মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) দিল্লি নিয়ে গিয়ে যদি কষ্ট দেওয়া হয়, বীরভূম জেলার বিজেপি কর্মীদের আমরা কষ্ট দেব। রবিবার বীরভূমের নানুরে দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরা এই মন্তব্য করেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁর এই হুমকি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
বিজেপি কর্মীদের ঠিক কী হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক? Anubrata Mondal
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। জেল থেকে ছাড়া না পেলে এবার প্রথম অনুব্রতহীন (Anubrata Mondal) পঞ্চায়েত ভোট হবে এই জেলায়। স্বাভাবিকভাবে এটা জেলা নেতৃত্বের কাছে মস্তবড় চ্যালেঞ্জ। এদিনের সভায় গদাধরবাবু বলেন, অনুব্রত মণ্ডলকে(Anubrata Mondal) নিয়ে গিয়ে এই জেলার সংগঠন শেষ করার যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তা হতে দেব না। জেলা কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ সহ আমরা সকলে রয়েছি। সামনের পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে আমরা দেখিয়ে দেব, অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে ওরা যদি আঘাত করে, কষ্ট দেয় তাহলে এই জেলার বিজেপি কর্মীদের কষ্ট দেব। এই জেলায় বিজেপিকে কী করে শেষ করতে হয় সেটা দেখিয়ে দেব।
কে এই গদাধর হাজরা? একসময় গদাধর হাজরা নানুর বিধানসভার (২০১১-২০১৬) বিধায়ক ছিলেন। বিধায়ক থাকার সময় তিনি নানুরের দাপুটে নেতা কাজল শেখের সঙ্গ ছেড়ে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) অনুগামী হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে দল তাঁকে টিকিট দিলেও তিনি জিততে পারেননি। বলা ভাল, তার বিরুদ্ধ গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত কাজল শেখ তাঁর জয়ের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নানুরে সেবার সিপিএম জয়ী হয়। পরবর্তী সময়ে তিনি গেরুয়া শিবিরে কিছুদিনের জন্য নাম লিখিয়েছিলেন। সেখানেও খুব বেশিদিন টিকতে না পেরে ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন। একসময় জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি হয়ে গোটা বীরভূম চষে বেরিয়েছিলেন। এখন তৃণমূলে ফেরার পর তিনি কার্যত কোণঠাসা। তিনি এখন নানুর ব্লকের মাত্র দুটি অঞ্চলের সভাপতি। জেলা কোর কমিটির নেতা কাজল শেখ, নানুরের বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝি এবং নানুরের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যের হাতেই এলাকার রাশ রয়েছে। ফলে, জেলা তো দূরের কথা নানুরে খুব বেশি দাপট দেখাতে পারে না বলে দলের অন্দরেই এই নিয়ে চর্চা রয়েছে। এমনকী দলীয় মিটিংয়ে তাঁকে ডাকা হত না বলে দলীয় নেতাদের কাছে তিনি উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। এমনকী কিছুদিন আগে সংবাদ মাধ্যমের সামনে সেকথা বলতে গিয়ে গদাধরবাবু বলেছিলেন, নানুরের ব্লক সভাপতি গ্রুপবাজি করছে। আমাকে মিটিংয়ে না ডাকলে কেন যাব? তাঁর বক্তব্যেই পরিষ্কার নানুরে তৃণমূল আড়াআড়িভাবে বিভক্ত। যদিও রবিবার নানুরের সভায় এক মঞ্চে দলীয় বিধায়ক, ব্লক সভাপতির সঙ্গে গদাধরবাবুকে এক আসনে বসতে দেখা গিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁর এই হুমকি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) নামকে সামনে রেখে বিজেপি কর্মীদের হুমকি দিয়ে দলীয় কর্মীদের কাছে আগের মতো তিনি প্রাসঙ্গিক হতে চাইছেন বলে রাজনৈতিক মহল করছেন।
তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়কের মন্তব্যকে কোনওভাবে আমল দিতে নারাজ বিজেপির বীরভূম জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা। তিনি বলেন, পাঁচিলের উপরে বসেঅনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) দিল্লি নিয়ে গিয়ে যদি কষ্ট দেওয়া হয়, বীরভূম জেলার বিজেপি কর্মীদের আমরা কষ্ট দেব। রবিবার বীরভূমের নানুরে দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরা এই মন্তব্য করেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁর এই হুমকি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ওরা এখন জল মাপছে। মানুষ আর ওদের কথা বিশ্বাস করবে না। আর ওই নেতা নিজেই দলে কোণঠাসা রয়েছেন। বিজেপি কর্মীদের হুমকি দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাজার গরম করার চেষ্টা করছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ
+ There are no comments
Add yours