মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে (SSC Scam) গ্রেফতার হওয়া যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের রঙিন জীবনযাপন করতেন। টলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে ছিল তাঁর ওঠা-বসা। ইডি সূত্রে খবর, টলিউডের একাধিক উঠতি অভিনেত্রীর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব ছিল। ই এম বাইপাসের ধারে একটি অভিজাত ফ্ল্যাটেই এই উঠতি মডেলদের নিয়ে রীতিমতো জমাটি পার্টির আয়োজন করতেন কুন্তল। চলত হুল্লোড়, মদ্যপান থেকে নিষিদ্ধ মাদক সেবনও, দাবি ইডির।
মাদক কারবারিদের সঙ্গেও পরিচয়
ইডি সূত্রে খবর, ইএম বাইপাস সংলগ্ন এক অভিজাত আবাসনে তাঁর বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে মাঝেমধ্যেই বসত ‘রেভ পার্টি’র আসর। নায়ক–নায়িকা থেকে উঠতি মডেল ওখানে আসতেন। রাতভর চলত হুল্লোড় থেকে নিষিদ্ধ মাদক সেবন। এমনকী ওই পার্টিতে নিয়মিত দেখা যেত দুই ড্রাগ কারবারিকে। তারা সেখানে নিষিদ্ধ মাদক সরবরাহ করত বলে তথ্য পেয়েছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আধিকারিকরা। টলিউডের আরও ৬ জন অভিনেতা–অভিনেত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল কুন্তলের। হয়েছে আর্থিক লেনদেনও, (SSC Scam) এমনটাই দাবি তদন্তকারীদের। যুবনেতার বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সন্তানদের জন্মদিনের পার্টিতে হাজির থেকেছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।
গ্ল্যামার গার্লদের সঙ্গে টাকার লেনদেন
কুন্তলের ব্যাঙ্কের নথিতে অভিনয় জগতের গ্ল্যামার গার্লদের সঙ্গে টাকা লেনদেনের হদিশ পেয়েছেন ইডি অফিসাররা। আবার সোমার পার্লারের উদ্বোধনের জন্য বনি সেনগুপ্তর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে বলা হয়েছিল। ‘পারিশ্রমিক’ নিয়েই কুন্তলের কথায় কৌশানী নিউটাউনে গিয়ে ওই পার্লার উদ্বোধন করেন। উল্লেখ্য, কুন্তল প্রসঙ্গে সোমা চক্রবর্তী দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে কুন্তলের ২০১৮ সালের পর থেকে যোগাযোগ ছিল না। ব্যবসার জন্য কিছু অর্থ তিনি কুন্তলের থেকে ধার নিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন সোমা। তাঁর কথায়, এই টাকা তিনি ফেরত দেননি এবং কুন্তলও কখনও তা ফেরত চাননি। ইডি সূত্রের দাবি, দুনীর্তিতে অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ এবং এই সোমা চক্রবর্তীর মধ্যে অন্তত ৫০ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছিল। সেই সংক্রান্ত নথিও হাতে পেয়েছেন ইডির তদন্তকারীরা। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে শুক্রবার ইডি দফতরে আরও এক বার ডেকে পাঠানো হয়েছিল সোমাকে। সঙ্গে আনতে বলা হয়েছিল তাঁর ব্যাঙ্কের যাবতীয় নথি।
আরও পড়ুুন: সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে জেলে পাঠানোর হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর, কেন জানেন?
সোমা-কুন্তল সম্পর্ক
সোমার সঙ্গে কুন্তলের পরিচয় হয়েছিল শহরের একটি অভিজাত ক্লাবে। সেটা ২০১৫ সাল। তার পর থেকে একাধিক বার কুন্তল এবং সোমাকে বিভিন্ন ক্লাবে, পাবে একসাথে দেখা গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেই বন্ধুত্বের খাতিরেই নাকি ব্যবসার জন্য সোমাকে ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ দিয়েছিলেন কুন্তল। ইডির প্রশ্নোত্তর পর্বে অন্তত এমনটাই জানিয়েছেন সোমা। তবে ইডির দাবি, সোমার অ্যাকাউন্টে টাকা আসার পর তা অন্য বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্টে সরানো হয়েছে। কেন সরানো হয়েছিল ওই টাকা? ইডি কর্তারা মনে করছেন, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা সরানোর জন্য একের পর এক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। আর কোন কোন অ্যাকাউন্টে গিয়েছে এই টাকা, কোথায় কোথায় হয়েছে লেনদেন। সে সমস্ত বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে সোমাকে তাঁর অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত আরও তথ্য নিয়ে ফের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে ইডির দফতরে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours