Woke Culture: কর্তব্য নাকি আত্মকেন্দ্রিকতা! কিসের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত?

কর্তব্যবোধ নাকি আত্মকেন্দ্রিকতা! বিশ্বের যেকোনও সমাজ ব্যবস্থায় কোনটার গুরুত্ব সর্বাধিক হওয়া উচিত?
mohan_bhagwat
mohan_bhagwat

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কর্তব্য নাকি আত্মকেন্দ্রিকতা! বিশ্বের যেকোনও দেশের সমাজ ব্যবস্থায় কোনটার গুরুত্ব সর্বাধিক হওয়া উচিত? দিনকয়েক আগে তারই ব্যাখ্যা শোনা গিয়েছে সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতের ভাষণে। চলতি বছরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠানে নাগপুরে ভাষণ দিয়েছেন মোহন ভাগবত। সেখানেই সঙ্ঘ প্রধান নতুন একটি শব্দ প্রয়োগ করেন, ‘Woke’, যার আক্ষরিক অর্থ দাঁড়ায়, জাতিভেদ, লিঙ্গ বৈষম্য, অর্থনৈতিক বৈষম্য, কুসংস্কার এসব কিছুর বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি। তবে পৃথিবীর সব দেশেই ‘Woke Culture’ একটি ধ্বংসাত্মক তত্ত্ব হিসেবেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। সঙ্ঘ প্রধানের মতে, ‘‘এই ‘Woke Culture’ সাংস্কৃতিক মার্কসবাদের সমার্থক শব্দ। এটা একধরনের অপসংস্কৃতিও বটে। ‘Woke Culture’-এ বিশ্বাসীরা বড় বেশি আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর, বিভেদকামী হয়ে থাকেন।’’

কর্তব্যবোধ বনাম আত্মকেন্দ্রিকতা 

পরিবারই হল সমাজের একক, আর মানুষ সেই পরিবারের একটি অঙ্গ, যেখানে সে তার কর্তব্য পালন করে, কেবলমাত্র অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করে না। অপরদিকে, মার্কসবাদ শুধুই অধিকারবোধ আর আত্মকেন্দ্রিকতার কথা বলে। সাংস্কৃতিক মার্কসবাদ অথবা ‘Woke Culture’ এই দুটোই ব্যক্তি স্বার্থের কথা বলে। ব্যক্তির শরীর ও মনের যাবতীয় চাহিদা পূরণের কথা বলে। এখানেই বাধে ব্যক্তির সঙ্গে পরিবার ও সমাজের সংঘাত। ব্যক্তির মধ্যে কর্তব্যবোধ লোপ পেয়ে তখন প্রাধান্য পায় আত্মকেন্দ্রিকতা। নিজের স্বার্থ, তৃপ্তি, বাসনা, জীবন উপভোগ তখন ব্যক্তির কাছে মুখ্য হয়ে যায়, গৌণ হয় পরিবার ও সমাজের প্রতি কর্তব্যবোধ। সঙ্ঘ প্রধানের মতে, মার্কসবাদ বা ‘Woke Culture’-এ বিশ্বাসীরাই এদেশে বিভেদ, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ এবং দুর্নীতির বীজ পুঁতছে। কার্ল মার্কস যেখানে ব্যক্তি স্বার্থের পক্ষে সওয়াল করেছেন, সেখানে সঙ্ঘের দৃষ্টিতে পরিবারই হল সমাজ ব্যবস্থার একক। 

পেরিয়ারের আদর্শের বিরোধ ও আম্বেদকরের ভাবনাকে প্রশংসা

ঠিক এই কারণেই সঙ্ঘ দক্ষিণ ভারতে পেরিয়ারের আন্দোলনকে সমর্থন করেনা, কারণ তা সমাজে বিভেদ ছড়ায়। সর্বোপরি তারা পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি প্রাচীন হিন্দু সভ্যতার বিরুদ্ধে তোপ দাগে, যা ভারতীয় পরম্পরা ও সংস্কৃতির বিরোধী। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ অনেকভাবে সমর্থন করে বিআর আম্বেদকরের চিন্তাধারাকে। কারণ তা বঞ্চিত শ্রেণির উন্নয়নের পাশাপাশি ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থার অখণ্ড ঐক্যের কথাও বলে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ এই ‘Woke Culture’কে প্রতিহত করতে তিনটি নীতি পালন প্রয়োজন বলে মনে করে - প্রথমত, দেশের কাজে সবসময় নিজেকে উৎসর্গ করা। দ্বিতীয়ত, দেশের মহান পূর্বসূরিদের সর্বদা স্মরণ করা। তৃতীয়ত, একটি সাধারণ সংস্কৃতি গড়ে তোলা। প্রসঙ্গত, সঙ্ঘ প্রধানের মতোই পূর্বতন ‘ট্যুইটার’ বর্তমানে ‘এক্স’-এর মালিক ইলন মাস্কও তোপ দেগেছেন সাংস্কৃতিক মার্কসবাদ বা  ‘Woke Culture’ এর বিরুদ্ধে। তাঁর মতে, ‘‘Woke Culture সমাজে বিভেদ ছড়ায়। এটা মানুষকে নিষ্ঠুর করে তোলে। মানুষের মনে ঘৃণার জন্মও দেয় এই ধরনের সংস্কৃতি।’’

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles