মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফুটবল, ক্রিকেট হোক কিংবা যে কোনও অ্যাথলেটিক, খেলার সময় চোট স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু খেলোয়াড়কে দ্রুত সুস্থ করতে (Sports Medicine) কতখানি পরিকাঠামো রয়েছে সরকারি হাসপাতালে?
স্পোর্টস মেডিসিন কী?
রাজ্য সরকার বারবার স্পোর্টস মেডিসিন বিভাগ (Sports Medicine) চালু করার কথা ঘোষণা করলেও, অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালেই স্পোর্টস মেডিসিন বিভাগ নেই। ফলে, রাজ্যের খেলোয়াড়দের জন্য এ এক বড় প্রতিবন্ধকতা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, খেলার সময় কিংবা প্রস্তুতি পর্বে খেলোয়াড়দের নানা রকম চোট লাগে। হাড়, পেশি কিংবা স্নায়ুতে টান লাগা, ভেঙে যাওয়া অথবা পেশি ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। তাই দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য দরকার বিশেষ চিকিৎসা। স্পোর্টস মেডিসিন সেই চিকিৎসা পরিষেবা দিতে সক্ষম।
স্পোর্টস মেডিসিন (Sports Medicine) বিভাগে, এক ছাদের তলায় মেডিসিন, অস্থি, স্নায়ু চিকিৎসকেরা কাজ করেন। তাছাড়া থাকেন ফিজিওথেরাপিস্ট। ফলে, রোগী দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা পান। হয়রানি কম হয়। তাই দ্রুত সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ও বেশি থাকে। কিন্তু এই রাজ্যের সরকার হাসপাতালে স্পোর্টস মেডিসিন বিভাগ চালু এখনো পরিকল্পনার পর্যায়ে রয়েছে।
পরিকল্পনাই সার, থমকে বাস্তবায়ন
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম হাসপাতালের মতো প্রথম সারির সরকারি মেডিক্যাল কলেজে স্পোর্টস মেডিসিন বিভাগ (Sports Medicine) চালুর পরিকল্পনা হলেও, বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে, এখনও কোনও খেলোয়াড়ের সমস্যা হলে, তাকে একাধিক বিভাগের যেতে হয়। পরিষেবার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
ভুক্তভোগীদের একাংশ জানাচ্ছেন, কলকাতার কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে স্পোর্টস মেডিসিনের (Sports Medicine) পরিষেবা পাওয়া যায়। কিন্তু সেই সব হাসপাতালের পরিষেবা নেওয়ার সামর্থ্য সকলের নেই। ফলে, তাদের জন্য রয়েছে শুধু ভোগান্তি। রাজ্যের একাধিক জেলায় রয়েছেন অ্যাথলেটিক্স। এশিয়ান গেমস থেকে অলিম্পিক, আন্তর্জাতিক নানান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন জেলার প্রতিভা। কিন্তু তাদের অন্যান্য সাহায্য তো দূর অস্ত, সামান্য স্বাস্থ্য পরিষেবা ও রাজ্য সরকার সুনিশ্চিত করতে পারেন না। এমনটাই মনে করছেন এ রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশ।
আরও পড়ুন: আপনি কি ‘ফিটনেস ফ্রিক’? অতিরিক্ত শারীরিক কসরত ডেকে আনতে পারে মৃত্যু!
ফিজিওথেরাপিস্ট গুরুত্বপূর্ণ
এ রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, জেলায় জেলায় মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হচ্ছে। এদিকে সেখানে নূন্যতম পরিষেবা সুনিশ্চিত হচ্ছে না। স্পোর্টস মেডিসিন (Sports Medicine) বিভাগ নতুন করে চালু করা তো দূরের কথা, অস্থি বিভাগ, স্নায়ু বিভাগেও নিয়মিত পরিষেবা সুনিশ্চিত করা যাচ্ছে না। ফলে, জেলা থেকে কলকাতার হাসপাতালে রোগী আসতে বাধ্য হচ্ছেন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, খেলার সময় নানা রকম চোট পান খেলোয়াড়রা। ওষুধ কিংবা অস্ত্রোপচার ছাড়াও তাদের সুস্থ করতে অন্যতম জরুরি হল থেরাপি। তাই ফিজিওথেরাপিস্ট স্পোর্টস মেডিসিনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকদের একাংশের প্রশ্ন, কিন্তু সরকার ফিজিওথেরাপিস্ট নিয়োগ করেন কি?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শুধু খেলোয়াড়দের জন্য নয়। এই ধরণের পরিষেবা সাধারণ মানুষের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে শরীর চর্চা নিয়ে উৎসাহ বাড়ছে। অনেকেই জিম করছে, যোগাভ্যাস করছে। এই ধরণের অভ্যাসের জন্য অনেক সময়েই তারা পেশি, স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছেন। সরকারি হাসপাতালে স্পোর্টস মেডিসিন বিভাগ (Sports Medicine) থাকলে, অনেকটাই হয়রানি কম হয়। কিন্তু পরিকল্পনা থেকে কবে সেটা বাস্তবায়ন হবে, সেটাই এখন প্রশ্নের মুখে।
+ There are no comments
Add yours