মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর শিলিগুড়ির (Siliguri) এক শীর্ষ তৃণমূল নেতা তাঁর বাড়ির ড্রইং রুম থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পেল্লাই ছবি রাতারাতি নামিয়ে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলেছিলেন। এবার রেশন দুর্নীতিতে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বালু) গ্রেফতার হতেই শিলিগুড়ির সেই রেশন ডিলার নিজেকে 'বালু-মুক্ত' করতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। রেশন দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে থাকা সেই রেশন ডিলারের সঙ্গে তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতা, প্রাক্তন মন্ত্রীও এখন বিনীদ্র রজনী কাটাচ্ছেন। রেশন দুর্নীতিতে ইডির তদন্তে ডাক পড়ার আতঙ্ক গ্রাস করেছে তাঁদের।
উত্তরবঙ্গে নানা ব্যবসায় রেশন-দুর্নীতির টাকা?
রেশন দুর্নীতির টাকা শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্সে ছড়িয়ে পড়েছে। আত্মীয়, ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের নামে নানা ধরনের ব্যবসায় সেই টাকা লগ্নি করেছেন বনমন্ত্রী। এনিয়ে এতদিন চাপা গুঞ্জন ছিল। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হতেই সেই গুঞ্জন প্রকাশ্যে চলে এসেছে। শিলিগুড়িতে (Siliguri) রেশন দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে মাটিগাড়ার ব্লকের সেই রেশন ডিলারের নাম জোরালো ভাবে উঠে আসছে।অভিযোগ, তাঁকে সামনে রেখে শিলিগুড়িতে অনেক তৃণমূল নেতা, উত্তরবঙ্গের প্রাক্তন মন্ত্রী দু'হাত ভরে টাকা কামিয়েছেন, বনমন্ত্রীর সিন্ডিকেটে যোগ দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। শিলিগুড়ি, ডুয়ার্স ও পাহাড়ে রিসর্ট, বালি খাদান, ক্র্যাশার, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় রেশন দুর্নীতির টাকা খাটানোর অভিযোগ উঠে এসেছে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে। তিনি গ্রেফতার হতেই সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের মুখেও এখন এই চর্চা।
শিলিগুড়ির (Siliguri) দেবনগর টাউনশিপের নাম কেন উঠছে?
উঠে এসেছে শিলিগুড়ির শিবমন্দিরের কাছে দেবনগর টাউনশিপের নাম। স্থানীয়দের দাবি, বনমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ মহম্মদ ফারুখ ওরফে রাহুল দেব বিঘার পর বিঘা জমি কেনেন। সেই জমি কেনার সময় উপস্থিত ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়র এক আত্মীয়। সেই দেবনগর প্রজেক্টের সাইন বোর্ডে একটি সংস্থার নাম থাকলেও সেখানে কোনও ঠিকানা, রেজিস্ট্রেশন নম্বর কিছুই লেখা নেই। যে মোবাইল নম্বর দেওয়া রয়েছে, সেখানে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। স্থানীয়দের দাবি, রেশন দুর্নীতির টাকায় এই প্রকল্পের সঙ্গে তৃণমূলের অনেক নেতাই জড়িত (Siliguri)।
পছন্দের কোনও শিল্পপতিকে সামনে খাড়া করে বনমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের একাধিক রুগ্ন ও বন্ধ থাকা চা-বাগানেও রেশন দুর্নীতির টাকা লাগিয়েছেন। এই সিন্ডিকেটে তৃণমূলের একাধিক নেতা রয়েছেন বলে অভিযোগ।
বিজেপি কী বলছে? (Siliguri)
বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলেন, আমাদের প্রশ্ন, কোনও মন্ত্রী বা তৃণমূল নেতা কেন্ত্রীয় এজেন্সির তদন্তে গ্রেফতার হতেই তাদের দুর্নীতির ইতিহাস বেরিয়ে আসছে। তাহলে রাজ্যের পুলিশ ও গোয়েন্দারা এতদিন কী করেছে। আমরা তো বারবার বলে আসছি তৃণমূল দলটাই চোর। পুলিশ তৃণমূলের দলদাস হওয়ায় সব দেখে-বুঝেও ঘুমিয়ে থাকছে। কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা চুরির পাশাপাশি গরু ও কয়লা পাচারের টাকায় তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি ভরে উঠেছে। সেই টাকা কালীঘাটে যাচ্ছে। একশো দিনের কাজ প্রকল্পেও দেখা যাবে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের টাকা চুরি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours