তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
আধুনিক জীবনের অন্যতম বড় স্বাস্থ্য সমস্যা স্থূলতা (Obesity)। ভারতের পাশপাশি গোটা বিশ্বের অন্যতম সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে স্থূলতা। শরীরের অতিরিক্ত ওজন ডেকে আনছে নানা শারীরিক রোগ। হৃদরোগ, কিডনির একাধিক সমস্যার কারণ যেমন স্থূলতা, তেমনি শরীরের অতিরিক্ত ওজনের জন্য হাড়ের শক্তি কমছে। বিশেষত হাঁটুর সমস্যার জন্য স্থূলতা দায়ী। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব নয়। নিয়মিত শারীরিক কসরত ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
কী ধরনের শারীরিক কসরতের পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত অন্তত এক ঘণ্টা শারীরিক কসরতে সময় দিলেই বদলে যাবে পরিস্থিতি। ক্যালরি কমানোর সব চেয়ে স্বাস্থ্যকর উপায় হল শারীরিক কসরত। প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা যোগাভ্যাস আর আধ ঘণ্টা হাঁটলেই অন্তত ৩০২ কিলোক্যালরি কমবে। যা পাহাড়ে চড়ার চেয়েও বেশি কার্যকর। কারণ, একদিনে পাহাড়ে চড়লে সর্বোচ্চ ২৪৬ কিলোক্যালরি শক্তি কমে।
সম্প্রতি এক গবেষণা পত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিদিন যোগাভ্যাস করলে ১৫১ কিলোক্যালরি কমবে। নিয়মিত অন্তত তিরিশ মিনিট হাঁটলেও ১৫১ কিলোক্যালরি কমে। তাই সব বয়সি মানুষের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে এই দুই শারীরিক কসরতকেই হাতিয়ার করতে বলছেন চিকিৎসকরা। কারণ হাঁটাচলা এবং যোগাভ্যাসে যেমন শরীরের সমস্ত পেশি সচল থাকে, তেমনি মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতেও এই দুই শারীরিক কসরত খুব উপকারে আসে।
তবে, চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, স্থূলতার (Obesity) সমস্যা এখন খুব কম বয়স থেকেই গ্রাস করছে। ফলে, শিশুদের সুস্থ রাখতে বাড়তি নজরদারি জরুরি। যদি টেনিস, বক্সিং, সাঁতার, তাইকোণ্ডোর মতো খেলার সঙ্গে কম বয়স থেকে যুক্ত থাকা যায়, তাহলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কারণ, এইসব খেলায় সবচেয়ে বেশি ক্যালরি কমে। তাছাড়া, ব্যাডমিন্টন, গল্ফের মতো খেলাও নিয়মিত অভ্যাস করলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
শুধুই জিম, নাকি অন্য শারীরিক কসরত, সুস্থ থাকার উপায় কী?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শুধুই জিম শরীর সুস্থ রাখতে পারে না। কারণ, পেশি বা শারীরিক গঠনের পরিবর্তন যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন সম্পূর্ণ সুস্থ থাকা। তাই নিয়মিত ব্যাডমিন্টন, গল্ফ, সাঁতারের মতো খেলার অভ্যাস থাকলে যে উপকার পাওয়া যাবে, তা কখনই জিমে হবে না। তাছাড়া অনেকেই বয়স বা অন্যান্য সমস্যার কারণে এই ধরনের খেলাধূলায় যুক্ত থাকতে পারেন না। তাঁদের জন্য যোগাভ্যাস আর নিয়মিত হাঁটাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন চিকিৎসকরা (Obesity)। তাঁরা জানাচ্ছেন, যোগ যেভাবে শরীর ও মনের মধ্যে সমতা বজায় রাখে, জিম তা করতে পারে না। তাই যোগাভ্যাসকেই এগিয়ে রাখছে বিশেষজ্ঞ মহল।
ওজন (Obesity) নিয়ন্ত্রণে শারীরিক কসরতের সঙ্গে সঙ্গী হোক খাদ্যাভ্যাস!
তবে, শারীরিক কসরতের মাধ্যমে কত কিলোক্যালরি শরীর থেকে নির্গত হচ্ছে, সেই হিসাবের সঙ্গে, কত কিলোক্যালরি শরীর গ্রহণ করছে, সেটাও মিলিয়ে দেখা জরুরি বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, শরীরে কোলেস্টেরল, ডায়বেটিসের মতো রোগ আটকাতে ওজন (Obesity) নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। তাই অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার, চর্বিজাতীয় খাবার একেবারেই খাওয়া চলবে না। চটজলটি খাবারে পুষ্টিগুণ কম। তাই বাড়িতে তৈরি খাবারেই অভ্যস্ত হতে হবে। নিয়মিত শারীরিক কসরত এবং পুষ্টিকর খাবার দীর্ঘ সুস্থ জীবন দিতে পারে বলে জানাচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours