মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিজেপি (BJP) শাসিত গুজরাট (Gujarat) ছেড়ে এবার আর এক পদ্ম-শাসিত রাজ্য আসামে (Assam) পৌঁছলেন শিবসেনার (Shivsena) বিদ্রোহী মন্ত্রী একনাথ শিন্ডে (Eknath Shinde)। মঙ্গলবার মধ্যরাতের বিমানে সঙ্গী বিধায়কদের নিয়ে গুয়াহাটি উড়ে যান তিনি। একনাথের দাবি, তাঁর সঙ্গে শিবসেনার আরও চল্লিশ জন বিধায়কের পাশাপাশি ছ'জন নির্দলেরও সমর্থন রয়েছে। 'বিদ্রোহী' হয়ে উঠলেও, তিনি যে আপাতত শিবসেনা ছাড়ছেন না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন এই নেতা।
আরও পড়ুন : মহারাষ্ট্রে সংকটে উদ্ধব-সরকার! নিখোঁজ মন্ত্রী সহ ২৭ বিধায়ক
একনাথের সঙ্গে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের (Uddhav Thackeray) দ্বন্দ্বের মূল কারণ কংগ্রেস, এনসিপির সঙ্গে জোট বাঁধার জেরে নরম হিন্দুত্বের পথ নেয় শিবসেনা। যা না-পসন্দ একনাথের। উদ্ধবের বাড়ির সামনে হনুমান চালিশা পাঠ করার পরিকল্পনা করায় গ্রেফতার করা হয় বিজেপি সাংসদ নবনীত রাণা ও তাঁর বিধায়ক স্বামী রবি রাণাকে। তার পরেই উদ্ধব ও একনাথের পথ আলাদা হয়ে যায় বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পর দু'দশকের বিজেপি সঙ্গ ছেড়ে শিবসেনা জোট বাঁধে কংগ্রেস এবং এনসিপির সঙ্গে। মহা বিকাশ অঘোরি (Maha Vikas Aghari) জোট নামের এই জোটই আপাতত সরকার চালাচ্ছে। শিবসেনারই দুই নেতার বিদ্রোহের নেপথ্যে রয়েছে এই কারণটিও।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একনাথের দাবি, এনসিপি ও কংগ্রেস সঙ্গ ত্যাগ করে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার চালাতে হবে। এদিন গুয়াহাটিতে একনাথ ও সঙ্গী বিধায়কদের স্বাগত জানান বিজেপি নেতা সুশান্ত বরগোহাঁই ও পল্লব লোচন দাস। গুয়াহাটি পৌঁছে একনাথ বলেন, আমরা বালা সাহেব ঠাকরের (Balasaheb Thackeray) আদর্শ থেকে সরে আসছি না, শিবসেনাও ছাড়ছি না। আমরা বালাসাহেবের আদর্শকেই এগিয়ে নিয়ে যাব।
আসামে যাওয়ার আগে সুরাটের একটি পাঁচতারা হোটেলে ‘আত্মগোপন’ করেছিলেন একনাথ ও তাঁর সঙ্গীরা। সেখানেই ফোনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় বিদ্রোহী এই শিবসেনা নেতার। তার পরেই শিন্ডে ও তাঁর সঙ্গী বিধায়কদের আসামে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন : কেউ রানি ভিক্টোরিয়া বা যুবরাজ নয়! সোমবার রাহুলের জেরা প্রসঙ্গে বিজেপি
একনাথ যখন আসামে, তখন ঘোড়া কেনাবেচা রুখতে তৎপর শিবসেনার অন্য একটি অংশও। তাঁরাও বাকি বিধায়কদের ‘লুকিয়ে’ রেখেছেন মুম্বইয়ের বিভিন্ন হোটেলে। ইতিমধ্যেই একনাথকে দলের মুখ্য সচেতকের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন শিবসেনা নেতৃত্ব।
মহারাষ্ট্রের এই জোট সরকারে শিবসেনার হাতে রয়েছে ৫৫ জন বিধায়ক। পাওয়ারের (Sharad Pawar) দলের হাতে রয়েছেন ৫৩ জন। আর কংগ্রেসের বিধায়কের সংখ্যা ৪৪। অন্যদিকে, বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ১০৬। ২৮৮ আসন বিশিষ্ট এই বিধানসভায় আপাতত বিধায়কের সংখ্যা ২৮৫। এনসিপি এবং কংগ্রেস বিষয়টি শিবসেনার অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে উল্লেখ করলেও, তারা যে জোট সরকারের প্রতি দায়বদ্ধ, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে দুই দলই। তবে এনসিপি যে কোনওভাবেই বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাবে না, এদিন তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন পাওয়ার। তাই মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি যে ক্রমেই জটিল হচ্ছে, তা জলের মতো পরিষ্কার।
+ There are no comments
Add yours