মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার (Nanda Kumar) ব্লকের শীতলপুর পশ্চিম পঞ্চায়েতের তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। সভা থেকে গ্রেফতার এবং প্রধান নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন সিপিএমের আরেক পঞ্চায়েত সদস্য ফণীভূষণ গুছাইত। হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এ দিন ওই মামলার শুনানি হয়। এরপরে বিচারপতি শীতলপুর পশ্চিম গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান বোর্ড ভেঙে দেওয়া এবং আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে নতুন বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল? (Nanda Kumar)
এবার পঞ্চায়েত (Nanda Kumar) নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের শীতলপুর পশ্চিম পঞ্চায়েতের ২৩টি আসনের মধ্যে ১১টি আসনে জয়লাভ করে তৃণমূল। বিজেপি পাঁচটি, সিপিএম পাঁচটি, এবং বামফ্রন্ট সমর্থিত নির্দল দু'টি আসন পায়। তৃণমূল সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেলেও সেখানে বামেরা বিরোধীদের সমর্থন নিয়ে বোর্ড করতে উদ্যোগী হয়েছিল। গত ১১ অগাস্ট ছিল পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচনের সভায় তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম এবং নির্দল সদস্যরা উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু, প্রধান নির্বাচনের সভা শুরুর ঠিক আগেই অফিসে আসে নন্দকুমার থানার পুলিশ। তারা পঞ্চায়েত ভোট গ্রহণের কয়েকদিন আগে গোলমালের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আব্দুল জব্বরকে গ্রেফতার করে। এর জেরে গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসের চত্বরে জমায়েত থাকা সিপিএম সমর্থকদের সঙ্গে সে দিন পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ সিপিএম সমর্থকদের হঠিয়ে জব্বরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। সিপিএম নেতৃত্ব অভিযোগ করেন, তাঁদের তরফে প্রধান পদ প্রার্থী ছিলেন শেখ আব্দুল জব্বর। তাঁকে অন্যান্য বিরোধী দলের সদস্যরা যাতে সমর্থন করে প্রধান নির্বাচন করতে না পারে, সেই জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব পরিকল্পনা করে সভা থেকে জব্বরকে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করিয়েছে। গোলমালের পরে সিপিএম, বিজেপি এবং নির্দল সদস্যরা প্রধান নির্বাচন সভা বয়কট করে। ফলে তৃণমূল সদস্যরা সভায় প্রধান পদে তাঁদের দলের হাসিনা বিবিকে এবং উপ-প্রধানের পদে তপন বেরাকে নির্বাচিত করে বোর্ড গঠন করেন। শেখ আব্দুল জব্বর আদালতের নির্দেশে জেল হেফাজতে ছিলেন। পরে, তিনি জামিন পান।
কী বললেন সিপিএম নেতৃত্ব?
হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন,শেখ আব্দুল জব্বরকে পুরানো মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। জব্বর আমাদের প্রধান পদ প্রার্থী ছিলেন। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক, নন্দকুমারের (Nanda Kumar) বিডিও এই পুলিশ চক্রান্ত করে প্রধান নির্বাচনের সভা থেকে ওঁকে গ্রেফতার করে। আদালতের রায়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত বোর্ড অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আদালতের রায়ে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
তৃণমূল নেতৃত্বের কী বক্তব্য?
এ বিষয়ে তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, আদালতের রায়ের বিষয়টি শুনেছি। আমরা আদালতের নির্দেশ মাথা পেতে নেব। তবে, রাজ্যে সিপিএমের কোনও অস্তিত্ব নেই। বিজেপি কোন্দলে জড়িত। আদালতের নির্দেশ মেনে নতুন বোর্ড গঠনে উদ্যোগ নেবে তৃণমূল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours