মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশজুড়ে অব্যাহত মন্দির-মসজিদ বিত!র্ক। জ্ঞানবাপী (gyanvapi mosque), মথুরা (mathura), আগরা ফোর্ট (agra fort) সহ একাধিক জায়গায় মন্দিরের জায়গায় মসজিদ (masjid) গড়ে উঠেছে বলে দাবি হিন্দুত্ববাদী একাধিক সংগঠনের। এই আবহে ভাইরাল হয়েছে সংবাদপত্রের একটি ক্লিপিং। ক্লিপিংটি একটি প্রবন্ধের একাংশের। যাতে মহাত্মা গান্ধী (mahatma Gandhi) লিখেছিলেন, মন্দির ভেঙে মসজিদ বানানো দাসত্বের নিদর্শন।
আরও পড়ুন : এবার নমাজ বন্ধের দাবি আগরা ফোর্টের ভিতরের বেগম কি মসজিদে
১৯৩৭ সালের ২৭ জুলাই নবজীবন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল গান্ধীজির ওই প্রবন্ধটি। জনৈক শ্রী রাম গোপাল ‘শারদ’-এর একটি চিঠির প্রতিক্রিয়ায় প্রবন্ধটি লিখেছিলেন তিনি। হিন্দি থেকে অনূদিত তাঁর লেখাটি এই রূপ: যে কোনও উপাসনালয়ের ক্ষতি করা খুবই জঘন্য পাপ। মুঘল আমলে ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে মুঘল শাসকরা হিন্দুদের অনেক ধর্মীয় স্থান দখল করে নেয়। এর মধ্যে অনেকগুলি লুঠপাট ও ধ্বংস করা হয় এবং অনেককে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়। যদিও মন্দির এবং মসজিদ উভয়ই ঈশ্বরের উপাসনার পবিত্র স্থান এবং উভয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। হিন্দু ও মুসলমান উভয়ের উপাসনার ঐতিহ্য ভিন্ন। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে একজন মুসলমান কখনওই সহ্য করতে পারে না যে সে যেখানে নমাজ পড়েছিল সেই মসজিদ একজন হিন্দু লুঠ করুক। একইভাবে একজন হিন্দুও কখনওই সহ্য করবে না যে তার মন্দির, যেখানে সে রাম, কৃষ্ণ, বিষ্ণু এবং অন্যান্য দেবতার উপাসনা করে আসছে, ভেঙে দেওয়া হোক। যেসব জায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেগুলি দাসত্বের লক্ষণ। মন্দির-মসজিদ বিবাদ অবসানে হিন্দু-মুসলমান উভয়েরই নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। মুসলমানদের যেসব উপাসনালয় হিন্দুদের দখলে, হিন্দুদের উদারভাবে সেগুলি মুসলমানদের দিয়ে দেওয়া উচিত। একইভাবে মুসলমানদের দখলে থাকা হিন্দুদের ধর্মীয় স্থানগুলিও খুশির সঙ্গে হিন্দুদের হস্তান্তর করা উচিত। এতে পারস্পরিক বৈষম্য দূর হবে এবং হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ঐক্য বাড়বে, যা ভারতের মতো দেশের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে প্রমাণিত হবে।
আরও পড়ুন : শাহি ইদগাহ মসজিদ চত্বরে স্থিতাবস্থা চেয়ে আবেদন মথুরা আদালতে
কাশী বিশ্বানাথ মন্দির-জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্কও এখনও টাটকা। ১৯৯১ সালে বারাণসী আদালতে দায়ের করা একটি পিটিশনে দাবি করা হয়েছিল ষোড়শ শতকে তাঁর রাজত্বকালে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একটি অংশ ভেঙে ঔরঙ্গজেবের নির্দেশে জ্ঞানভাপী মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। আবেদনকারী এবং স্থানীয় পুরোহিতরা জ্ঞানবাপী মসজিদ কমপ্লেক্সে উপাসনার অনুমতি চেয়েছিলেন। সম্প্রতি ফের মসজিদ চত্বরে শৃঙ্গার গৌরীর পুজোর অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন পাঁচ মহিলা। আদালত অবশ্য তাতে সায় দেয়নি। অতি সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে হয় ভিডিওগ্রাফি সমীক্ষার কাজ। ওই মামলার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। এরই মধ্যে ভাইরাল গান্ধীজির প্রবন্ধের একটি অংশ। যা আদতে মন্দির ভেঙে মসজিদ গড়ে তোলার দাবিকেই সমর্থন করে বই কি!
+ There are no comments
Add yours