মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্যে (West Bengal) ঊর্ধ্বমুখী ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্তের গ্রাফ। বৃষ্টির সঙ্গে আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে ও যার জেরে মশার উপদ্রব বেড়েছে। বর্তমানে রাজ্য তথা গোটা দেশেই বাড়ছে মশাবাহিত এই রোগের প্রকোপ।
ফি-বছর বর্ষাকালে ভারতের বিপুল সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গি রোগে আক্রান্ত হন। শহর হোক বা গ্রাম— মূলত জমা জলে বা বাড়ির আবর্জনা স্তূপেই এই মশা জন্মায়। এডিস ইজিপ্টাই মশা হল ডেঙ্গির বাহক। আবর্জনা স্তূপের জমে থাকা নোংরা জলে এই মশা নিজেদের বংশবৃদ্ধি করে থাকে। অন্যদিকে, ম্যালেরিয়ার বাহক হল অ্যানোফেলেস।
এডিস মশা বেশিরভাগ দিনের বেলায় কামড়ায়। অপরদিকে ম্যালেরিয়া বাহিত মশাগুলো রাতের বেলায় কামড়ায়। ডেঙ্গিকে আমরা ‘break bone fever’-ও বলে থাকি। কারণ, কোনও মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হলে রোগীর পেশি এবং গাঁটে ব্যথা হয়। দুর্বল হয়ে পড়ে শরীর। তাই প্রায় প্রতিবছর ভারত সহ দক্ষিণ চিন, মেক্সিকো, তাইওয়ান, মধ্য আমেরিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতো দেশগুলিতে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।
আরও পড়ুন: উৎসবের মুখে রাজ্যে আশঙ্কা ধরাচ্ছে ‘ডেঙ্গি-৩’, কতটা বিপজ্জনক এই ভ্যারিয়েন্ট?
সারা পৃথিবীতে প্রতি বছরই প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হন এবং মৃত্যুর হার প্রায় ২.৫ শতাংশ। এডিস মশা কামড়ালে, রক্তে ডেঙ্গির জীবাণুটি সংক্রমণ হতে ২-৭ দিন সময় লাগে এবং এই সময় শরীরে জ্বর হয়। সাধারণত কামড়ানোর ৪-৫ দিন পর থেকে জ্বরের লক্ষণ দেখা যায়। যদি কোনও ব্যক্তি এই জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে ওঠে তাহলে পুনরায় তার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
যেকোনও রোগ থেকে বাঁচার সঠিক উপায় হলো আক্রান্ত হওয়ার আগেই নিজেকে রক্ষা করা। ডেঙ্গিকে প্রতিরোধ করতে আমাদের বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে—
মশা তাড়ানোর ক্রিম ব্যবহার করা
ডেঙ্গির মশা তাড়ানোর জন্য ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে যাতে শরীরে কোনও মশা কামড়াতে না পারে। যদিও অনেকের স্কিন এলার্জি থাকায় সেক্ষেত্রে এই ক্রিম ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পোশাক নির্বাচনের দিকটি মাথায় রাখা
মশার হাত থেকে বাঁচতে যতটা সম্ভব গা ঢাকা লম্বা হাতা জামা পড়তে হবে। কারণ, মশা শরীরের উন্মুক্ত অংশ বা ত্বকের সন্ধান করে। এছাড়াও, হালকা রঙের পোশাক মশার হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: পুজোর আগে দুশ্চিন্তার মেঘ! ফের ভয় ধরাচ্ছে ডেঙ্গি, কলকাতাতেই আক্রান্ত ৪৫১ জন
মশা প্রতিরোধক
বাজারে মশা মারার ইলেকট্রনিক ব্যাট, মশা মারার কয়েল সহ নানা কোম্পানির ইলেকট্রনিক প্রতিরোধক পাওয়া যায়। এই প্রতিরোধকগুলি মশা তাড়ানোর জন্য বাড়িতে সারা দিন চালু রাখা যেতে পারে। এছাড়াও বাড়ির মেঝে পরিষ্কার রাখতে জলে সিট্রোনেলা এবং লেবুর রস যোগ করেও মশাকে তাড়ানো যায়।
মশার প্রজনন স্থলকে চিহ্নিত করা
বাড়ির ভিতরে এবং আশেপাশের স্থানগুলি পরীক্ষা করতে হবে। সাধারণত গৃহস্থালির জমা নোংরা জলে মশা বংশবৃদ্ধি হয়ে থাকে। এই সমস্ত স্থানগুলিকে পরিষ্কার করলে মশার বংশবিস্তার লোপ পায়। এছাড়াও বাড়িতে মশারির ব্যবহার করলেও মশার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
উপরের নির্দেশগুলি ছাড়াও, আরও বেশ কয়েকটি সতর্কতা পালন করলে মশার হাত থেকে বাঁচা যেতে পারে। ঘরকে সবসময় আলোকিত রাখতে হবে, আলোকিত ঘর থেকে মশা দূরে থাকে। আরেকটি খুব দরকারী পরামর্শ বাড়ির ভিতরে বা বাইরে যদি জায়গা থাকে তাহলে একটি নিম গাছ লাগানো যেতে পারে। নিম গাছ মশার হাত থেকে রক্ষা করে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours