মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গরু পাচার কাণ্ডে এল নয়া মোড়। কেষ্টর বিরুদ্ধে আরও এক বিস্ফোরক তথ্য আদালতে জানিয়েছে সিবিআই। গরুপাচারের টাকা লেনদেনের জন্য আরও ১১৫টি বাফার অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। আরও অবাক করা বিষয়, এই অ্যাকাউন্টগুলি করোনা কালে মাত্র ২ দিনে খোলা হয়েছিল। আরও জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের জন্য পঞ্চায়েতে যে নথি জমা করেছিলেন উপভোক্তারা, সেই নথি দিয়েই এই অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল। লক্ষ-লক্ষ টাকা এই অ্যাকাউন্টগুলিতে ঢুকেছে। ইতিমধ্যেই এই অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত সমস্ত নথি সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে আসানসোল সিবিআই আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। ফের এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য দিল সিবিআই
এদিন আসানসোল আদালতে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ জানায় সিবিআই। আদালতে কেন্দ্রীয় সংস্থা দাবি করেছে আরও ১১৫টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এই সব অ্যাকাউন্টের তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে আদালতে। সিবিআই আদালতকে জানিয়েছে, ওই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি থেকে চারটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে নিয়মিত টাকা পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতকে জানিয়েছে, করোনা অতিমারির সময় দু'দিনের মধ্যে এই ১১৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল।
সিবিআই আদালতে আরও দাবি করেছে, গরু পাচারের টাকাই এই অ্যাকাউন্টগুলিতে রাখা হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থা আদালতকে জানিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরির জন্য পঞ্চায়েত অফিসে জমা হওয়া নথি থেকে এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছে। সিবিআই দাবি করেছে, এখনও পর্যন্ত ১৬ জন অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে চিহ্নিত করা গিয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকেরই দাবি অ্যাকাউন্টগুলি তাঁদের খোলা নয় এবং টাকাও তাঁদের নয়। তাঁরা কেবল ছাপ দিয়েছেন।
রাজীব চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ
গরু পাচার কাণ্ডে উঠে এসেছে রাজীব চট্টোপাধ্যায়র নাম। সিবিআই জানিয়েছে, এই অ্যাকাউন্টগুলি থেকে অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ রাজীব ভট্টাচার্যের অ্যাকাউন্টে ৬৬ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে। তদন্তকারীরা আদালতে জানিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রীর চিকিৎসায় টাকা দিয়েছিলেন যে রাজীব চট্টোপাধ্যায় তাঁর অ্যাকাউন্টেও গিয়েছে গরু পাচারের টাকা। এই সব সমবায় ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকেই ঘুর পথে গরু পাচারের টাকা ঢুকেছে কেষ্টর অ্যাকাউন্টে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।
অন্যদিকে এই অ্যাকাউন্টগুলি যে প্রভাব খাটিয়ে তৈরি করা হয়েছে সেকথা স্বীকারও করে নিয়েছেন ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। উল্লেখ্য, এর আগে অনুব্রত মণ্ডলের গরু পাচার কাণ্ডে ১৭৪ টি এবং ৫৪টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল।
ফের ১৪ দিনের জেল কেষ্টর
এদিন গরু পাচার মামলায় বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শুক্রবার অনুব্রতকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়। সওয়াল জবাব শেষে আদালত কেষ্টর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। অর্থাৎ আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি অবধি অনুব্রতকে আসানসোল কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি হয়ে থাকতে হবে। এদিন আদালতে অনুব্রতের জামিনের আবেদন করেননি তাঁর আইনজীবীরা। ১৭ ফেব্রুয়ারি কেষ্টকে আবার আদালতে পেশ করা হবে।
+ There are no comments
Add yours