মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লাদাখ নিয়ে ভারত-চিন টানাপোড়েন অব্যহত। তার মাঝেই ভারতীয় সেনা জানাল, অরুণাচল সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (LAC) নির্মাণ কাজ চালাচ্ছে চিন।
অরুণাচলের সীমান্তের ঠিক ওপারেই চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (PLA)-র নির্মাণ কাজ চালানোর খবর বিগত এক বছর ধরেই সামনে আসছিল। সোমবার ভারতীয় সেনার পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর পি কলিতা বলেন, ‘‘এলএসির ওপারে প্রতিবেশী দেশ ক্রমাগত তাদের সড়ক, রেল এবং বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে নির্মাণ চালাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য, যে কোনও পরিস্থিতি উপস্থিত হলে সেনাদের দ্রুত সীমান্তে নিয়ে আসা।’’
সেনা কর্তা আরও জানান, "আমরা বিষয়টির ওপর ক্রমাগত নজরদারি চালাচ্ছি। পরিকাঠামোগত উন্নতিতেও নজর দেওয়া হয়েছে। যেকোনও রকম পরিস্থিতির জন্যে প্রস্তুত ভারতীয় সেনা।" কিছুদিন আগেই লোকসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল, প্রতিরক্ষা খাতে পরিকাঠামোগত ২০২০-২১ সালে যেখানে অর্থ বরাদ্দ ছিল ৩৫৫.১২ কোটি, এখন ২০২১-২২ সালে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে ৬০২.৩০ কোটি টাকা।
পাকিস্তানের থেকেও এই মুহূর্তে চিনকে বেশি ক্ষতিকারক মনে করছে ভারতীয় সেনা। সেই কথা মাথায় রেখে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত থেকে ভারতীয় সেনার ডিভিশন সরিয়ে আনা হয়েছে চিন সীমান্তে। ভারতীয় সেনাবাহিনী দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেনাবাহিনীর ৬টি ডিভিশনকে চিন সীমান্তে স্থানান্তর করেছে। সেনাবাহিনী স্থানান্তরের প্রক্রিয়া আজকের নয়, বিগত দুবছর ধরেই চলছে এই কাজ।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, স্থানান্তরিত হওয়া সেনা ডিভিসনের মধ্যে একটি পাক সীমান্তে সন্ত্রাস দমনের কাজে মোতায়েন ছিল। রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের একটি ডিভিশনকে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সরিয়ে লাদাখে মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এই ডিভিশন পূর্ব লাদাখ সেক্টরে মোতায়েন রয়েছে। একইভাবে, তেজপুরস্থিত গজরাজ কোরের অধীনে আসামের ডিভিশনকে সরিয়ে নিয়ে উত্তর-পূর্বের অরুণাচলে চিনা সীমান্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের দুই সেনা ডিভিশনকেও লাদাখ সীমান্তে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। উত্তরাখণ্ড থেকে এক সেনা ডিভিশনকে চিন সীমান্তে সরানো হয়েছে। এছারা লাদাখ সেক্টর থেকে একটি সেনা ডিভিশন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পাঠানো হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে চিন একতরফা ভাবে ভারতে আগ্রাসনের চেষ্টা চালিয়েছে। যেকোনওদিন পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। এই আশঙ্কাতেই প্রস্তুত থাকতে চাইছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। তাই সেনা স্থানান্তরিত করার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা নির্মাণ এবং অন্যান্য পরিকাঠামোগত উন্নতির দিকেও নজর দিয়েছে তারা।
+ There are no comments
Add yours