মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: যাদবপুরকাণ্ডে (Ju Student Death) আরও দু' জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। জানা গিয়েছে ধৃতদের নাম মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্ত। এরা দুজনেই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। শুক্রবার রাতেই সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। হস্টেলের প্রাক্তনী সৌরভকে জেরা করেই এই দুজনের নাম পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। শনিবার রাতভর জেরা করা হয় মনোতোষ এবং দীপশেখরকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপশেখর বাঁকুড়ার বাসিন্দা, তার বয়স ১৯ বছর। যাদবপুরে তিনি অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অন্যদিকে মনোতোষ হুগলির আরামবাগের বাসিন্দা। তার বয়স কুড়ি বছর। হস্টেলের ১০৪ নম্বর ঘরে মনোতোষ থাকেন এবং এখানেই থাকছিলেন স্বপ্নদীপ।
ঘটনার রাতে স্বপ্নদীপের ফোন কেড়ে নেওয়া হয়
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদীপের অস্বাভাবিক মৃত্যু (Ju Student Death) হয় বৃহস্পতিবার ভোরে। শুক্রবার রাতেই এই ঘটনায় প্রথম গ্রেফতার করা হয় হস্টেলের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে। শনিবারে আলিপুর আদালতে তাকে হাজির করা হলে বিচারক ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে বুধবার রাতে স্বপ্নদীপকে তার পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। এবং তার ফোনটিও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। স্বপ্নদীপের বাবা অভিযোগ করেন, এসব কিছুর নেপথ্যে সৌরভই ছিল। বুধবার রাতে স্বপ্নদীপকে ফোন করেছিলেন তাঁর মা। কিন্তু সেই ফোন তাকে তুলতে দেওয়া হয়নি। তা সৌরভের নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে দাবি করেছেন স্বপ্নদীপের বাবা। কিন্তু যতক্ষণ স্বপ্নদীপ কথা বলতে পেরেছিল ফোনে, ততক্ষণে সে আর্তনাদ করে গিয়েছিল বলে দাবি পরিবারের। সে বারবার বলছিল আমি এখানে ভালো নেই (Ju Student Death)। আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো। আমার ভয় করছে।
র্যাগিং নিয়ে কী বলছেন স্বপ্নদীপের সহপাঠী
স্বপ্নদীপের (Ju Student Death) এমন পরিণতি হতেই র্যাগিং নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্য জুড়ে। ইতিমধ্যে রাজ্যপাল র্যাগিং বিরোধী কমিটি গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছেন। র্যাগিং নিয়ে এবার মুখ খুললেন স্বপ্নদীপের সহপাঠী। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক সেই সহপাঠীর দাবি, হস্টেলের ভিতরে সিসিটিভি না থাকার সুবিধা নিয়ে মদ-গাঁজায় আসক্ত থাকতেন সিনিয়ররা। জুনিয়রদের ফাই ফরমাস খাটানো হতো। জুনিয়ররা বড় চুল বা দাড়ি রাখতে পারতেন না। নিজের ঘর ছাড়া অন্য কোথাও ফোনে কথা বলার সুযোগ ছিল না। সিনিয়রদের জন্য মদ, খাবার, সিগারেট এনে দিতে হতো। ওই পড়ুয়ার আরও দাবি যে স্বপ্নদীপের সঙ্গে তাকেও একদিন ইন্ট্রোতে ডাকা হয়েছিল। রাত এগারোটা থেকে ভোর সাড়ে পাঁচটা অবধি জাগিয়ে রাখা হতো। সিনিয়ররা কেউ নিজের নাম বা রুম নাম্বার বলতেন না। সেটা জেনে নিতে হতো। হাতে বিয়ারের খালি বোতল ধরিয়ে তাতে জল আনতে বলা হতো এবং সেই জলভরা বিয়ারের বোতল হাতে ছবি তোলা হতো। তারপর ব্ল্যাকমেইল করা হতো তা ফেসবুকে পোস্ট করা হবে বলে। মাঝরাতে খাবার আনতে বলা হতো। বাইরে থেকে সেই খাবার নিয়ে স্বপ্নদীপের সহপাঠী যখন আসে তখন তাকে মদ খেতে বলা হয়। সে অস্বীকার করলে বলা হয় এবার মাথায় ঢেলে দেব।
ঠিক কী হয়েছিল স্বপ্নদীপের সঙ্গে
ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে স্বপ্নদীপের র্যাগিং নিয়ে একটি চ্যাট (মাধ্যম এর সত্যতা যাচাই করে দেখেনি)। ওই চ্যাট অনুযায়ী স্বপ্নদীপের সমপ্রেমী বলে খেপানো হতো। তাকে শুধু গামছা পরিয়ে রাখা হতো এবং তার পুরুষাঙ্গ উত্থিত করতে বলা হতো (Ju Student Death)। চাপে পড়ে স্বপ্নদীপের তাই করে। কিন্তু তারপরেও সিনিয়ররা হাসাহাসি করতে থাকে। এর পরেই সহ্য করতে না পেরে ঝাঁপ দেয় সে (Ju Student Death)। আরও জানা গিয়েছে, প্রতি রাতে নিয়মিতভাবে সিনিয়রদের কাছে ইন্ট্রো দিতে হতো। হোস্টেলের এক একটি ব্লকে এক একদিন সময় আসতো ইন্ট্রো দেওয়ার। এই সময় কাছে মোবাইল ফোন রাখা যেত না। বিবস্ত্র হয়ে কিংবা শুধুমাত্র অন্তর্বাসটুকু পড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। এর পাশাপাশি চলতো নানান ধরনের গালিগালাজ, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ
+ There are no comments
Add yours