মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের ইতিহাস বলতে প্রথমেই মাথায় আসে ভাস্কো দা গামার (Vasco da Gama) নাম। ভাস্কো দা গামা-এই নামটির সঙ্গে পরিচিত নন এমন মানুষ ভারতীয় উপমহাদেশে খুঁজে পাওয়া কঠিন। ভাস্কো দা গামা ছিলেন একজন পর্তুগিজ নাবিক। যিনি পঞ্চদশ শতাব্দীতে সমুদ্রপথে ভারতে আসেন। পর্তুগালের রাজধানী লিসবন থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে আফ্রিকা মহাদেশে এসে পৌঁছান এবং পুরো আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে দক্ষিণ দিক থেকে তিনি ১৪৯৮ সালের আজকেরই দিনে অর্থাৎ ২০ মে তাঁর জাহাজ নিয়ে দক্ষিণ ভারতে (India) কালিকটের কাছে কাপ্পাডুতে পা রাখেন।
ইতিহাস
কলম্বাস যখন ভারতের খোঁজে বেরিয়ে আমেরিকায় পৌঁছে গেলেন, তখন পর্তুগালের রাজা জন ভারতে পৌঁছানোর জন্য নতুন সমুদ্রপথ খুঁজতে শুরু করেছিলেন। একই সঙ্গে তিনি তিনটি বড় জাহাজ তৈরিরও নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই সময়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজা জন। ভারতে পৌঁছানোর সে ইচ্ছা পূরণ হওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। তবে তার উত্তরাধিকারী এমানুয়েলের মনেও ভারতে পৌঁছানোর দৃঢ় সংকল্প ছিল। সেই যাত্রার কমান্ডার হিসাবে তিনি ভাস্কো দা গামাকে (Vasco da Gama) বেছে নিয়েছিলেন।
কীভাবে পৌঁছলেন ভারতে? (Vasco da Gama)
২৫ মার্চ ১৪৯৭ সাল, রবিবার সকালবেলায় লিসবনের রাস্তা লোকে লোকারণ্য হয়ে গিয়েছিল। সবাই বুঝতে পারছিলেন সেদিন একটা বড় ঘটনা হতে চলেছে। এরপর শুরু হল যাত্রা। ভাস্কো দা গামা রওনা হলেন তার ৩টি জাহাজ ও সহযাত্রীদের নিয়ে। কিন্তু মাঝপথে জাহাজ যখন কনারি দ্বীপ ছাড়ালো, তখনই তাঁরা মুখমুখি হল এক ভয়াবহ ঝড়ের। সেই ঝড় কাটিয়ে এরপর বেশ কয়েক মাস ধরে চলার পরে ভাস্কো দা গামা আর তার সহযাত্রীরা সেন্ট হেলেনায় পৌঁছলেন। প্রবল ঝড়ে জাহাজের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। দিন দশেক পরে ভাস্কো দা গামার দল জাহাজগুলি নিয়ে একটা বড় নদীর মোহনায় পৌঁছান। সেখানেই তিনি নোঙর করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর মার্চ মাসের শেষ নাগাদ ভাস্কো দা গামা আফ্রিকার মোজাম্বিক বন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে সমুদ্র তীর ধরে চলতে চলতে পৌঁছান মালিন্ডির উপকূলে। এরপর ৬ অগাস্ট ভাস্কো দা গামা মালিন্ডি থেকে রওনা হয়েছিলেন। এর প্রায় ১৯ দিন পরে অবশেষে ভারতের তটরেখা দেখতে পান তাঁরা।
আরও পড়ুন: কীভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করেছিলেন মোদি? মনে করালেন জয়শঙ্কর
এই দিনটির গুরুত্ব
উল্লেখ্য তিনিই (Vasco da Gama) প্ৰথম ইউরোপীয় যিনি সাগর পথ পাড়ি দিয়ে আজকের এই দিনে ভারতে (India) এসে উপস্থিত হন। তাঁর এ ভ্ৰমণ এশিয়া ও ইউরোপকে সংযোগ করার পাশাপাশি আটলান্টিক মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরের মাঝে সেতুবন্ধনের কাজ করেছিল। এ দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে পাশ্চাত্য দুনিয়ার সংযোগ স্থাপনের অন্যতম কারিগর হিসেবে তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া যেতে পারে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours