Akshaya Tritiya 2024: অক্ষয় তৃতীয়া কেন মঙ্গলদায়ক? পুরাণ মতে এই দিনটির গুরুত্ব কী জানুন

অক্ষয় তৃতীয়ায় সোনা-রূপো কেনার চল কেন? নেপথ্যের কাহিনি জানেন কি?
Akshaya_Tritiya_2024
Akshaya_Tritiya_2024

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি জাঁকজমক ভাবে পালিত হয়। সনাতন ধর্মে এই দিন (Hindu religion) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন বলে বিবেচিত হয়। অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshaya Tritiya) দিন থেকে নানা শুভ কাজ শুরু হয়। এছাড়াও অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে কেনাকাটা করা বা সোনার গহনা কেনা খুবই মঙ্গল বলে মনে করা হয়। অনেকের বিশ্বাস, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে শুরু করা কাজ শুভ ফল দায়ক হয়। এই কারণেই মানুষ নতুন ব্যবসা শুরু করে এই তিথিতে। পয়লা বৈশাখের মতো এদিনও হালখাতা হয় দোকানে দোকানে। সেই উপলক্ষ্যে লক্ষ্মী-গণেশের পুজো করতে এদিন বিভিন্ন মন্দিরে ভিড় করেন ব্যবসায়ীরা। স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছেও সমৃদ্ধির বার্তাবাহক অক্ষয় তৃতীয়ার এই তিথি।

সোনা-রূপো কেনার রীতি (Akshaya Tritiya 2024)

অক্ষয় তৃতীয়ায় (Akshaya Tritiya 2024) সবাই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী সোনা ও রূপো কিনে থাকে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই দিনে সোনা কিনলে ঘরে ধন-সম্পদ, সুখ-সমৃদ্ধি আসে। এই দিনে সোনা কিনলে ঘরে অর্থের অভাব হয় না বলেও বিশ্বাস রয়েছে। ব্যক্তি এবং পরিবারের যশ ও খ্যাতি বৃদ্ধি পায়। চলতি বছর ২০২৪ সালের ১০ মে পালিত হবে এই বছরের অক্ষয় তৃতীয়া। কথিত আছে যে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে ধন সম্পদের দেবতা কুবেরকে দেবলোকের অধিপতি নির্বাচন করা হয়। তাই এই দিনে মা লক্ষ্মীর সঙ্গে কুবেরেরও পুজো করা হয়। মনে করা হয় যে অক্ষয় তৃতীয়ায় কুবের দেবের পুজো করলে সংসারে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে। এই দিনে দান করলেও তার শুভ প্রভাবে সম্পদ লাভ করা সম্ভব হয়। অক্ষয় তৃতীয়ায় যব দান করা স্বর্ণদানের সমতুল্য বলে বিবেচিত হয়।

অক্ষয় তৃতীয়ার গুরুত্ব

অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি (Akshaya Tritiya 2024) যে কোনও ধরনের শুভ কাজ করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। বিয়ে, বাগদান, গৃহপ্রবেশ এবং উপনয়নের মতো যে কোনও শুভ কাজ অক্ষয় তৃতীয়ার যে কোনও সময় করা যায়। এই দিনটি এতই শুভ যে এই দিনে কোনও শুভ কাজ করার জন্য পঞ্জিকাতে শুভ সময় দেখার দরকার পড়ে না। এই দিনে যে কোনও সময় যে কোনও শুভ কাজ করা যেতে পারে।

পুরাণে অক্ষয় তৃতীয়ার বর্ণনা

পুরাণ অনুসারে অক্ষয় তৃতীয়ায় (Akshaya Tritiya) অক্ষয় পাত্র লাভ করে ছিলেন যুধিষ্ঠির। এই কারণে অক্ষয় তৃতীয়া থেকেই ক্ষেতে বীজ রোপণ করা শুরু করেন কৃষকরা। অন্যদিকে আরেকটি পৌরণিক আরেকটি সূত্রে অনুসারে জানা গিয়েছে, বিষ্ণুর নবম অবতার কৃষ্ণ দ্বাপর যুগে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর সুদামা নামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ বন্ধু ছিলেন। সুদামা একদিন ভুলবশত কৃষ্ণের সব খাবার খেয়ে ফেলেছিলেন। এরপর তিনি শ্রীকৃষ্ণকে খাবার দিতে একমুঠো চাল নিয়ে তাঁর ঘরে আসেন। বন্ধু সুদামার এই আচরণ মুগ্ধ করেছিল শ্রীকৃষ্ণকে। এরপর শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদে সুদামার সমস্ত দারিদ্র্য ঘুচে যায়। মনে করা হয় যেদিন এই ঘটনা ঘটেছিল, সেদিন ছিল বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি। তাই দিনটি বিশেষ শুভ।

আরও পড়ুনঃ একই স্কুলের ৩৬ জন শিক্ষকের চাকরি গেল, মাথায় হাত প্রধান শিক্ষকের

খুলে যায় বদ্রীনাথধাম

উল্লেখ্য অক্ষয় তৃতীয়া (Akshaya Tritiya 2024) থেকেই খুলে যায় চারধামের অন্যতম বদ্রীনাথধাম মন্দিরের দরজা। তার সঙ্গে এদিনই মথুরায় বাঁকে বিহারীর দর্শন পাওয়া যায়। সারা বছর পোশাকের আড়ালে ঢাকা থাকেন বাঁকে বিহারী। এই একদিনই তাঁর চরণ দর্শন করা সম্ভব হয়। এছাড়াও অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshaya Tritiya) দিন সূর্যোদয়ের আগে উঠে সমুদ্র, গঙ্গা বা যে কোনও পবিত্র নদীতে বা বাড়িতে স্নান করার পর শান্ত চিত্তে ভগবান বিষ্ণু ও মা লক্ষ্মীর পুজো করার বিধান রয়েছে। সুখ, সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধির জন্য লক্ষ্মীনারায়ণের পাশাপাশি এই দিনে ভগবান শিব এবং মা পার্বতীরও পুজো করা হয়।

স্কন্দপুরাণ অনুসারে দিনের গুরুত্ব

শাস্ত্র অনুসারে, এই অক্ষয় তৃতীয়ার মাসে (Akshaya Tritiya 2024) জলের কলস, ছায়াযুক্ত বৃক্ষ রক্ষা ও রোপণ, পশু-পাখিদের খাবারের ব্যবস্থা করা, পথচারীকে জল দেওয়া প্রভৃতি ভালো কাজগুলি মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যায়। অন্যদিকে স্কন্দপুরাণ অনুসারে এই মাসে জল দান করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, অর্থাৎ বহু তীর্থযাত্রা করে যে ফল পাওয়া যায় তা বৈশাখ মাসে জল দান করলেই পাওয়া যায়। এছাড়া যাঁরা ছায়া চান, তাঁদের ছাতা দান এবং যাঁরা পাখা চান, তাঁদের একটি পাখা দান করলে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব এই তিন দেবতার আশীর্বাদ পাওয়া যায়। যিনি পাদুকা দান করেন, তিনি যমদূতদের তুচ্ছ করে বিষ্ণুলোকে যান। এমন কথাও বর্ণিত রয়েছে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles