মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভগবান শ্রী রামচন্দ্র রাবণকে বধ করার জন্য দেবী দুর্গার অকালবোধন করেছিলেন। এই নিয়ম বা প্রথা মেনে শারদীয়া দুর্গাপুজো করে থাকে বাঙালি সমাজ। কিন্তু দুর্গাপুজোর আসল সময় হল বসন্ত ঋতুতে, যা দেবী বাসন্তীর পুজো হিসেবে পরিচিত। নবরাত্রির সঙ্গে দেবী দশভূজার একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। তিথি-নক্ষত্র মিলিয়ে রীতিনীতির মধ্যেই পুজো করা হয়। বসন্ত ঋতুতে চৈত্র মাসে যে নবরাত্রি পালন করা হয়, তাতে দেবী দুর্গাকে (Goddess Durga) নয়টি অবতারে পুজো করা হয়।
কবে পালিত হয়?
চৈত্র নবরাত্রি পালিত হয় চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের প্রতিপদ তিথিতে। এই সময় মা দুর্গা (Goddess Durga) নয় রকম অবতারে পূজিতা হন। এই পুজো পশ্চিমবঙ্গে যেমন বাসন্তী পুজো নামে পরিচিত, ঠিক তেমনি মহারাষ্ট্রের কোঙ্কণে চৈত্র নবরাত্রিকে গুড়ি পদওয়া বলা হয়। আবার দক্ষিণ ভারতে নবরাত্রি উগাদি নামেও পরিচিত। নবরাত্রি পালনের সঙ্গে বসন্তকালীন চৈতালি ফসল কাটার একটা সম্পর্ক রয়েছে। এতে ভক্তের মনের বাসনা পূর্ণ হয় বলে বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে।
দেবীর নয় অবতার
দেবী বাসন্তীর ন'টি অবতার হল, দেবী শৈলপুত্রী, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী কুস্মাণ্ডা, দেবী স্কন্ধমাতা, দেবী কাত্যায়নী, দেবী কালরাত্রি, দেবী মহাগৌরী, দেবী সিদ্ধিদাত্রী। নয় দিন ধরে পুজো করে মায়ের কাছে বর চেয়ে অশুভ শক্তির পরাজয় এবং শুভ শক্তির জাগরণের জন্য কামনা করা হয়। সংসারের শ্রীবৃদ্ধি, অর্থধন লাভ, সন্তানদের সাফল্য, পারবারিক সুখ সমৃদ্ধি এবং নারী শক্তির জাগরণের আশায় ভক্তরা এই নবরূপে দেবী বাসন্তী মায়ের পুজো করে থাকেন। বলা হয়ে থাকে, দেবী দুর্গা (Goddess Durga) মা নৌকাতে করে পরিবারের সঙ্গে মর্ত্যে বাপের বাড়িতে আসেন। নবরাত্রির পর আবার কৈলাসে পাড়ি দেন মা দুর্গা।
দেবী শৈলপুত্রী
দেবী শৈলপুত্রী হলেন হিমালয়ের কন্যা। তাঁর স্বামী হলেন ভগবান শিব। তাঁর দুই সন্তান কার্তিক এবং গণেশ। দক্ষরাজের কন্যা হলেন সতী। সতীর অপর নাম শৈলপুত্রী। এই দেবীর পুজো করা হয় নবরাত্রির (Chaitra Navratri 2023) প্রথম দিনে।
দেবী ব্রহ্মচারিণী
দেবী ব্রহ্মচারিণী হলেন মা দুর্গার (Goddess Durga) অবতার। তাঁর পুজো করা হয় নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে। দেবী দুর্গার তপস্যার প্রতীক হলেন দেবী ব্রহ্মচারিণী। তিনি ভগবান ব্রহ্মার চলার পথে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন।
দেবী চন্দ্রঘণ্টা
দেবী চন্দ্রঘণ্টা হলেন দেবী দুর্গার (Goddess Durga) আরেক রূপ। বাঘের উপর উপবিষ্ট থাকেন। অসুর বিনাশিনী দেবী। দশ হাতে পদ্ম, গদা, ত্রিশূল, তলোয়ার, তীরধনুক ইত্যাদি দশ অস্ত্রে সুসজ্জিত থাকেন। দেবীর মস্তকে অর্ধচন্দ্র অবস্থান করে। তাই দেবীকে চন্দ্রঘণ্টা নামে ডাকা হয়।
দেবী কুস্মাণ্ডা
দেবী কুস্মাণ্ডা হলেন চতুর্থ অবতার। এই দেবী স্বয়ং ব্রহ্মাণ্ডকে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর অনাহত চক্রে মানুষকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করেন।
দেবী স্কন্দমাতা
দেবী স্কন্ধ হলেন পঞ্চম অবতার। তিনি ভক্তের কাছে মুক্তি এবং শক্তির প্রতীক। তিনি এই রূপে সিংহবাহনা। ত্রিনয়নী এবং চারটি মস্তকে সজ্জিত। স্কন্দের জননী হওয়ায় তাঁকে স্কন্দমাতা বলা হয়।
দেবী কাত্যায়নী
দেবী কাত্যায়নী হলেন মহিষাসুরমর্দিনী। তিনি হলেন মায়ের ষষ্ঠ অবতার। সকল অশুভ শক্তিকে পরাজয় করে অসুরদের বিনাশ করে থাকেন। বৈদিক যুগে কাত্যায়ন নামে এক ঋষি ছিলেন। তাঁর সূত্রেই এই নাম।
দেবী কালরাত্রি
দেবী কালরাত্রি হলেন দুর্গার (Goddess Durga) সপ্তম অবতার। সব রকম রাক্ষস এবং ভূতেদের বিনাশ করে থাকেন এই দেবী।
দেবী মহাগৌরী
মহাগৌরী হলেন দেবীর অষ্টম অবতার। তিনি হলেন ভক্তের সমৃদ্ধি এবং সুখ প্রদানের দেবী।
দেবী সিদ্ধিদাত্রী
সিদ্ধিদাত্রী দেবী হলেন মহা সিদ্ধি প্রদানের দেবী। নবরাত্রির নবম অবতার এবং ভগবান শিবের পত্নী। সিদ্ধিদাত্রীকে বলা হয় শিবের অর্ধাঙ্গিনী দেবী।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours