মানের জন্য ভীষণভাবে আনন্দিত তাঁর স্ত্রী, মা-বাবা।
মাস্টারের বক্তব্য
আসানসোলের (Asansol) শিক্ষক দীপনারায়ণ (School Teacher) বলেন, “আমার এই মডেলে সাফল্য পেয়েছি। আমি এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পরে বেশ আনন্দিত। এখানে যেমন ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষিত হচ্ছে, তেমনি তাঁদের পরিবারের বাবা, মা, দাদু, ঠাকুমারাও শিক্ষা লাভ করছেন। সমাজে বংশ পরম্পরায় বাহিত জ্ঞান, দর্শন, শিল্পকলা ইত্যাদিকে পরবর্তী সমাজের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার বিষয়েও পড়ানো হয়। সেই সঙ্গে আদিবাসী সামজের পুরাতন ঐতিহ্য সম্পর্কে, বিশেষভাবে পরিচয়ের প্রচেষ্টা রাখা হয়েছে। শিক্ষায় পরিবেশ এবং কর্মসংস্থান বিষয় সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours