মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আগামী কয়েক মাসের মধ্যে গঙ্গার নিচে দিয়ে চালু হতে চলেছে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো। হাওড়া ময়দান থেকে হাওড়া মেট্রো স্টেশন (Howrah Metro) হয়ে গঙ্গার নিচে দিয়ে মেট্রো পৌঁছে যাবে কলকাতায়। বেশ কয়েকবার গঙ্গার নিচে দিয়ে ট্রায়াল রানের কাজও ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। এখন গঙ্গার দুই পাড়ে মাটির তলায় মেট্রো স্টেশনের শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। একই সঙ্গে মেট্রো স্টেশনের উপরেও যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য নানা পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে জোরকদমে। কাজ প্রায় শেষের পথে। আগামী ৪-৫ মাসের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করে মেট্রো পরিষেবা শুরু করতে তৎপর মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
হাওড়া থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মেট্রোর কত স্টেশন রয়েছে?
কলকাতা মেট্রোর এই রুট হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড বা ধর্মতলা পর্যন্ত প্রায় ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। যেখানে থাকছে মোট ৪টি আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো স্টেশন। হাওড়া ময়দান, হাওড়া স্টেশন (Howrah Metro), মহাকরণ ও এসপ্ল্যানেড বা ধর্মতলা। প্রতি ১২ মিনিট অন্তর চলবে মেট্রো। আপাতত রোজ সারাদিন ট্রায়াল রান হচ্ছে, যা ইতিমধ্যেই শেষের পথে।
হাওড়া মেট্রো স্টেশনে (Howrah Metro) মাটি থেকে কতটা নিচে?
রেল সূত্রে জানা গেছে, হাওড়া মেট্রো স্টেশনের গেট তৈরি হচ্ছে হাওড়া রেল স্টেশনের ধাঁচে। লাল টেরাকোটা দিয়ে মুড়ে ফেলা হচ্ছে গেটের একাংশ। এটি দেশের দ্বিতীয় গভীরতম মেট্রো স্টেশন হতে চলেছে। যা গভীরতম মেট্রো স্টেশন পুণে মেট্রোর সিভিল কোর্ট স্টেশনের পর। সবথেকে বেশি হাওড়া মেট্রো স্টেশনে (Howrah Metro) ৩২টি এএফসি ও পিসি গেট বসানো হচ্ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই গেট দিয়ে প্রতি মিনিটে ৪৫ জন যাত্রী ঢুকতে ও বের হতে পারবেন। যাত্রীরা কোন দিক থেকে কোন দিকে যাবেন তার জন্যে ২০টি জায়গায় দিক নির্দেশিকা বোর্ড থাকবে। ঢোকা বের হওয়া নিশ্চিত করতে বিভিন্ন তল মিলিয়ে ২৭টি এসক্যালেটর ও ৭টি লিফট থাকছে। মাটি থেকে ৩৫ মিটার নিচে এই মেট্রো স্টেশন তৈরি হচ্ছে।
স্টেশনের ভিতরে তৈরি হচ্ছে সব রকম আধুনিক যাত্রী পরিষেবার জন্যে পরিকাঠামো। অন্য স্টেশনের মতো আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা এড়াতে ইতিমধ্যেই বসে গেছে স্লাইডিং ডোর, লিফট ও এসক্যালেটর। তবে, টিকিট চেকিং মেশিন হাওড়া ময়দানে বসে গেলেও হাওড়া স্টেশনে তার তোড়জোড় চলছে। হাওড়া স্টেশনের ওল্ড কমপ্লেক্সের ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম শুরু হচ্ছে যে জায়গা থেকে তারপর ছিল ১৬ নম্বর রেল লাইন। এই রেললাইনটি হাওড়া স্টেশনের সব থেকে পুরানো রেল লাইন বলে মনে করেন ঐতিহাসিকরা। পরবর্তীকালে আধুনিক হাওড়া স্টেশন তৈরি হলে ১৬ নম্বর রেললাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেখানে গড়ে ওঠে গুডস ট্রেনের জন্য মালপত্র আদান-প্রদানের অফিস। ১৬ নম্বর রেললাইন ছাড়াও ১৭ নম্বর রেললাইন পর্যন্ত অনেকটাই জায়গা আছে যেখানে রেলের পুরানো কয়েকটি অফিস ও গোডাউন ছিল। এই পুরনো অফিসগুলির বেশ কিছু ভেঙে সেখানে তৈরি হচ্ছে মেট্রো স্টেশনে কাজ।
১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ১৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার আগে যে পুরানো রাস্তা ছিল সেই রাস্তার ফুট ওভারব্রিজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। মেট্রো চালু হলে এই দুটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ওল্ড কমপ্লেক্স থেকে নিউ কমপ্লেক্স এ যাত্রীরা চলাচল করার জন্য তৈরি হচ্ছে একটি পাতাল পথ বা আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ে। তার উপরেই রয়েছে মেট্রোর স্টেশনের দুটি প্রবেশ ও প্রস্থান পথ। যারা ওল্ড কমপ্লেক্স থেকে মেট্রো ধরতে যাবেন তাদের জন্য ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সামনে এবং যারা নিউ কমপ্লেক্স থেকে মেট্রো ধরতে আসবেন। তাদের জন্য ১৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে দুটি মেট্রোর গেট পাশাপাশি তৈরি হয়েছে। মেট্রো স্টেশনের শেষ প্রান্তটি রয়েছে হাওড়া ময়দান এর দিকে বঙ্কিম ব্রিজের সামনে।
কী বললেন মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক?
মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, সম্পূর্ণভাবে আধুনিক যাত্রী পরিষেবা গড়ে তোলা হচ্ছে হাওড়া ময়দান, হাওড়া স্টেশন (Howrah Metro) সহ অন্যান্য মেট্রো স্টেশনগুলিতে। মেট্রো রেলের স্টেশনটি তৈরি হচ্ছে হাওড়া স্টেশনের ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ১৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার মাঝখানের অংশে। যেটি হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন হাওড়া লঞ্চঘাট থেকে ডিআরএম ভবনের পাশ দিয়ে সরাসরি মেট্রো স্টেশনে যাওয়া যাবে। মেট্রো রেলের পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। খুব দ্রুত মেট্রো চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours