North 24 Parganas: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিকাই সার! রমরমিয়ে চলছে অবৈধ বাজির কারবার

অবৈধ বাজির কারবার চলছে তৃণমূল এবং পুলিশ-প্রশাসনের মদতে?
North_24_Parganas
North_24_Parganas

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডের পরই অবৈধ বাজির কারবার বন্ধ করতে উদ্যোগ শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একগুচ্ছ নির্দেশিকাও জারি করেন। যেখানে বেআইনি বাজি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি তা নিষ্ক্রিয় করার উদ্যোগ যেমন নিতে বলা হয়েছে, তেমনই সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তারপরও কি পরিস্থিতি আদৌ বদলেছে? অভিযোগ উঠছে, এখনও উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) বহু জায়গায় রমরমিয়ে চলছে অবৈধ বাজির কারবার। দত্তপুকুরের ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকা হোক, কিংবা বারাসত পুরসভার টালিখোলা অথবা আরিফবাড়ি এলাকা। সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বেআইনি বাজির কারবার। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন এই কারবারের কথা৷ ফলে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিশের ভূমিকা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরও কীভাবে অবৈধ এই বাজির কারবার চলতে পারে! পুলিশ-প্রশাসন কি আদৌ তৎপর বেআইনি বাজির কারবার বন্ধ করতে? তা না হলে কেন এই অবৈধ কারবার বন্ধ করা যাচ্ছে না? তাহলে কি এর পিছনে কারও মদত রয়েছে? এমনই সব প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। আর এই ঘটনা সামনে আসতেই পুলিশ এবং শাসকদলকে একযোগে দুষেছে বিরোধীরা। যদিও অবৈধ বাজির ব্যবসা বন্ধ করতে পুলিশ যাবতীয় পদক্ষেপ করছে বলে দাবি করেছেন জেলার পুলিশ সুপার।

অবৈধ বাজির কারবারের আঁতুড়ঘর

উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নারায়ণপুর এলাকা অবৈধ বাজির কারবারের আঁতুড়ঘর। পঞ্চায়েতের একেবারে নাকের ডগায় এখনও চলছে বেআইনি এই বাজির কারবার। কখনও লুকিয়ে চুরিয়ে, আবার কখনও প্রকাশ্যে। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক বাজির গুদাম এবং দোকানঘর রয়েছে। তাতে যুক্ত রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। বেশিরভাগেরই বৈধ অনুমতি নেই বলে অভিযোগ। তা সত্ত্বেও কীভাবে চলছে এই অবৈধ কারবার? স্থানীয়দের একাংশের মত, সবটাই হচ্ছে পুলিশ এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের মদতে। বিনিময়ে পকেটে ঢুকছে মোটা টাকা। টাকার বিনিময়ে বৈধতার লাইসেন্স মিলছে অবৈধ কারবারে। বছর চারেক আগে এই নারায়ণপুরেই অবৈধ বাজির গুদামে বিস্ফোরণে ঝলসে মৃত্যু হয়েছিল দু'জনের। তারও আগে মজুত বাজিতে আগুন লেগে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। ফলে, বাজি বিস্ফোরণের পুরনো ইতিহাস রয়েছে নারায়ণপুরে। এগরা ও মালদা বিস্ফোরণের পর সেখানেও যে আবার কোনও অঘটন ঘটবে না, তা জোর গলায় এখন কেউই বলতে পারছেন না। সবসময় আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।

"ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের পথে বসতে হবে"

এই পেশাই যে তাঁদের একমাত্র অবলম্বন, তা কার্যত মেনে নিয়েছেন বাজির ব্যবসায়ীরাও (North 24 Parganas)। এই বিষয়ে আলি নামে এক বাজি ব্যবসায়ী বলেন, "২৫ বছর ধরে আমি এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। আগে ট্রেড লাইসেন্স থাকলেও বর্তমানে তা আর নেই। করোনা কালের পর থেকে আর আমাদের ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে বেআইনিভাবেই এই বাজির কারবার চালাতে হচ্ছে। বাধ্য হয়েই আমাদের এই পেশা বেছে নিতে হয়েছে। পরিবারের মুখে দু-মুঠো অন্ন তুলে দেবার জন্যই এই পথ বেছে নিতে হয়েছে। এই ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের পথে বসতে হবে। সরকার বিকল্প ব্যবস্থা করলে আমাদের সকলেরই উপকার হবে।

যারা প্রকৃত বোমা বানাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, দাবি বিজেপির

এ নিয়ে বিজেপির যুব মোর্চার বারাসত (North 24 Parganas) সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পিকলু শর্মা বলেন, "রাজ্যে কর্মসংস্থান নেই বলেই সাধারণ মানুষ এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হতে বাধ্য হচ্ছেন। আর এই অবৈধ কারবার চলছে তৃণমূল এবং পুলিশ-প্রশাসনের মদতে। সাধারণ বাজি ব্যবসায়ীদের না ধরে পুলিশের উচিত, এর আড়ালে যারা প্রকৃত বোমা বানাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া"।

অধিকাংশরই বৈধ অনুমতি রয়েছে, দাবি তৃণমূল প্রধানের

বিরোধীদের অভিযোগকে আমল দিতে চাননি ইছাপুর (North 24 Parganas) পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি বলেন, "নীলগঞ্জের একটি এলাকায় অল্পবিস্তর বাজির ব্যবসা চলছে। তবে আমরা সজাগ রয়েছি। নিয়ম মেনে বৈধভাবে যাতে বাজির ব্যবসা হয় সেখানে, দেখা হচ্ছে। যদি কেউ অবৈধভাবে বাজির ব্যবসা করে থাকেন, সেটা দেখা উচিত পুলিশ-প্রশাসনের। এ ব্যাপারে চাইলে পুলিশ-প্রশাসনকে সবরকমের সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। ওখানে অধিকাংশরই বৈধ অনুমতি রয়েছে, এটুকু বলতে পারি।"

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles