তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে! কম বয়সী থেকে প্রৌঢ়, দেশ জুড়ে বাড়ছে হৃদরোগ (Heart Attack)! বাদ নেই এ রাজ্য। তবে, এ রাজ্যে হৃদরোগের জটিলতা আরও বাড়িয়ে তুলছে সরকারি হাসপাতালের রেফার রোগ। হার্ট অ্যাটাকের পরের চিকিৎসা যত দ্রুত শুরু করা যায়, বিপদ তত কমে! কিন্তু অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীর চিকিৎসা শুরু হতে অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই মৃত্যু আটকানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
কী অভিযোগ উঠছে (Heart Attack)?
রাজ্যের অধিকাংশ জেলাস্তরের হাসপাতাল, এমনকি জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলোর বিরুদ্ধেও একাধিক সময়ে অকারণ রেফার করার অভিযোগ ওঠে। রেফারের জেরে রোগীর চিকিৎসার সুযোগ কমে। রোগীর সমস্যা আরও জটিল হয়ে যায়। হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যার ক্ষেত্রেও এই রেফার রোগের ব্যতিক্রম হয় না। অভিযোগ, কালনা থেকে কৃষ্ণনগর কিংবা জলপাইগুড়ি থেকে ঝাড়গ্রাম, একাধিক জেলার হাসপাতালে রোগীর পরিজনদের অভিজ্ঞতা, হার্ট অ্যাটাকের (Heart Attack) রোগী গেলেও হাসপাতালের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, চিকিৎসার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। তাই অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার। আর এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে নিয়ে যেতে গিয়েই চিকিৎসার সময় পাওয়া যায় না। যেমন দিন কয়েক আগে কালনার বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের এক প্রৌঢ়ার হার্ট অ্যাটাক হয়। তাঁকে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাঁকে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। তাঁকে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে যেতেই প্রয়োজনীয় সময় কেটে যায়। ফলে, কার্যত বিনা চিকিৎসাতেই মারা যান ওই প্রৌঢ়া। এমনই অভিযোগ রোগীর পরিবারের।
একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল বসিরহাটের বছর চল্লিশের এক ব্যক্তির। তাঁর হার্ট অ্যাটাকের পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে আরজিকর হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, হার্ট অ্যাটাকের পরের গোল্ডেন আওয়ারে চিকিৎসা শুরু না করলে মৃত্যু আটকানো কঠিন।
গোল্ডেন আওয়ার (Heart Attack) কী?
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হার্ট অ্যাটাকের (Heart Attack) পরের ৯০ মিনিট হল গোল্ডেন আওয়ার। তবে, প্রথম এক ঘণ্টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে রোগীর চিকিৎসা শুরু হলে বড় বিপদ এড়ানো যায়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নানান জটিলতার কারণে এই গোল্ডেন আওয়ারের মধ্যে চিকিৎসা শুরু করা যায় না। ফলে, হৃদরোগে আক্রান্তদের ঝুঁকি বাড়ে।
এই সমস্যা (Heart Attack) রুখতে কী পদক্ষেপ নেবে স্বাস্থ্য ভবন?
সরকারি হাসপাতালের রেফার সমস্যা নিয়ে একাধিকবার স্বাস্থ্য ভবনে অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি বদল হয়নি। যদিও স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, রোগীর পরিজন হাসপাতালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করলে সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখা হয়। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়। যদিও ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তৎপরতা থাকলে অনেকেই সুস্থ জীবনে ফিরে যেতে পারতেন। কিন্তু রেফার রোগের জেরে অনেকেই প্রাণ হারাচ্ছেন (Heart Attack)।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
+ There are no comments
Add yours