মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘চন্দ্রযান ৩’-এর (Chandrayaan 3) ল্যান্ডার মডিউল চাঁদে নামার সঙ্গে সঙ্গেই মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে পা রাখবে ভারত। চার বছরে ব্যর্থ হয়েছে তিনটি অভিযান। এবার তাই সদা সতর্ক ইসরো। ‘চন্দ্রযান ২’ চাঁদের সামনে গিয়েও চাঁদে পা রাখতে পারেনি। তবে সেই অভিযান থেকে শিক্ষা নিয়েই ‘চন্দ্রযান ৩’-এর রূপরেখা তৈরি করেছে ইসরোর (ISRO) বিজ্ঞানীরা। বুধবার অর্থাৎ ২৩ অগাস্ট সন্ধ্যায় চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের পরই শুরু হবে আসল কাজ।
কী করবে বিক্রম
ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ চাঁদে একটা গোটা দিন (পৃথিবীতে ১৪ দিন) তার কাজ চালিয়ে যাবে। ল্যান্ডারে ৩টি পেলোড এবং ১টি রোভার রয়েছে। এছাড়াও এতে ৫ ধরনের বৈজ্ঞানিক যন্ত্র রয়েছে, যা পৃথিবীতে প্রচুর তথ্য পাঠাবে। সৌরশক্তি চালিত ল্যান্ডার এবং রোভার চাঁদ সম্পর্কে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করতে ব্যস্ত থাকবে। তবে রোভার শুধুই তথ্য সংগ্রহ করবে। কিন্তু পৃথিবীতে সেই সব তথ্য পাঠানোর কাজ হবে ল্যান্ডারের। এক্ষেত্রে, ল্যান্ডার যোগাযোগ রাখছে চাঁদের চারপাশে কক্ষপথে ঘুরতে থাকা ‘চন্দ্রযান ৩’ প্রোপালশন মডিউল এবং ‘চন্দ্রযান ২’-এর অরবিটারের সঙ্গে। তাদের মাধ্যমে রিলে পদ্ধতিতে সেই তথ্য পৃথিবীতে বেঙ্গালুরুতে স্থিত ইসরোর মিশন অপারেশনস কন্ট্রোলে (MOX) এসে পৌঁছবে।
চন্দ্রপৃষ্ঠে ভারতের চিহ্ন
চাঁদের পৃষ্ঠ ছোঁয়ার কিছুক্ষণ পরেই, বিক্রম ল্যান্ডারের এক পাশের প্যানেলটি খুলে যাবে। বেরিয়ে আসবে রোভার 'প্রজ্ঞান'। এটি চাঁদের পৃষ্ঠে ঘুরে বেরিয়ে একাধিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে। রোভারের ছয়টি চাকায় খোদিত রয়েছে জাতীয় পতাকার ছবি ও ইসরোর লোগো। ল্যান্ডারটি অবতরণের চার ঘণ্টা পরে বেরিয়ে আসবে এই রোভার। তারপর প্রতি সেকেন্ডে ১ সেমি বেগে ঘুরে-ফিরে বেড়াবে। অবতরণ স্থলের চারপাশ স্ক্যান করতে ব্যবহার করবে নেভিগেশন ক্যামেরা। রোভারটি ঘুরে ফিরে বেড়ানোর সময় চাঁদের পৃষ্ঠে ভারতের পতাকা ও ইসরোর লোগোর ছাপ পড়ে যাবে। ভারতের চিহ্ন আঁকা হবে চাঁদের বুকে।
আরও পড়ুন: বুধবার চাঁদে পা ‘বিক্রম’-এর, তার আগে ৭০ কিমি ওপর থেকে ছবি পাঠালো ‘চন্দ্রযান ৩’
প্রবল ঠান্ডা সইতে হবে
ইসরো চেয়ারম্যান জানিয়েছে, রোভারের পেলোডগুলিতে ইনস্টল করা যন্ত্রগুলি চাঁদের সমস্ত ডেটা পাঠাবে। এগুলি চাঁদের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কিত সমস্ত তথ্যও দেবে। ল্যান্ডারে তিনটি পেলোড রয়েছে। এটি ল্যান্ডিং সাইটের চারপাশে চাঁদের প্লাজমার ঘনত্ব, তাপমাত্রা এবং ভূমিকম্প পরিমাপ সবকিছুই করবে। প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সময় বাড়ানো হতে পারে। এক চন্দ্রদিনের পরিবর্তে দুই চন্দ্রদিনও কাজ করতে পারে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3)। তবে সেক্ষেত্রে ল্যান্ডার ও রোভারটিকে দ্বিতীয় চন্দ্রদিন পর্যন্ত কার্যকরী থাকতে দক্ষিণ মেরুতে এক চন্দ্ররাতে (পৃথিবীর হিসেবে প্রায় ১৪ দিন) মাইনাস ২৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হিমাঙ্কের তাপমাত্রা সহ্য করতে হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours