মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভূস্বর্গে শান্তি বজায় রাখতে বাড়ানো হল নিরাপত্তা। বুধবার জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিককে (Yasin malik) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে এনআইএ-র (NIA) বিশেষ আদালত। তার পরেই আঁটসাঁট করা হয়েছে উপত্যকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এদিন মালিককে যখন সাজা দেওয়া হচ্ছিল, তখনই উপত্যকায় বৈঠকে বসেন জম্মু-কাশ্মীর (jammu kashmir) প্রশাসনের শীর্ষকতার্রা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (CRPF), সশস্ত্র সীমা বল (SSB), সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) এবং সেনাবাহিনীর (Indian Army) কর্তারা।
উপত্যকার সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও উদ্ভূত আইনশৃঙ্খলার সমস্যা পর্যালোচনা করতেই ওই বৈঠক হয়। পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (কাশ্মীর রেঞ্জ) বিজয় কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় ওই বৈঠক। মালিকের সাজার আঁচে যাতে উপত্যকায় অশান্তি ছড়িয়ে না পড়ে, সেই জন্য কাশ্মীরের একাংশে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।
আরও পড়ুন : ইয়াসিন মালিকের যাবজ্জীবন সাজা, কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদের কফিনে শেষ পেরেক?
এদিন শ্রীনগরের (srinagar) একটি বড় অংশের ব্যবসায়ীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্ধ পালন করেন। তবে এর বাইরে গোটা উপত্যকা মোটের ওপর শান্তিপূর্ণই ছিল। গ্রীষ্মকালীন রাজধানীর ভিতরে ও বাইরে এদিন যথারীতি চলেছে সরকারি ও বেসরকারি যানবাহন।
মালিকের সাজা ঘোষণার সময় তার পৈত্রিক ভিটে মাইসুমা এলাকায় ভিড় জমায় স্থানীয় লোকজন। আজাদির পক্ষে স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ ও সিআরপিএফের একটি দলের দিকে পাথর ছুড়তে দেখা যায় তাদের। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। এই ঘটনায় সাময়িকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তবে মাইসুমা ও তার আশপাশ এলাকায় লোকজনের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয়, সেজন্য পুলিশ ও সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্সের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিকের যাবজ্জীবন, কী কী অভিযোগ ছিল?
এদিকে, মালিকের সাজা ঘোষণায় জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশন (Gupkar) এবং জাতীয় বাম দলগুলির সহযোগীদের মতে, মালিককে দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দুর্ভাগ্যজনক। শান্তি উদ্যোগের জন্য একটি বড় ধাক্কা। পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশনের (PAGD) প্রধান মুখপাত্র এবং সিপিএম নেতা মহম্মদ ইউসুফ তারগামি বলেন, এনআইএ আদালত রায় দিয়েছে, কিন্তু ন্যায়বিচার করেনি। বিজেপি এবং কর্পোরেট মিডিয়া যে জয়জয়কার প্রদর্শন করছে, তার উল্টোটা প্রমাণিত হতে বাধ্য।
আরও পড়ুন : ইয়াসিনকে আটকে কাশ্মীরের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না...ট্যুইট আফ্রিদির
মালিকের সাজার নিন্দা করেছে মিরওয়াইজ ওমর ফারুকের নেতৃত্বে বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত কনফারেন্সের (Hurriyat conference) জোটও। তাদের দাবি, জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (ইয়াসিন মালিকের দল) ১৯৯৪ সাল থেকে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে।
অবশ্য এনআইএ-র বিশেষ আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি (BJP)। পদ্ম শিবিরের তরফে জানানো হয়েছে, এটি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করে না, বিশেষ করে মালিকের দ্বারা নির্যাতিতদের। দলের নেতা নির্মল সিং এবং কাবিন্দর গুপ্ত এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, জেকেএলএফের (JKLF) নেতাকর্মীরা যাঁদের আত্মীয়দের খুন করেছিল, তাঁরা আশা করেছিলেন যে আদলত মালিককে মৃত্যুদণ্ড দেবে।
+ There are no comments
Add yours